ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় নজরুল সম্মেলন শুরু

দ্রোহ ও প্রেমের কবিকে ঘিরে সুহৃদ সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২৭ এপ্রিল ২০১৯

দ্রোহ ও প্রেমের কবিকে  ঘিরে সুহৃদ  সমাবেশ

জনকণ্ঠ ফিচার ॥ নজরুলকে ঘিরে চমৎকার একটি সম্মেলন। সুহৃদ সমাবেশ। কবিতা হচ্ছে। গান হচ্ছে। জরুরী কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। চলছে বইমেলা। আরও কত কী! অনেকটা রাজধানী ঢাকার আয়োজনের মতো বড়, বর্ণাঢ্য। তবে ঢাকায় নয়, তিন দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়েছে পাবনায়। স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করছেন। আমন্ত্রিত হয়ে রাজধানী থেকে এসেছেন খ্যাতিমান শিল্পীরা। সব মিলিয়ে মুখরিত গোটা এলাকা। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় তিন দিনব্যাপী সম্মেলন ও আট দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করেছেন নজরুল ইনস্টিটিউট ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে। শুক্রবার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠে ফিতা কেটে, বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে আয়োজনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। এ উপলক্ষে সকালে শহরের নির্মাণাধীন স্বাধীনতা চত্বর’র এলাকা থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সরকারী এ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.বিশ্বজিৎ ঘোষ, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা, প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, সরকারী এ্যাডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. হুমায়ন কবির মজুমদার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর কামরুজ্জামান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালীর বিদ্রোহী চেতনার প্রতীক। প্রেমের বোধকে তিনি জাগিয়ে দিয়ে যান। তার সাহিত্য সঙ্গীতের বিপুল ভান্ডার। এই ভান্ডার থেকে নজরুলকে আবিষ্কার করতে হবে। নজরুল চর্চা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তারা বলেন, তার সৃষ্টি আমাদের মানবিক হওয়ার আহ্বান জানায়। সমাজে সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হলে নজরুলের সৃষ্টির আলোয় পথ চলা জরুরী বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। সম্মেলন ও বইমেলায় নজরুল সঙ্গীত প্রশিক্ষণ, নজরুলের জীবনভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, গ্রন্থমেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, কবি কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদির আয়োজন রয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতর, কবি নজরুল একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রসহ বাংলাদেশ সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ করেছে। সরকারী ছুটির দিন সকাল ১১টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং অন্যান্য দিন বিকেল ৩টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। সম্মেলনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় ও ঢাকার বিশিষ্ট শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করবেন। এছাড়াও পাবনার সকল উপজেলা থেকে খুঁজে নেয়া ৫০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেবেন শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা ও সালাউদ্দিন আহমেদ। আয়োজকরা জানান, ইতোমধ্যে পাবনার ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরুল বিষয়ক রচনা, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদের মধ্যে ১২০ জনকে সম্মেলনে পুরস্কার দেয়া হবে।
×