ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাটকের বিশেষ দিনে মিলনমেলা, আনন্দঘন উদ্যাপন

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৮ মার্চ ২০১৯

নাটকের বিশেষ দিনে মিলনমেলা, আনন্দঘন উদ্যাপন

মোরসালিন মিজান ॥ নাটকের মানুষের মঞ্চে কাজ। দর্শকের সামনে চরিত্র ফুটিয়ে তোলার দায়। প্রতিনিয়ত এ দায় মেটাতে হয়। তবে বুধবারের বিষয়ে একটু আলাদা ছিল। মঞ্চের মানুষেরা এদিন বাইরে এসেছিলেন। ঢাকার রাস্তা ধরে হেঁটেছেন। নেচেছেন। গেয়েছেন। অগ্রজ অনুজ সকলেই মেতেছিলেন উৎসবে। উপলক্ষ- বিশ্বনাট্য দিবস। এদিন হাসিরাশি আনন্দ যেমন হলো, তেমনি হলো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। বাংলা নাটকের অভিযাত্রা, পাওয়া না পাওয়ার গল্প শোনা গেল। সেইসঙ্গে ছিল প্রত্যয়। বাংলা নাটক নিয়ে বিশ্বদরবারে পৌঁছার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করলেন বিশিষ্ট নাট্যজনেরা। প্রতি বছর ২৭ মার্চ বিশ্বনাট্য দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হয়। ১৯৬২ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদ্যাপিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের নাট্যকর্মীরা উদ্যাপন করছেন গত প্রায় ১৮ বছর ধরে। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও পথনাটক পরিষদ। আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল শিল্পকলা একাডেমিও। বিকেলে টিএসসিতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে পথনাটক পরিষদ। খোলা চত্বরে পালাগানের আসর উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। এখানে পালাগান পরিবেশন করেন শিল্পী সাঈদ সিদ্দিক। আরণ্যকের সদস্যদের কণ্ঠে ছিল নাটকের গান। উল্লেখযোগ্য চারটি নাটক থেকে চারটি গান পরিবেশন করেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। এর আগে বিশ্বনাট্য দিবসের আলোচনায় অংশ নেন ঝুনা চৌধুরী, গোলাম কুদ্দুছ, আহাম্মদ গিয়াস প্রমুখ। আয়োজনের স্লোগান ছিল ‘বিশ্বজুড়ে নাট্যজন : এক সুর এক প্রাণ’। বক্তারা এই স্লোগানের প্রতিধ্বনি করে বলেন, নাটক নিয়ে সারা বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। পরে টিএসসি থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে তরুণ নাট্যকর্মীরা অংশ নেন। অগ্রভাগে ছিলেন সিনিয়ররাও। শোভাযাত্রাটি শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। অবশ্য শেষ না বলে মিলিত হয় বলা যায়। কারণ আগে থেকেই সেখানে সমবেত হয়েছিলেন আরেকদল নাট্যকর্মী। শিল্পকলা একাডেমি ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের উদ্যোগে এখানেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় দিবসটি ঘিরে বিশেষ আলোচনার আয়োজন করা হয়। এখানে মূল বক্তৃতা করেন শিমুল ইউসুফ। আলোচনা করেন আতাউর রহমান, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, লাকী ইনাম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। এখান থেকে নাটকের ভাষায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। অন্ধকারের শক্তির বিরুদ্ধে মঞ্চের আলো জ্বালিয়ে রাখার কথা বলা হয়। নাটকের মান আরও বাড়ানোর ওপরও জোর দেন বিশিষ্ট নাট্যজনেরা।
×