ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাই পাবলিক লাইব্রেরি ৩ দশক অভিভাবকহীন

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৩০ জুলাই ২০১৮

  মীরসরাই পাবলিক লাইব্রেরি ৩ দশক অভিভাবকহীন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ২৯ জুলাই ॥ দীর্ঘ তিন দশক ধরে অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে মীরসরাই পাবলিক লাইব্রেরি। নাগরিকদের জ্ঞান চর্চার সুযোগ অবারিত করতে সরকারীভাবে পাবলিক লাইব্রেরি চালু করলেও এর কোন সুফল পাচ্ছে না মীরসরাইবাসী। শুধু কয়েকটি পত্রিকা পাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এর কার্যক্রম। গত তিন দশক ধরে এই লাইব্রেরির দায়িত্বে আছেন আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি। তার পদবী কি তিনি নিজেই জানেন না। কি লাইব্রেরিয়ান, কি পাহারাদার সব কিছুই তিনি। গত তিন দশকে লাইব্রেরিয়ান দুইবার যোগদান করলেও মাত্র কয়েক মাসের মাথায় চলে যান তারা। এরপর থেকেই আবু তাহেরই পাবলিক লাইব্রেরির সর্বে সর্বা। সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি আলমিরা এবং দুটি সেলফে কিছু বই আছে, যেগুলো অনেক পুরনো। আজ থেকে দশ বছর আগে নতুন বই আনা হয়েছে লাইব্রেরিতে। নতুন প্রজন্মের পছন্দ সই কোন বই না থাকায় কেউ শেলফ থেকে বই পড়তে আগ্রহী হয় না। বাসায় নিয়ে গিয়ে বই পড়ার সুযোগ না থাকায় কেউ যাওয়ারও আগ্রহ দেখান না। পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায়, পাঠকশূন্য অবস্থায় রয়েছে লাইব্রেরি কক্ষ। টেবিলে কিছু দৈনিক পত্রিকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। লাইব্রেরির দয়িত্বে থাকা আবু তাহের জানান, আমি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই লাইব্রেরির তত্ত্বাবধানে আছি। আমার পদ কি আমি জানি না। এর মধ্যে লাইব্রেরিয়ান পদে দুইজন কর্মকর্তা এসেছিলেন। দুই তিন মাসের বেশি তারা থাকেননি। মীরসারাই পাবলিক লাইব্রেরিতে নিয়মিত পত্রিকা পড়তে যাওয়া একাধিক পাঠক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে নেই আগের মতো পাঠক সমাগম। সারাদিন কিছু খালি চেয়ার আর অগোছালো দু-একটা পত্রিকা পড়ে থাকে। এখানে নেই তেমন কোন নতুন বইয়ের সংগ্রহ। তরুণ প্রজন্ম নতুন নতুন বিজ্ঞানভিত্তিক বই পড়তে পছন্দ করে। কিন্তু পাঠাগারের শেলফে চোখে পড়ল না তেমন কোন উল্লেখযোগ্য খ্যাতিমান লেখকের বই। চোখে পড়ল না হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, আনিসুল হকের মতো লেখকদের বই। মীরসরাই কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, জ্ঞানচর্চার জন্য মীরসরাই পাবলিক লাইব্রেরিতে একাধিকবার গিয়েছিলাম। এখানে শিক্ষার্থীদের উপযোগী কোন বই নেই। যেসব বই পাওয়া যায় তারও কোনটার আবার গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠা বা ছবিগুলো থাকে কাটা ছেঁড়া। তাছাড়া বেশিরভাগ বইয়ের মধ্যে একদিকে যেমন ধূলির আস্তরণ তেমনি অন্যদিকে ফাঙ্গাস পড়ে নষ্ট হচ্ছে বইয়ের পাতা। এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল কবির জানান, পাবলিক লাইব্রেরি জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালনাধীন। উপজেলার উন্নয়ন কর্মসূচীতে এই লাইব্রেরিকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাবলিক লাইব্রেরির আধুনিকায়ন এবং বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি মীরসরাইবাসী অচিরেই পাবলিক লাইব্রেরির সুফল পাবে।
×