ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বারোয়ারি মৃত্যুর নরক

প্রকাশিত: ১১:০৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বারোয়ারি মৃত্যুর নরক

রাজন ভট্টাচার্য ॥ ঘিঞ্জি গলি। অপরিকল্পিত ভবন। তীব্র যানজট। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা। জলাশয়ের অভাব। একই ভবনে বসতি, খাবার হোটেল, কোচিং-ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও পারফিউমের গোডাউন থেকে কত কিছু যে আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। অনেক বাড়িতে কাগজ ও দাহ্য পদার্থের ভাড়াটিয়া বেশি। আছে ইচ্ছামতো শিল্প কারখানা। অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ। এটি গোটা পুরান ঢাকার চিত্র। যেখানে আবাসিক, বাণিজ্যিক শিল্প এলাকা বলতে কিছু নেই। সবই একই রকম! রাজধানী শহরের একটি বড় অংশ যদি এরকম হয় তাহলে সহজেই অনুমান করা যায় এলাকাটি কতটা বিপজ্জনক! সত্যিই তাই। পুরান ঢাকাকে কেউ বলেন মৃত্যুপুরী। কারো কারো বক্তব্য ফুটন্ত লাভা। ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকা-ে ৭০ জনের প্রাণ নিভার ঘটনা ফের স্মরণ করিয়ে দিল পুরান ঢাকা কতটা বিপজ্জনক! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তদারকির অভাবেই চোখের সামনে পুরান ঢাকা মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে। কেউ কখনও এ নিয়ে চিন্তা করেননি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সরাতে কত কিছুই না হলো। পরিবর্তন আসেনি। নিরাপদ ‘পুরান ঢাকা’ গড়ে তুলতেও অনেক মতামত, তদন্ত রিপোর্ট হয়েছে। বাস্তবায়ন হয়নি। তাই ভবিষ্যতে অগ্নিকা- বা ভবন ধসের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সবাই। যত চোখ যায়... ॥ চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকাটি মূলত প্রসাধনী ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল বেচাকেনার কেন্দ্র। আছে অনুমোদনহীন কেমিক্যালের গোডাউন। এই এলাকায় প্রচুর নকল প্রসাধনী বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। সারাদেশ থেকেই ব্যবসায়ীরা এখানে পাইকারি দরে প্রসাধনী কিনতে আসেন। চুড়িহাট্টা মসজিদের উল্টো দিকের বাড়িটির ভূগর্ভস্থ তলাসহ একতলা ও দোতলায় গড়ে তোলা হয়েছিল সুগন্ধির বিশাল মজুত। ওই বাড়ির সামনে এসে মিলেছে চারটি সরু গলি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগার সময় ওই গলির মোড়টি ছিল মানুষ, গাড়ি, মোটরসাইকেল আর রিক্সা দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। যানজটের কারণে থমকে ছিল সব। এটা শুধু চকবাজারের চিত্র নয়। পুরান ঢাকার অলি গলির প্রতিটি এলাকার দৃশ্য খুবই কাছাকাছি। সব মিলিয়ে গোটা এলাকা বারোয়ারি মৃত্যুর নরক। পুরান ঢাকা যেন মৃত্যুফাঁদে রূপ নিয়েছে। যত চোখ যাবে তত ভেসে উঠবে কিভাবে মৃত্যুপুরি করে গড়ে তোলা হয়েছে এক সময়ের গর্বের এই অঞ্চলটিকে। পুরান ঢাকার চকবাজারে চুড়িহাট্টার যে ভবনে আগুন লাগে তার পাশের একটি কারখানায় কাজ করেন আশরাফ ও মোনায়েম। বুধবার রাতে ভবনটির উল্টো দিকের একটি দোকানে তারা গিয়েছিলেন মোবাইলে টাকা ভরতে। হঠাৎ করেই বিস্ফোরণের শব্দ পান তারা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা না বুঝেই দৌড় দেন। একটি দূরে গিয়ে পেছনে ফিরে দেখেন হোটেলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন জ¦লছে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের ভবন ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে। যখন বিস্ফোরণের শব্দ পান তখন রাত প্রায় সাড়ে ১০টা বাজে বলে জানান মোনায়েম। তিনি বলেন, গলিতে কিছু প্রাইভেটকারও দাঁড়িয়ে ছিল। আগুন লাগা ভবনটির পাশে একটি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিরা গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। তারা জানান, দ্রুত পাশের প্লাস্টিক কারখানায় আগুন ধরে যায়। সেখানে পুরাতন ফ্রিজ, নেলপালিশ ও বডি স্প্রে তৈরির কারখানা ছিল। ভবনটি উপরে মানুষজন পরিবার নিয়ে থাকতেন। নিচের কারখানা থেকে আগুন উপরে ছড়িয়ে পড়ায় ধোঁয়া ও অন্ধকারে অনেকেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। তারা জানান, উর্দু রোডসহ আশপাশের সব এলাকার অবস্থা একই রকমের। ঘিঞ্জি পরিবেশ। দম ফেলার জায়গা নেই। যারা এসব এলাকায় কাজ করেন তারা শুধু প্রয়োজনের তাগিদেই থাকেন। আর কিছু নয়। মোট কথা হলো পুরান ঢাকা বসবাসের কোন পরিবেশ নেই। ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, পুরান ঢাকার আরমানিটোলা, চাঁদনিচক, নিমতলী, নাজিমউদ্দিন রোড, সুরিটোলা, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, লালবাগসহ আশপাশের এলাকা মিলিয়ে চার শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। কেমিক্যাল রাখার কারণে এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। আবার নির্মাণ ত্রুটি ও মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণেও পুরান ঢাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ভবনের কোন অন্ত নেই। সরেজমিন গিয়ে দেখলে চোখের সামনেই ধরা পরবে গোটা পরিবেশ। যে কেউ এক নজর পুরান ঢাকার অলি গলি দিয়ে হেঁটে গেলে বোঝতে পারবেন এটি আর স্বাস্থ্যসম্মত এলাকা নয়। প্রতিটি মিনিটে পাওয়া যাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ কিভাবে মৃত্যুর হাতছানি দিচ্ছে। নাজিম নামের অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিস্ফোরণের শব্দের পরপরই পুরো এলাকায় বিদ্যুত চলে যায়। অন্ধকারে সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে তারা সঠিক সময়েই আসে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যথেষ্ট রাস্তা না থাকায় ঘটনাস্থলের কাছে আসতে পারছিল না। সরু গলি দিয়ে গাড়ি প্রবেশে বেশ বেগ পেতে হয়। প্লাস্টিক কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ভবনের ভেতর থেকে মানুষ চিৎকার করতে থাকেন। চারপাশের মানুষের আহাজারিতে চকবাজারের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তার কথায় সায় দিলেন উপস্থিত সবাই। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এলাকায় ছোটখাটো অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ইচ্ছে করলেই আসতে পারে না। দিনের বেলা তো আরও বেশি জটিলতা। সব সড়কেই থাকে গাড়ি আর মানুষের জটলা। ব্যবসা বাণিজ্যে রাত-দিন মুখর থাকে পুরো এলাকা। এখানে নিরাপদ বাসস্তান নিয়ে কারো কোন ভাবনা নেই। কারণ মানুষের জীবনের কোন দাম নেই। তাই কেউ সাধারণ মানুষদের নিয়ে ভাবে না। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার পর চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশপাশের আরও পাঁচটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। এ ঘটনার পর আবারও পুরান ঢাকার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা চলছে। নিমতলীর ট্র্যাজেডির পর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে দোষারোপ করছেন স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বশীলরা। ২০১০ সালের ৩ জুনের বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় রাসায়নিকের আগুনে জ্বলে উঠেছিল নিমতলী। যাতে প্রাণ হারান ১২৪ জন। মুহূর্তেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সেদিনের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর আগুনের লেলিহান শিখা এখনও ভুলতে পারেনি এলাকার মানুষ। সেই ধ্বংসযজ্ঞ, লাশের মিছিল কোনভাবেই মন থেকে সরেনি। নয় বছর আগের আতঙ্ক এখনও তাড়া করে ফেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এটা সত্যি আতঙ্কের মধ্যেই বসবাস ছিল এলাকার মানুষের। এর বড় কারণ হলো নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া। সেদিন চোখের সামনে তাজা প্রাণগুলো পুড়ে কয়লা হয়েছিল। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে চারদিকে পড়ে ছিল লাশগুলো। ঘিঞ্জি অলিগলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাসায়নিক ব্যবসা বা শিল্পকারখানা কতটা বিপজ্জনক, প্রায় নয় বছর আগে তা দেখেছে মানুষ। কিন্তু শিক্ষা হয়নি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর তালিকা করে ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা পুরান ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত কাজটি আর হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিরাপদ বাসস্থানের জন্য কেমিক্যালের গোডাউন সরাতে আরেক দফা উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু উদ্যোগ কার্যকর শুরুর মধ্যেই আরেকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা এসে সামনে হাজির। যা মুহূর্তের মধ্যে কেড়ে নিল ৭০টি তাজা প্রাণ। কবে বাস্তবায়ন হবে মেয়রের ঘোষণা ॥ পুরান ঢাকায় কোন ধরনের দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যালের গোডাউন থাকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, এসব গোডাউন উচ্ছেদের জন্য কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার চকবাজারে আগুন লাগার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন উচ্ছেদের জন্য গত সোমবার থেকেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শুরু করা হয়েছে। আগুন লাগার ঘটনার সাত-আট দিন আগে এফবিসিসিআইর মাধ্যমে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করা হয়েছিল। তারপর থেকে আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করি। আমাদের আগে থেকেই উচ্ছেদ অভিযান চলছিল। কিন্তু অনাকাক্সিক্ষতভাবে বুধবার রাতে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটল। কেরানীগঞ্জে একটি জায়গায় শনাক্ত করা হয়েছে, সেখানে গোডাউনগুলো স্থানান্তর করা হবে। অগ্নি দুর্ঘটনায় শীর্ষে ঢাকা ॥ ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের সব বিভাগ থেকে ঢাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা ও ক্ষয়-ক্ষতি বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে সারাদেশে ৮ হাজার ৪৬১টি আবাসিক ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে, এর ২ হাজার ৮৮টি ঢাকায়, চট্টগ্রামে ২৮৫ ও রাজশাহীতে ১১৬টি। সারাদেশে ৫০৮টি নৌ দুর্ঘটনার মধ্যে ঢাকায় ১৯৫টি, চট্টগ্রামে ৫৪ ও খুলনায় ৪০টি। এসব ঘটনায় শুধুমাত্র ঢাকায় প্রাণ হারায় ১২১ জন। এক বছরে দেশে ১৬টি ভবন ধসের ঘটনার ১০টি ঢাকায়। এতে ৬ জন নিহত হয়। দেশের গার্মেন্টগুলোতে ১৭৩টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে ১১৫টি ঢাকায়। শিল্প কারখানায় ১ হাজার ১৩১টি আগুনের ঘটনার মধ্যে ৫২৬টি ঢাকায়। কেন এত দুর্ঘটনার শিকার ঢাকা? জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকার ডেনসিটি বেশি। অল্প জায়গায় বেশি মানুষ বসবাস করে। অনেক অপরিকল্পিত ও অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ রয়েছে। নতুন নতুন ইলেকট্রিক গ্যাজেট, ল্যাপটপ, মোবাইল চার্জারসহ অন্যান্য দাহ্য পদার্থের প্রাপ্যতা বেশি। তাই ঢাকায় অগ্নিকা-সহ অন্যান্য দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউন থাকা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ২০০৯ সাল থেকে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে বলে আসছি। সরিয়েও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আবার এগুলো এই এলাকায় চলে এসেছে। সরু গলি- ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে ॥ চকবাজারের অগ্নিকা- সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বলেছেন, ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। এই এলাকাটি খুব জনবহুল। তাই আগুন লাগার পর আমরা মুভ করতে পারছিলাম না। তবে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সবাই মিলে আগুন নেভানো হয়েছে। এই এলাকাগুলো সার্ভে করে ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থের কারখানা সরানোর কথা বলেছিলাম। এখন তারা যদি গোপনে ব্যবসা করে তাহলে তো আমাদের ফায়ার সার্ভিসের কিছু করার নেই। সিটি কর্পোরেশনকে সরানোর দায়িত্ব নিতে হবে। এখন সময় এসেছে পদক্ষেপ নেয়ার। না হলে আরও বড় ও ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, আগুন নেভানোর কাজ শুরুর পর পানি স্বল্পতা হয়েছিল। পরে সেটা সমাধান করা হয়। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, ওই সময় রাস্তায় যানজট ছিল। তাই আগুন লাগার পর কেউ বের হতে পারেনি। আগুনে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আমরা খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাজ করেছি। আগুনের সূত্রপাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জান পেরেছি, একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটেই দ্রুত চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাশে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন বড় আকার ধারণ করে। বিস্ফোরণের পর ফায়ার সার্ভিসের কেউ ধারে কাছেও আসতে পারছিল না। গলিগুলোও খুব সরু। এ কারণে কাছে এসে কাজ করা কঠিন। ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এটা খুব জনবহুল এলাকা, প্রচুর মানুষ থাকে। তবে আমরা চেষ্টা করি এ ধরনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রাখার। মানুষ সচেতন না হলে যে কোন বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। এ ধরনের এলাকার বিষয়ে এখনি সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
×