ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

২৮ বছর পর সচল হলো সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা

প্রকাশিত: ১০:১৭, ২৭ জুন ২০১৯

 ২৮ বছর পর সচল হলো সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৮ বছর পর সচল হলো ঢাকার সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা। সিদ্ধেশ্বরীতে গুলিতে নিহত সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত করে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে স্থগিত থাকা এ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। হাইকোর্ট মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে। ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্ত শেষ করতে হবে। তদন্ত শেষে ৯০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন ও ব্যারিস্টার মোতাহার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। এর আগে গত ২৩ জুন দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট। আদালত বলে, এজন্য রাষ্ট্রের পাশাপাশি বিচার বিভাগও দায় এড়াতে পারে না। বিলম্বিত বিচার মানে বিচারকে অস্বীকার করার নামান্তর বলেও মন্তব্য করে আদালত। যার আবেদনে এই মামলার বিচার স্থগিত সেই মারুফ রেজার আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, ওনার (মারুফ) এই মামলায় আসামি বা সাক্ষী কোন তালিকায় তার নাম নেই। তাহলে কিভাবে নিম্ন আদালতের অধিকতর তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করলেন। আপীল বিভাগের রায়ও আছে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করা যাবে না। মামলার যে কোন অবস্থায় বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দিতে পারে। মামলা সূত্রে জানা যায়, সগিরা মোর্শেদ সালাম ১৯৮৯ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যান। বিকেল ৫টায় সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছানোর পর মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে দৌড় দিলে গুলি করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ওইদিনই রমনা থানায় মামলা করেন তার স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী। পরে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ। পরে ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দীক। সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় সাতজন সাক্ষীর। সাক্ষ্যে মারুফ রেজা নামে এক ব্যক্তির নাম আসায় অধিকতর তদন্তের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই বছরের ২৩ মে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয় আদালত। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা (১০৪২/১৯৯১) করেন মারুফ রেজা। ১৯৯১ সালের ২ জুলাই ওই তদন্তের আদেশ ও বিচার কাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। ১৯৯২ সালের ২৭ আগস্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে মর্মে আরেকটি আদেশ দেয়া হয়। সম্প্রতি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এটি রাষ্ট্রপক্ষকে অবহিত করে। এরপর এ মামলা শুনানির উদ্যোগ নেয়া। শুনানি শেষে বুধবার মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত।
×