ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সবাইকে সাড়া দিতে হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১১ জুলাই ২০১৮

খালেদার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সবাইকে সাড়া দিতে হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে একদিনের জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে দেখুন, কী অবস্থা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের সাজা বাতিলের দাবিতে ৯০’র ডাকসু আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দলের নেতাকর্মীদের মনোবল শক্ত করার তাগিদ দিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা অবশ্যই আন্দোলনে সফল হব। খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে আমরা নির্বাচনে যাব না। তবে নির্বাচনের আগেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ইস্যুতে খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সকলকে সাড়া দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে সরকার কয়দিন জেলে রাখবে এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাকে বেশিদিন জেলে রাখতে পারবেন না। ইতিহাস তা বলে না। ইতিহাস বলে এদেশের মানুষ সব সময় নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের পক্ষে। ইতিহাস বলে এদেশে সব সময় যাকে কারারুদ্ধ করে নির্যাতন করা হয় তার পক্ষে দাঁড়ায় মানুষ। তাই খালেদা জিয়াকে এদেশের মানুষ কারাগার থেকে মুক্ত করে আনবে, কারাগার ভেঙ্গেই তাকে নিয়ে আসবে। তার আগে মানুষকে একত্রিত করতে হবে এবং সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করতে হবে। ফখরুল বলেন, সুদূরপ্রসারী নীলনক্সার মধ্যে খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসা হয়েছে যেটা হচ্ছে মাইনাস ওয়ান। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই নীলনক্সা চক্রান্ত শুরু হয়, তা আমরা নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়েছি। কী অপরাধ তার? অপরাধ হলো তিনি দেশের মানুষের কথা বলেন, অপরাধ হচ্ছে মানুষের যে কথা বলার অধিকার সে অধিকারের কথা বলেন। অপরাধ হলো তিনি দেশের মানুষের জন্য একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চান এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখতে চান। এটাই তার অপরাধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার কোন পরিবেশ নেই অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ দখল করে নিয়েছে। দেশে আজ স্বাস্থ্যসেবা বলতেও কিছু নেই। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। চিকিৎসকরা হাসপাতাল বন্ধ করে দিচ্ছেন। রোগীদের বের করে দিচ্ছেন। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আন্দোলনকারীরা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেখান থেকে আর ফিরতে পারবে না। কিন্তু সরকার যেখানে আছেন সেখানে জনগণের কোনও স্থান নেই। এ সরকার সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ সরকার আজকে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বন্দুক-পিস্তলের ওপর নির্ভর করে হুকুমের বলে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। আজকে তারা যে অবস্থায় দেশটাকে নিয়ে গেছে, এটাতে কোনভাবেই আধুনিক রাষ্ট্র নির্মাণের জায়গা নেই। কারণ, একে একে সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এই কমিশনকে কিছু জিজ্ঞেস করলে তারা বলে উল্টো কথা। একজন সচিবকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন চালান, তিনি হলেন হেলালউদ্দিন সাহেব। আমরা শুনেছি যে, তিনি বিকেল চারটা পর্যন্ত অফিস করেন। এরপর তিনি চলে যান একটি বিশেষ দলের বিশেষ কার্যালয়ে। সেখানে সেই দলের নির্বাচনের পরিকল্পনা তৈরি হয়, যার প্রধান হলেন এইচটি ইমাম সাহেব। তিনি যেকোন নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে যান। সেখানে গিয়ে কথা বলেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন যে, ২০১৪ সালের নির্বাচন তিনি নিজেই করিয়েছেন সরকারী কর্মকর্তাদের দিয়ে। তাহলে সেখানে কী গণতন্ত্র আর নির্বাচনের ফল আশা করা যায়। ৯০’র ডাকসু ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবি খোকন, সহজলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, রফিক শিকদার ও জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
×