ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার নামে গজিয়ে উঠছে গোপন ব্যবসা

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শিশু নিয়ে শত কোটি ডলারের বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৩ জুন ২০১৮

  যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শিশু নিয়ে শত কোটি ডলারের বাণিজ্য

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের থাকা-খাওয়া, আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়ার আড়ালে শত কোটি ডলারের রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক আগে থেকেই এ কাজে জড়িয়ে থাকলেও সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি গ্রহণের পর রীতিমত ফুলে ফেঁপে উঠেছে এ ব্যবসা। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। ‘সাউথওয়েস্ট কি’ নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ও ফেডারেল কাস্টডিতে থাকা অভিবাসী শিশুদের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে ৯৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের কাজ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এমন একটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে দক্ষিণ টেক্সাসে। সেখানে ওয়ালমার্টের পুরনো একটি সুপারস্টোরে গড়ে তোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রটি। অভিবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার নামে গজিয়ে ওঠা লোভনীয় আর গোপন ব্যবসায় শুধু সাউথওয়েস্ট কিই নয়, অন্তত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শুধু টেক্সাসেই খুলে বসেছে ৩০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র। অন্য ১৬টি রাজ্যে আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের এমন শতাধিক স্থাপনা রয়েছে। দক্ষিণ টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ড ভ্যালিতে যেভাবে অভিবাসী আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, তাতে জায়গাটিকে আশ্রয়কেন্দ্রের ঘাঁটিই বলা যায়। সেখানে পুরনো দোকান, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতেও গড়ে তোলা হয়েছে এসব আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বড় ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকলেও এগুলোর ভেতরের খবর জানে না কেউ। সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়া অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের পর ২৩০০ শিশুকে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে ফেলা হয়। শিশু ও কিশোরদের তাদের পরিবার থেকে সরিয়ে নেয়ার ছবি এবং তাদেরকে তালাবন্ধ কুঠুরিতে আটকে রাখার ছবি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশ্যে চলে আসে এসব শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার রমরমা ব্যবসার বিষয়টি। অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলোকে আটক রাখতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গত বুধবারের ঘোষণা মূলত বেসরকারী আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, নির্মাণ কোম্পানি ও প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের আরও লাখ লাখ ডলারের কাজ পাওয়ার দ্বার খুলে দিয়েছে। টেক্সাস ও পেনসিলভানিয়ায় অবশ্য বেসরকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে এমন ‘ফ্যামিলি ডিটেনশন সেন্টার’ এরই মধ্যে পরিচালনা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশনার আলোকে এসব ‘বেসরকারী কারাগারে’ সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে, প্রয়োজন আইনী ভিত্তিও।
×