ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অমিত দাস

উদ্ভট অনুভূতি

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ১১ জুলাই ২০১৯

 উদ্ভট অনুভূতি

মাদকের ব্যবহার বাংলাদেশে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলা যায় তা মহামারী আকার ধারণ করেছে। যা গোটা বাংলাদেশকে এক মহাবিপর্যয়ে ফেলে দিয়েছে, জাতিকে উদ্বেগাকুল করেছে। মাদকই মানুষের মৃত্যুদূত। মানবদেহে মাদকের প্রভাব খুবই ক্ষতিকর এবং মারাত্মক যা ধীরে ধীরে মাদকসেবীকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায় আর এই জীবনঘাতী মৃত্যুদূতকে বেশ জেনেশুনেই এদেশের নবীন যুবারা আলিঙ্গন করছে যাকে বলে জেনেশুনে বিষ করেছি পান। মানব মন সর্বদাই কৌতূহলী সে শুধু জানতে চায় অনুভব করতে চায় পরখ করতে চায় এটা কেমন ওটা কেমন এমনটাও ঘটে থাকে। অনেক সময় সমবয়সী বন্ধুদের কাছে নিজের বসগিরি দেখাতে নেশা করে। সঙ দেখাতে ঘাগু অপরাধী অন্তরঙ্গ বন্ধুদের সংস্পর্শে এসে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বেকারত্বের কারণে বাবা-মায়ের দাম্পত্য কলহের বেদনা ভুলে থাকার নিমিত্তে কিংবা লৌকিক জগতের মাঝে অলৌকিক জগতের, বাস্তবের মাঝে অবাস্তবের অনুসন্ধান করে অবিরাম। আর তাই সে নিত্যনতুন নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রতি সুতীব্র আকর্ষণ বোধ করে। তার জন্য মানব মন ও মস্তিষ্কের অভিনব প্রচেষ্টার কোন অন্ত নেই। এভাবেই একদিন বিচক্ষণ বাঙালী যুবক-যুবতী মাদকের মায়াজালে বন্দী হয়ে যায় তখন আর তাকে কে বাঁচায় বিপদ যে একেবারে মাথার কাছেই। রঙিন স্বপ্নের সন্ধান করতে গিয়ে নিজের দেহমনে সর্বনাশা স্নায়ুবিক উত্তেজনা লাভের উদগ্র বাসনায় এদেশের অনেক যুবক ভাইবোনেরা গ্রহণ করে আইস ক্রিস্টাল খাট ইয়াবা নামক হরেক রকমের নেশাজাতীয় দ্রব্য। নেশাজাতীয় দ্রব্য সামগ্রী আজ এদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চা চিনি মিছরি লবণের মতো হয়ে গেছে। খুব সহজেই কোমলমতি কিশোর-কিশোরীরা টাকার বিনিময়ে হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছে যদিও মাদকের বিরুদ্ধে দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি ও নিষেধাজ্ঞা বলবত রয়েছে। এর মাঝেই জনস্বার্থবিরোধী সমাজবিরোধী এতসব অনাকাক্সিক্ষত কান্ড ঘটে যাচ্ছে যা সত্যিই দুঃখজনক ও অকল্পনীয়। মাদক নির্মূলে সরকারের সদিচ্ছার কোন ঘাটতি আছে বলে মনে হয় না। কারণ পত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যাচ্ছে- টিভির সংবাদে উঠে আসছে দেশের কোথাও না কোথাও আনাচে-কানাচে প্রায় প্রতিদিনই নেশাজাতীয় পণ্য দ্রব্যসামগ্রী উদ্ধার বা জব্দ করার খবর। তারপরেও মাদক ব্যবসায়ীরা সকল বাধা ডিঙ্গিয়ে সীমান্ত চৌকি ফাঁকি দিয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক চোখের আড়ালে মাদকদ্রব্যের আড়তদার মজুদদার হয়ে উঠেছে তার অনুসন্ধানের জন্য আজ চিরুনি অভিযান আবশ্যক। সর্বগ্রাসী মাদকের সর্বনাশা স্রোতে সবকিছু ভেসে যাওয়ার আগেই তরুণরা অধঃপতিত হওয়ার আগেই আমাদের মাদকের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে নিজে সজাগ হওয়ার পাশাপাশি অপরকে সাবধান করা সমীচীন, তা না হলে দেশের সমৃদ্ধি ও স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। নেশা মানুষের নীতি নৈতিকতাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে নিকৃষ্ট পশুতে পরিণত করে দেয় এবং তার অন্তরের সকল শুভ উপলব্ধিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ব্যক্তির স্বাভাবিক বিবেক বিচার-বুদ্ধির বিনাশ ঘটায় এত জানা কথা। তাই তো আমরা প্রায়শই লক্ষ্য করে থাকি নেশাখোর ব্যক্তিরা নেশা করে সমাজে নজিরবিহীন নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যা সামাজিক জীব হিসেবে একজন মানুষের মনুষ্যত্বের জন্য চরম নিন্দনীয় ও অবমাননাকর। দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা আজ দুশমন কেননা তাদের কারণেই এই মাদকের অর্থ যোগাড় করতে গিয়ে ছেলেমেয়েরা নানাবিধ চুরি ছিনতাই খুনের মতো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। চোর ছিনতাইকারী খুনী সন্ত্রাসী বলছে দেশ গঠনের মতো পবিত্র দায়িত্বভার ঘাড়ে না নিয়ে ভুল পথে পা বাড়াচ্ছে নিজের জীবন ও দেশকে বিপন্ন করছে। নেত্রকোনা থেকে
×