ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

গাজীপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ সোমবার যুবলীগের এক নেতাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবদলকর্মীসহ প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার বাবাকেও সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। নিহতের নাম মোতালেব হোসেন (২৬)। তিনি ছোট দেওড়া এলাকার মোফাজ্জল হোসেন ওরফে মোফার ছেলে এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের একাংশের সভাপতি। নিহতের মা মমতাজ বেগম, স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, সোমবার সকালে ছোট দেওড়া এলাকার বাড়ি থেকে মোতালেবকে স্থানীয় সুমন (জহিরের ভগ্নিপতি) বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় সুমন মোতালেবকে জানায়, স্থানীয় নাজিম উদ্দিনের ছেলে যুবদল কর্মী জহির তাকে (মোতালেবকে) গালিগালাজ করেছে। জহিরকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে মোতালেব। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর জহির মোবাইল ফোনে মোতালেবকে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী মজিবুর মেম্বারের পরিত্যক্ত বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই জহির, বাবু, নাজিম, ফিরোজ ও ফাইজুলের নেতৃত্বে ২০-২৫ দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোতালেবকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোতালেবের গলা, মাথা, পিঠ, হাত ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে যায়। এতে সে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা মোতালেবের বাবা মোফাজ্জলকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার সময় তারা মোতালেবের মা মমতাজ বেগমকে হুমকি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসী বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোতালেবকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোফাজ্জলের মাথা, হাত ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিহতের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাহান মিয়া সাজু ও এলাকাবাসী জানান, আব্দুল মোতালেব ২৯ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের একাংশের সভাপতি। তার সঙ্গে প্রতিবেশী রিপন লস্করের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। বন্ধুত্বের কারণে তারা একত্রে চলাফেরা করত। প্রায় দু’ আড়াই মাস আগে মোতালেব একটি মোটরসাইকেল কেনে। ওই মোটরসাইকেল নিয়ে রিপন প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে যাতায়ত করত। গত কয়েক দিন আগে রিপন বেড়াতে যাওয়ার জন্য মোতালেবের কাছে মোটরসাইকেল চায়। কিন্তু মোটরসাইকেল না দেয়ায় তাদের দু’জনের মধ্যে বাগবিত-া হয়। এরপর হতে মোতালেবেরে সঙ্গে লস্কর পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে মোতালেব শনিবার সন্ধ্যায় রিপনের বড়ভাই স্বপন লস্করের ভোড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির লোকজনকে মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এতে স্বপনের বোন শাবানা ও ভাগ্নে সাজেনসহ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় মোতালেবসহ কয়েকজনকে আসামি করে গাজীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শনিবারের হামলার ঘটনার জেরে সোমবারের এ ঘটনা ঘটেছে। রিপন লস্করের বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন আগে ভোড়া এলাকার বাদলের বাসায় ডাকাতি করার অভিযোগ রয়েছে।
×