ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অক্টোবরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে মাতবে চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ১৬ আগস্ট ২০১৯

অক্টোবরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে মাতবে চট্টগ্রাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবকিছুই প্রায় চূড়ান্ত। পর্দা ওঠার অপেক্ষায় শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। আসলে ফুটবল একটি সুন্দর শৈল্পিক খেলা। ফুটবল হচ্ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। খেলোয়াড়দের নয়ন জুড়ানো ক্রীড়াশৈলী আর দর্শকদের মাতামাতি ফুটবলকে করে তুলে দৃষ্টিনন্দন ও উপভোগ্য। অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ঘিরে দর্শকদের মধ্যে আবর্তিত এ উন্মাদনা। সুনির্মল বিনোদনের পরিপূর্ণ স্বাদ নিয়ে থাকেন তারা ময়দানী লড়াইয়ে প্রিয় দলের উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে। শোনা যায় অংশগ্রহণকারী তিন ভারতীয় দল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও কলকাতা মোহামেডান। এই তিন ক্লাবের প্রায় ২০ কোটি সমর্থক রয়েছে সেদেশে। আর বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন শক্তি বসুন্ধরা কিংস (বিপিএল চ্যাম্পিয়ন) ও রানার্সআপ আবাহনীর সঙ্গে থাকছে স্থানীয় অপর দল চট্টগ্রাম আবাহনী। বাকি দুই বিদেশী ক্লাব মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ও থাইল্যান্ডের ট্রু ব্যাংকক ইউনাইটেড এফসি। সবমিলিয়ে এবারের আয়োজনটাই হতে যাচ্ছে বেশ জমজমাট। বাংলাদেশ ও ভারতের ফুটবলপ্রেমীদের দৃষ্টি থাকবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ওপর। ভারতের তিন ক্লাব তাদের সেরা দলটাই পাঠাবে বলে জনকণ্ঠকে জানান টুর্নামেন্টের স্পন্সর সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। ভারতে বসে তিন ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় মূল দল পাঠানোর অনুরোধ করেছি। আশাকরি খেলামেলা এই আলোচনায় যে আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছেন সেটা রক্ষা করবেন। আমি আশাবাদী মানুষÑ আশা করছি অবশ্যই কথা রাখবেন তারা। রুহুল আমিন যোগ করেন, লক্ষ্য ছিল দুই ক্লাব, ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। আর এ লক্ষ্যেই কলকাতা সফরে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে চিন্তা করলাম আরও একটা দল যদি পাওয়া যায় মন্দ হবে না। সেই চিন্তাধারা থেকে কলকাতা মোহামেডান কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করি। সফলও হয়ে যাই। আমাদের আমন্ত্রণে তারা খেলতে রাজি হয়ে যায়। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার টুর্নামেন্টে খেলার সম্মতি জানায় মোহনবাগান। আর পরেরদিন নিশ্চিত হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল ও মোহামেডান। আলোচনার মাধ্যমে তিন ক্লাবকেই রাজি করিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করে দেন ফুটবলপ্রেমী-সংগঠক তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। আসরের গায়ে এবার তকমা লাগিয়ে দেয়া যেতে পারত, বাংলাদেশ-ভারত ক্লাব ফুটবল লড়াই! যদিও মালদ্বীপ ও থাইল্যান্ডের একটি করে দল রয়েছে। তারপরও শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপ নিয়ে দুই বাংলাই যে মেতে থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। জানা গেছে পরিকল্পনা ঠিক থাকলে ১৮ অক্টোবর শুরু হয়ে যাবে আট দলের লড়াই। আর ফাইনালের মধ্যে দিয়ে টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ৩০ অক্টোবর। ১৩ দিনব্যাপী ৮ ক্লাব দলের আন্তর্জাতিক আসরে প্রচুর অর্থ খরচ হবে। প্রাইজমানি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫০ হাজার ডলার, আর রানার্সআপ দল ৩০ হাজার ডলার। এ ছাড়া টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দলের জন্য অংশগ্রহণ ফি রয়েছে ১০ হাজার ডলার করে। একই সঙ্গে দলগুলোর আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়া ও পাঁচ তারা হোটেলে থাকা খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। সবমিলিয়ে টুর্নামেন্টের ব্যয় ৮ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। অর্থাৎ আট কোটি টাকার টুর্নামেন্টে ৮ দলের অংশগ্রহণও নিশ্চিত। আবাহনী লিমিটেড, নবাগত বসুন্ধরা কিংস ও আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলা চূড়ান্ত ছিল আগেই। বিদেশী ৫ ক্লাবের মধ্যে ভারতের জনপ্রিয় তিন ক্লাব ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের ও কলকাতা মোহামেডান আনুষ্ঠানিক সম্মতি জানায় ঈদের আগে। ওপার বাংলার তিন দলের পাশাপাশি আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনী সঙ্গে টুর্নামেন্টে মধুর স্মৃতি রয়েছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ও ইস্টবেঙ্গলের। ২০১৭ সালে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল টিসি স্পোর্টস। আর ২০১৫ সালের প্রথম আসরটা আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনী স্মরণীয় করে রেখেছে শিরোপা জিতে। ওই আসরে ভারতের ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টগ্রাম আবাহনী। আয়োজক কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, মহাদেশীয় অঞ্চলের দল বেশি হলে টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বাড়বে । আর এ কারণেই ভারতের তিন দলকে অন্তর্ভুক্ত করেছি। এটা বিশাল একটা প্লাস পয়েন্ট যে, বিশ কোটি ফুটবলপ্রেমীর দৃষ্টি থাকবে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপের দিকে। এটা গোটা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য গৌরব যে, আমরা পাঁচটি বিদেশী সেরা দলকে টুর্নামেন্টে যোগ করতে পেরেছি। এর মধ্যে আমি মনে করি সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে ভারতের তিনটি জনপ্রিয় দলকে পাওয়া। বলতে পারেন খুবই সফল সফর। আমার দৃষ্টিতে এটা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পাওয়া। খুবই ভাল লাগছে এই কারণে যে, বিগত আসরগুলোর তুলনায় এবারের টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বেড়ে গেল অনেক বেশি। রুহুল আমিন মনে করেন বাংলাদেশের তিনটি বড় দল থাকছে টুর্নামেন্টে। এর সঙ্গে যোগ হওয়া ভারতের তিনটি দলের লড়াই দেখতে উদগ্রীব থাকবেন দুই বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা।
×