ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পেট্রোবাংলা পরিচালক মোস্তফা কামালকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন

অবশেষে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সঙ্কট নিরসনের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৪ মে ২০১৮

অবশেষে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সঙ্কট নিরসনের উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অচলাবস্থা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে জ¦ালানি বিভাগ। তীব্র শ্রমিক অসন্তোষে দেশের একমাত্র কয়লাখনিটিতে গত ১৩ মে থেকে উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে দেশী শ্রমিকরা। খনি কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে এই কমিটি গঠন করা হলো। জানা গেছে, খনি কর্তৃপক্ষ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিলেই আলোচনা হতে পারে এমন শর্ত বেঁধে দেয়। অন্যদিকে শ্রমিকরা দাবি পূরণের আগে কাজে যোগ দেবে না বলে অবস্থান নিলে সঙ্কট শুরু হয়। দেশের একমাত্র খনিটির কয়লা দিয়ে দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র চালানো হয়। খনির দীর্ঘমেয়াদী অচলাবস্থা বিদ্যুত কেন্দ্রের জ¦ালানি সঙ্কট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। খনি কর্তৃপক্ষ সূত্র বলছে, স্বাভাবিকভাবে দৈনিক তিন হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হয়। এক হাজার ৪১ দেশী শ্রমিক কর্মবিরতিতে যাওয়ার পর উত্তোলন একেবারে বন্ধ ছিল। কিন্তু এরপর চীনা ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম তাদের নিজস্ব ৩০০ শ্রমিক দিয়ে উত্তোলন শুরু করে। মঙ্গলবার সীমিত পরিসরে খনি থেকে এক হাজার ২২৮ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হয়েছে। এতে দৈনিক উত্তোলন ক্ষমতা এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) মোস্তফা কামালকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করেছে জ¦ালানি বিভাগ। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে জ¦ালানি বিভাগের উপসচিব মুহা: মনিরুজ্জামানকে। এছাড়া কমিটির অপর সদস্য হচ্ছেন হাইড্রো কার্বন ইউনিটের পরিচালক এ এস এম মঞ্জুরুল কাদের। জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল বলেন, কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আগামী ২৬ মে বড়পুকুরিয়াতে যাব। সেখানে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবেদন দেব। কমিটি গঠনের আদেশে বলা হয়েছে কমিটি সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। তবে এখনও আলোচনার কোন ডাক পাননি বলে জানিয়েছেন খনি শ্রমিক-কর্মচারীর ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম। রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোন আলোচনার ডাক পাইনি। তেরো দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের পক্ষে। শ্রমিকদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে সরকার সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হবে বলে আশা করেন তিনি। শ্রমিকদের মূল দাবি হলো, অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী আউটসোর্সিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়া, বকেয়া ৯ মাসের বিভিন্ন ভাতা ও প্রফিট বোনাস দেয়াসহ বিভিন্ন ভাতা এবং চুক্তি অনুযায়ী সব শ্রমিককে নিয়োগ দেয়া। এছাড়াও প্রতি বছর শতকরা ৪০ শতাংশ দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ, সব শ্রমিকের ক্ষেত্রে গ্রাচুইটি, ভূগর্ভে কাজ করা শ্রমিকদের ৬ ঘণ্টা কাজ করানো, ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রামের বাড়িঘরের দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রত্যেক পরিবার থেকে খনিতে চাকরি। বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আশা করছি অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে। শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন বলে তিনি জানান।
×