ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুমায় রাসায়নিক হামলার পর ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বিকল্প নিয়ে ভাবছে

দামেস্ক ও মস্কোকে হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১১ এপ্রিল ২০১৮

দামেস্ক ও মস্কোকে হুঁশিয়ারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ায় সর্বশেষ গ্যাস হামলার জন্য দামেস্ক ও মস্কোকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। সোমবার ওয়াশিংটনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন এর জন্য সিরিয়া ও রাশিয়াকে মূল্য দিতে হতে পারে। দুমা শহরে রাসায়নিক হামলার জবাবে ট্রাম্প দ্রুত ও জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এদিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে ফ্রান্সও সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এএফপি ও গার্ডিয়ান। ট্রাম্প বলেন, সিরিয়ায় সামরিকভাবে বেছে নেয়ার মতো অনেক বিকল্প’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে। তিনি বলেন, দুমায় যেরকম নৃশংসতা দেখা গেল তা মেনে নেয়া যায় না। এ রকম চলতে দিতে পারি না আমরা, বিশেষভাবে যখন আমাদের সেই সক্ষমতা আছে। সিরিয়ায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর অভিযোগ দুমার বিদ্রোহী গ্রুপ জইশ আল ইসলামকে টার্গেট করে শনিবার রাতে রাসায়নিক গ্যাস হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ৭০ জন নিহত ও এক হাজারেরও বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাসায়নিক হামলার কথা অস্বীকার করেছে সিরিয়র বাশার আল আসাদের সরকার ও রাশিয়া। হামলায় কী ধরনের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে ও আসাদ সরকার এর সঙ্গে জড়িত কী না, প্রাথমিক পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। ট্রাম্প বলেছেন, এ হামলার জন্য কে দায়ী তা ওয়াশিংটনের কাছে ‘আরও পরিষ্কার হচ্ছে’। ধারণা করা হচ্ছে হামলায় ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। ওয়াশিংটন বহুজাতিক সামরিক পদক্ষেপের বিষয়টি যাচাই করে দেখছে। তাদের পদক্ষেপ সমন্বিত করার জন্য ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার টেলিফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, আসাদ সরকার এ হামলার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে ফ্রান্স সিরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। জাতিসংষ পর্যবেক্ষকদের ওপর হামলার পর গত বছর এপ্রিলে ট্রাম্পের নির্দেশে সিরিয়ায় মিসাইল হামলা চালানো হয়েছিল। সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুমার হামলার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের ওপরও দায় বর্তাতে পারে বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন। পুতিন এজন্য দায়ী হয়ে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র তাকেও ছেড়ে দেবে না বলে ট্রাম্প হঁশিয়ারি দিয়েছেন। রাশিয়া পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনী কোন হামলা চালালে তা গুরুতর বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশেন অব কেমিক্যাল উইপনের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দামেস্কের নিকটবর্তী পূর্ব গৌতা অঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর দুমায় আসলে কী ঘটেছে তা বের করা চেষ্টা করছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসেছে। রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার পর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা বলেছে এই প্রতিবেদন দুমা দখল নেয়া জাইশ আল ইসলাম বিদ্রোহীদের তৈরি। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে, জাইশ আল ইসলাম পতনের মুখে আছে। তাই তাদের সমর্থিত সংবাদ মাধ্যমগুলো সিরিয়ান আরব সেনাবাহিনীর অভিযান থামানোর উদ্দেশ্যে গ্যাস আক্রমণের মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। এদিকে সিরিয়া হোমস প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলার জন্য দামেস্ক ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দামেস্ক বলেছে এর জন্য ইসরাইলকে কঠিন প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে হতে পারে। এছাড়া সিরিয়া মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া ইসরাইলের পক্ষে ওই হামলা চালানো সম্ভব ছিল না।
×