ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন

প্রকাশিত: ১০:২৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 দেশে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মে.টন। এর মধ্যে ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ ১৭ হাজার মে.টন। মৎস্য অধিদফতরের এক সভায় এই তথ্য জানানো নয়। সভায় বলা হয়, জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫.৩০ শতাংশ। বিশ্বের ৫৬টি দেশে রফতানি হচ্ছে মাছ। রবিবার মৎস্য অধিদফতরে প্রথমবার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে মৎস্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় মৎস্য ও পাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুর সামনে এস তথ্য উপস্থাপন করেন অধিদফতরের কর্মকতারা। সভায় বলা হয়, মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বিগত ১০ বছরে গড় বার্ষিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ। মাছের উৎপাদন নিয়ে বলা হয়, দেশের মোট উৎপাদনে মৎস্যচাষের অবদান ৫৬.২৪ শতাংশ। বিগত ১০ বছরে মৎস্য খাতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। একক প্রজাতি হিসেবে মাছের অবদান সর্বোচ্চ, যা মোট উৎপাদনের প্রায় ১২%। জাতীয় জিডিপিতে এর অবদান ১% এর বেশি। মৎস্য চাষযোগ্য অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় যেমন নদী-নালা, সুন্দরবন, বিল, কাপ্তাই লেকসহ প্লাবনভূমি ৩৯ লাখ ৮ হাজার হেক্টর এবং অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয় যেমন পুকুর, বাঁওড়, মৌসুমি চাষাধীন জলাশয় ও চিংড়িখামার ৭ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর মিলে দেশে সর্বমোট জলাশয় রয়েছে ৪৭ লাখ হেক্টর। দেশে ১২টি বিদেশী মাছসহ প্রায় ৩৫টি মৎস্য প্রজাতির মাছের চাষ হয়ে থাকে। অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য চাষের সম্প্রসারণের জন্য ৪৩২টি মৎস্য অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিগত নয় বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৩,০৯২ হেক্টর জলাশয় পুনঃখনন করে সংস্কার ও উন্নয়নের পাশাপাশি ২০১৭-১৮ সালে ৩০৯ হেক্টর জলাশয় সংস্কার ও উন্নয়ন করার ফলে বার্ষিক গড়ে প্রায় ৩০০০ মে.টন অতিরিক্ত মাছের উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত বিগত ৯ বছরে নির্দিষ্ট সময়ে মাছধরা থেকে বিরত ২ লাখ ৪৮ হাজার জেলে পরিবারে ভিজিএফ সহায়তা দেয়া হয়েছে ২,৬৮,৮১৪.৭২ মে. টন। মাসে ৪০ কেজি হারে এ খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয় বলেও জানানো হয়। ‘বাংলাদেশ ইলিশ’ শীর্ষক ভৌগোলিক সনদ (জিআই সনদ) প্রাপ্তিতে নিজস্ব পরিচয়ে বিশ্ববাজারে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ। ৭০০০ বর্গকিলোমিটার প্রধান প্রজনন এলাকায় ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২ লাখ ৭ হাজার চিংড়িঘের রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। সভায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গোপসাগরে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিমি এলাকায় মৎস্য আহরণে আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৬ সালে আরভি মীন সন্ধানী নামে একটি গবেষণা জরিপ জাহাজ কাজ শুরু করে এ পর্যন্ত ২১টি সার্ভে ক্রুজ-পরিচালনার মাধ্যমে মাছের ৪৩০টি প্রজাতি চিহ্নিত করেছে। ২০ মে-২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে ৬৫ দিন মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০০ সালে একটি মেরিন রিজার্ভ ঘোষণা করা হয়েছে এবং হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ এলাকায় এমপিএ ঘোষণার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। দেশে ১০৪টি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা বিদ্যমান। মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের মাননিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রামে তিনটি বিশ্বমানের এ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ সালে ৬৮,৯৩৫ মেট্রিক টন রফতানির মাধ্যমে আয় হয়েছে ৪,৩১০ কোটি টাকা। দেশের প্রধান রফতানি পণ্য হচ্ছে চিংড়ি (হিমায়িত, কুকড ও বরফায়িত), মাছ (হিমায়িত ও বরফায়িত), কুচিয়া/ইল (জীবিত), কাঁকড়া (জীবিত ও হিমায়িত), শুঁটকি ও লবণাক্ত শুঁটকি, হাঙ্গরের পাখনা ও মাছের আঁইশ। মাছ বিশ্বের ৫৬টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
×