ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঐতিহ্যবাহী সূচিশিল্পের নিদর্শন, পছন্দের কেনাকাটা

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১৬ মে ২০১৯

ঐতিহ্যবাহী সূচিশিল্পের  নিদর্শন, পছন্দের কেনাকাটা

মোরসালিন মিজান ॥ ঈদের এখনও বাকি। অনেক দিন হাতে আছে। তবে মহোৎসব সামনে রেখে শুরু হয়ে গেছে কেনাকাটা। একটু একটু করে বাড়ছে বিক্রি। এখন ঢাকার প্রায় সব মার্কেটে শপিংমলে ঈদ পণ্যের পসরা। তবে খোলা মাঠ বা উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে আয়োজিত মেলার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। এসব আয়োজনে প্রাধান্য পায় দেশীয় ঐতিহ্যের পোশাক। সূচিশিল্পের নিদর্শন দিয়ে স্টল সাজানো হয়। দৃষ্টি কাড়ে বুটিক বাটিকের কাজ। পোশাকে শহুরে রুচি এবং আধুনিকতার ছাপ লক্ষ্য করা যায়। ফলে শৌখিন ক্রেতারা সুযোগ পেলেই মেলায় ঢুঁ মারেন। নারীরা নিজের মতো করে মেলা ঘুরে দেখেন। দেখতে দেখতেই পেয়ে যান ঈদের এক্সক্লুসিভ কালেকশন। প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীজুড়ে ঈদমেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। এরই মাঝে কিছু মেলা শুরু হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন বিভিন্ন মেলা ঘুরে দেখা যায়, বাহারি আয়োজন। দেশীয় পোশাকের পসরা। সুতি কাপড়ের ওপর চমৎকার হাতের কাজ করা হয়েছে। সুই সুতোয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লোকজ মোটিফ। মেয়েদের জামা ফতুয়া শাড়ি আছে। ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি। বেড কভার, কুশন কভার, শতরঞ্জী থেকে শুরু করে হ্যান্ডমেইড স্যান্ডেল পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। আছে গৃসজ্জা সামগ্রী। তেমন একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে বনানীতে। রাজউক মাঠে রমজানের প্রথম দিন মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে চলছে। নাইট অউল ইভেন্ট সল্যুউশন আয়োজিত মেলায় পাওয়া পাওয়া যাচ্ছে শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, জুতা ও কসমেটিকস। আয়োজকদের পক্ষে বিপণন কর্মকর্তা মোঃ খালেদ জানান, মেলায় অর্ধশতাধিক স্টল রয়েছে। সবাই ঈদ সামনে রেখে পসরা সাজিয়েছেন। চাঁদ রাত পর্যন্ত এখান থেকে কেনাকাটা করা যাবে বলে জানান তিনি। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মেলাটি আজ বৃহস্পতিবার থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে। একাডেমির সহায়তায় খোলা প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। এখানে পাওয়া যাবে ঐতিহ্যবাহী জামদানি। রূপগঞ্জের নামকরা শিল্পীরা নিজেদের বোনা শাড়ি নিয়ে আসবেন। অনেকে জানেন, জামদানি একটি বংশানুক্রমিক কারুশিল্প। নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে এই চর্চা অব্যাহত রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ এবং সোনারগাঁও উপজেলার কয়েকটি গ্রামেও যুগ যুগ ধরে জামদানি তৈরি হচ্ছে। অত্যন্ত যত্নে তৈরি করা জামদানি মেলার ২৫টি স্টলে প্রদর্শিত হবে। তেরছা, জলপাড়, পান্নাহাজার, করোলা, দুবলাজাল, সাবুরগা, বলিহার, শাপলাফুল, আঙ্গুরলতা, ময়ূরপ্যাচপাড়, বাঘনলি, কলমিলতা, চন্দ্রপাড়, ঝুমকা ইত্যাদি নাম ও নক্সার জামদানি ঈদকে আরও বেশি স্পেশাল করে তুলতে পারে। ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত মাইডাস সেন্টারে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ঈদমেলা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনাকারীরা মেলায় অংশ নেবেন। মৈত্রীমেলায় অংশগ্রহণকারী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে থাকছে তুগুন, রেগা, পটের বিবি, অংশু, অনিন্দিতা, বিবিস ক্লজেট, ফেব্রিকার্ট, রংধনু ক্রিয়েশন, এস্টেরিয়া, রিভাডিভা, মুদিতা, সায়ানের পাকশালা, কুকিং বাডি, লাল কাজল, কেকস, হ্যালো গর্জিয়াস, আকাশ প্রতিমা, জনতার পিরান, কালন, ওয়ারজা, নেইল ক্যানভাস বিডি, রেনে বাংলাদেশ, বৈশাখী এন্টারপ্রাইজ, রাঙা, এগারো ও ডালানা। মেলা প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এদিকে ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসবে মেলার সংখ্যা ততো বাড়বে। অনেকে তাই অপেক্ষা করে আছেন। ঈদমেলা নামে পরিচিতি পাওয়া মেলা মোটামুটি চাঁদ রাত পর্যন্ত চলবে বলেই ধারণা দিয়েছেন আয়োজকরা।
×