ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু আজ বিকেল ৫টায়, চাপ নিচ্ছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী, তারুণ্যে ভরসা জামালের

ঢাকা আবাহনী-শেখ জামাল ‘হাইভোল্টেজ’ সেমির লড়াই

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

 ঢাকা আবাহনী-শেখ জামাল ‘হাইভোল্টেজ’ সেমির লড়াই

জাহিদুল আলম জয় ॥ ঢাকার ফুটবলে বর্তমানে ঢাকা আবাহনীকে টেক্কা দেয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বললেই চলে। ঘরোয়া প্রায় সবগুলো আসরের ট্রফি আকাশী-হলদু জার্সিধারীদের শোকেসে। মৌসুমের প্রথম আসর ফেডারেশন কাপ ফুটবলেরও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। শুধু তাই নয়, সর্বশেষ দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটি। এবার হ্যাটট্রিক শিরোপার হাতছানি। এ লক্ষ্যে প্রত্যাশিত ছন্দেই এগিয়ে চলেছে ঢাকা আবাহনী। আর মাত্র দু’টি জয় পেলেই শিরোপা জয়ের উল্লাসে ভাসবেন মামুনুল ইসলাম, সোহেল রানারা। আজ আসরের প্রথম সেমিফাইনালে ধানমন্ডি পাড়ার আরেক ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডি লিমিটেডের মুখোমুখি হচ্ছে ঢাকা আবাহনী। হাইভোল্টেজ ম্যাচটি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে বিকেল ৫টায়। গ্রুপপর্বে (‘সি’ গ্রুপ) এক ম্যাচ হারলেও শেষ চারের লড়াইয়ে নামার আগে চাপ নিচ্ছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে ‘ডি’ গ্রুপে অপরাজিত রানার্সআপ হয়ে সেমিতে আসা শেখ জামাল ভরসা রাখছে তরুণ ফুটবলারদের ওপর। মঙ্গলবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নতুন শক্তি বসুন্ধরা কিংসের মুখোমুখি হবে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। দুই সেমির বিজয়ী দল বৃহস্পতিবার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সেমির হাইভোল্টেজ ম্যাচটাকে মোটেই চাপ হিসেবে নিচ্ছে না ঢাকা আবাহনী। এমন জানিয়েছেন ক্লাবটির ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু। মৌসুম শুরুর এই টুর্নামেন্টকে বেশিরভাগ ক্লাবই লীগের প্রস্তুতি হিসেবে নিলেও এবারের আসর বহন করছে আলাদা গুরুত্ব। কেননা একমাত্র ফেডারেশন কাপের শিরোপাধারী দলটিই এবার খেলার সুযোগ পাচ্ছে আরেক সম্মানের আসর এএফসি কাপে। তাই ঢাকা আবাহনীর শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখার লড়াইয়ে যাওয়ার সিঁড়ি এই সেমিফাইনাল। তবে কাজটা যে সহজ হবে না সেটা বলাইবাহুল্য। কেননা ২০১৩ এবং ২০১৫ পরপর দুই আসরের শিরোপা জয় করে শেখ জামাল। হ্যাটট্রিক শিরোপা জয় করা না হলেও ফেডারেশন কাপের তিনটি ট্রফি ঘরে নেবার কৃতিত্ব আছে জামালের। তারা ২০১০ সালেও জিতেছিল এই টুর্নামেন্টের শিরোপা। এবার ডাগআউটে জামালের অন্যতম সফল কোচ জোসেফ আফুসি। জোসেফ আফুসির হাত ধরে এসেছে শেখ জামালের অনেকগুলো শিরোপা। গত মৌসুমে আফুসি হঠাৎ চলে না গেলে হয়তো গত আসরেও শিরোপাটা ঘরে তুলতে পারতো জামাল এমন মনে করেন ক্লাবটির কর্তাব্যক্তিরা। জামালের দীর্ঘদিনের সঙ্গী এবং সাফল্যেও কারিগর আফুসি আবারও ডাগআউটে ফেরায় বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে ক্লাবের এবং ফুটবলারদের। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ম্যানেজার আনোয়ারুল করিম হেলাল জানিয়েছেন তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে এবার হারানো শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে সফল হতে চায় ক্লাবটি। তিনি বলেন, অলঅভার টিম ভাল আছে। সবারই মন-মানসিকতা ভাল। ভালভাবেই ট্রেনিং করছে। ফেডারেশন কাপে আমাদের তিনটা শিরোপা আছে। ৫টা রানারআপ। এবার ফাইনাল খেলে আবারও শিরোপা জেতার লক্ষ্য আমাদের। সেমির প্রতিপক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে আমাদের কাছে সবাই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রুপ পর্যায়ে আমরা সব বড় বড় দলের সঙ্গেই খেলে এসেছি। সেমিফাইনালে রেফারি যদি ফেয়ার বাঁশি বাজায়। ম্যাচটা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে। যারা শতভাগ দিতে পারবে তারাই জিতবে। আফুসি ফেরায় আত্মবিশ্বাসী হেলাল বলেন, আফুসি নিঃসন্দেহে একজন ভাল কোচ। তার হাতে যে কোন টিম তুলে দিলে ভাল পর্যায়ে নিয়ে যাবার শক্তি তার আছে। অনেক কঠোর পরিশ্রম করে সে দল নিয়ে। তার ওপর আমাদের সবার অনেক আস্থা। গত তিন চার বছর আমরা নতুনদের নিয়েই টিম করছি। ফলাফলও ভাল হচ্ছে। আশা করছি পরবর্তী ম্যাচেও দল ভাল করবে। অন্যদিকে সেমিফাইনালে নিজেদের প্রস্তুতি সম্পর্কে ঢাকা আবাহনী সত্যজিৎ দাস রুপু বলেন, আমরা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি। প্রথমতো গ্রুপ এবং কোয়ার্টার ফাইনাল কোয়ালিফাই করার লক্ষ্য ছিল। সেটি হয়েছে। এখন আমাদের আর দু’টি কঠিন ধাপ বাকি আছে। সেমিফাইনালটা পার হতে পারলে আমরা ফাইনালে খেলব। দলে কোন ইনজুরি বা কার্ড সমস্যা নেই। মাঝে সাতদিনের বিরতিতে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার সময় পাওয়া গেছে। বিষয়টাকে কতটুকু এ্যাডভান্টেজ হিসেবে নিয়েছে আবাহনী? রুপু বলেন, সাতদিন বড় ব্যাপার না। ছেলেরা টুর্নামেন্টের মধ্যেই আছে। প্রস্তুতি চলছে। বিরতির পর মাঠে যেয়ে খেলব। সেটা যেন ঠিকমতো হয় সেদিকেই নজর দিচ্ছি। এএফসি কাপে মাত্র একটি দলই সুযোগ পাবে। এ নিয়ে চাপ কাজ করছে কিনা এ বিষয়ে রুপু বলেন, চাপের কিছু নেই। প্রতিপক্ষ সবসময়ই শক্তিধর। সেমিফাইনালে ভাল খেলেই সব দল আসে। মাঠের খেলা ফুটবল। মাঠে খেলেই নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। খেলে জিততে হয়। সেটিই আমাদের করে দেখাতে হবে।
×