নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২২ মে ॥ বেড়ার মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকারকে জাতীয় পতাকার পরিবর্তে বাঁশের চাটাইয়ে জড়িয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার ঘটনায় অবশেষে জেলা প্রশাসন কারণ দর্শাও নোটিস জারি করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন এ ঘটনার জন্য বেড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুব হাসানকে এ কারণ দর্শানোর নোটিস করেছেন। সোমবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান। তিনি এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান। মন্ত্রীর এ ঘোষণার পরদিনই জেলা প্রশাসক বেড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কারণ দর্শানোর নোটিসের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আসলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে। এরকম ঘটনা জেলাতে যেন না ঘটে সেজন্য তিনি সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন এখন থেকে কোন মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়ার প্রয়োজন দেয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাই গাড়িতে করে জাতীয় পতাকা নিয়ে জড়িয়ে দেবেন এবং গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানতে তিনি জেলার সকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার পরবর্তী বেড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (সহকারী কমিশনার ভূমি) মাহাবুব হাসানের ভূমিকা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। চাটাইয়ে জড়িয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার এ ঘটনাটি তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর দায় চাপিয়ে মিডিয়ার কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিভিন্ন মহল তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে। বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কমিটি না থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাই কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাছাড়াও মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের। তিনি তার দায়িত্ব পালন না করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর এর দায় চাপাতে পারেন না। এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা এ বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বেড়া পৌর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকার বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। শনিবার স্থানীয় শহীদ খালেক স্টেডিয়ামে তাকে জাতীয় পতাকার পরিবর্তে বাঁশের চাটাইয়ে জড়িয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ ঘটনা বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: