ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শংকর লাল দাশ

ফসল রক্ষায় তেড়ে আসবে রোবট নেকড়ে

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৯ মে ২০১৮

ফসল রক্ষায় তেড়ে আসবে রোবট নেকড়ে

প্রযুক্তির দেশ জাপান এমন এক রোবট আবিষ্কার করেছে, যা কীট, পতঙ্গ, পশু, পাখির কবল থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষা করবে। এরই মধ্যে জাপানের কৃষকরা এ রোবট ব্যবহার শুরু করেছে এবং সাফল্য পেয়েছে। অচীরেই এটি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পশু-পাখির কবল থেকে ফসল রক্ষায় কাকাতুয়ার ব্যবহার বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই রয়েছে। কাকাতুয়া মানে এক ধরনের নকল মানুষ বা প্রাণী বানিয়ে ক্ষেতের মাঝে বসিয়ে দেয়া। জাপানেও এর প্রচলন রয়েছে। কিন্তু কাকাতুয়া ব্যবহারের এ পদ্ধতি বহু পুরনো এবং শতভাগ কার্যকর নয়। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জাপানের প্রযুক্তির গবেষকরা বানিয়ে ফেললেন এমন এক রোবট, যা দেখতে হুবহু নেকড়ের মতো বিকটদর্শন। চোখ দুটো লাল রক্তবর্ণের। এলইডির আলোর কারসাজিতে এটি করা হয়েছে। বন্য শুয়োর থেকে শুরু করে হরিণ, গবাদিপশু, পাখি সবই এর চোখের লাল আলোর বিচ্ছুরণ দেখে দৌড়ে পালায়। এছাড়া রোবটটির ভিতরে বসানো হয়েছে মোশন সেন্সর। যা ফসল ক্ষতিকর বন্য জীবজন্তুর উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে এবং হুবহু নেকড়ের মতো গর্জন করে ওঠে। লাল আলো দেখে যারা দৌড়ে পালাবে না, তাদের জন্য রোবট নিজেই গর্জন করে ওঠে। এই রোবট নেকড়ের উচ্চতা ৫৫ সেন্টিমিটার। এটি চলে সৌরশক্তির সাহায্যে। রোদ কিংবা বর্ষাতে এর কোন ক্ষতি হবে না। জাপান এগ্রিকালচার কো-অপরেটিভের কর্মকর্তা চিকাও উমেয়াওয়ার প্রথমে এ রোবট নেকড়ে নিজে ব্যবহার করেন এবং পরে এটি দেশের কৃষিভূমিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেন। এরপরই জাপানে রোবট নেকড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ক্ষেতের ফসল রক্ষায় রোবট নেকড়ের ব্যবহার প্রসঙ্গে চিকাও উমেয়াওয়ার বলেন, আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছি ফসলের মাঠে রোবটটি বসানোর পরে ক্ষতিকর পোকা মাকড় ও বন্য জীবজন্তুর আক্রমণ অনেক কমে গেছে। এখন তাই আরও বেশি করে রোবট নেকড়ে তৈরি করে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছি। প্রযুক্তির দুনিয়ায় জাপান বরাবরই শীর্ষে। একের পর এক আবিষ্কার জাপানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কৃষিক্ষেতের ফসল রক্ষায় রোবট নেকড়ের আবির্ভাব, জাপানের প্রযুক্তির নিঃসন্দেহে আরেকটি সাফল্য।
×