ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পলিথিনে ডুবছে নওয়াপাড়া

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ৩০ মে ২০১৯

 পলিথিনে ডুবছে নওয়াপাড়া

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ শিল্পশহর নওয়াপাড়া বাজারসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। মুদি দোকান থেকে শুরু করে বস্ত্র, ফলের দোকানসহ সব ধরনের দোকানে সয়লাব হয়ে পড়েছে পরিবেশ বিনষ্টকারী পলিথিনে। কেউ কেউ শুধু পলিথিন বিক্রি করতেই সজিয়েছে দোকান। সাধারণ মানুষের দাবি, ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার একদিকে পরিবেশ বিনষ্ট করছে, অন্যদিকে দেশের পাটজাত পণ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে, কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই। নওয়াপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাক-সবজি, মাছ-মাংস কিংবা ফলের দোকান সবখানেই এর ব্যবহার মাত্রা ছাড়িয়েছে। স্থানীয় মানুষ বাজার থেকে পণ্যসামগ্রী কিনে এসব পলিথিনে করে বাড়িতে নিয়ে প্রয়োজন শেষে তা ফেলে দিচ্ছে ময়লার স্তূপে কিংবা কোন ড্রেনে। ফলে আসছে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে ড্রেনের মুখে পলিথিনসহ ময়লা আটকে সৃষ্টি হতে পারে জলাবদ্ধতা। আবার ময়লার স্তূপে থাকা পলিথিন নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হলেও সেই পলিথিনের কারণে ময়লা পচন ধরতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্গন্ধ। যে কারণে এলাকার পরিবেশ হয়ে উঠছে দুর্বিসহ। সচেতন মানুষের দাবি, পলিথিন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ যেসব ব্যবসায়ীরা পলিথিন ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছে, তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ করে আর্থিক জরিমানা কিংবা শাস্তির মুখোমুখি করতে পারলে ক্ষতিকর এ পলিথিনের ব্যবহার অনেকাংশে কমে আসবে। নওয়াপাড়া বাজারের ভৈরব পাড়ে সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। সেই ওয়াকওয়ের পাশে পলিথিনে করে ময়লা ফেলে রাখায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার জোয়ারের পানিতে যখন ওই সব ময়লা আবর্জনা নদের পানিতে মিশে দূষিত করে তুলছে পরিবেশ। এমনিভাবে ক্ষতিকর এই পলিথিন সামগ্রিকভাবে পরিবেশের সব স্তরে প্রভাব ফেলছে। এদিকে এই পলিথিন ব্যবহারে জনস্বাস্থ্যের ভয়াবহ ক্ষতির পাশাপাশি সোনালী আঁশ পাটেরও কদর কমে যাচ্ছে। পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে পাট চাষীরা। সরকার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনায় নিয়ে আইন করে সব ধরনের পলিথিনের, শপিংব্যাগ, পলি-ই-থাইলিন বা প্রোপাইলিনের তৈরি সামগ্রী আমদানি উৎপাদন, বিক্রয়ের উদ্দেশে বাজারজাতকরণ বা প্রদর্শন, মজুদ বা বিতরণ, ব্যবসায়িক উদ্দেশে পরিবহন ও মজুদকরণ সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু তারপরও ভিন্ন কৌশলে পলিপ্রোপাইলিন বাজারে প্রবেশ করায় সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। তারা অবিলম্বে বাজার থেকে ক্ষতিকর ও ভিন্ন কৌশলে বাজারজাত করা ভিন্ন নামে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করে পাটজাত দ্রব্য, কাগজের ব্যাগ ব্যবহার নিশ্চিত করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
×