ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির লজ্জা নেই: সেতুমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:৪৯, ২৮ মার্চ ২০১৮

বিএনপির লজ্জা নেই: সেতুমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সভা-সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘লজ্জা নেই বলেই’ তারা এ রকম কথা বলতে পারেন। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সেতুমন্ত্রী কাদেরের এমন মন্তব্য আসে। তিনি বলেন, জনসভার অনুমতি পেলে বিএনপি নেতারা বলেন- সরকার বাধ্য হয়েছে। আর অনুমতি না পেলে বলেন- গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে। সরকার কোন দিকে যাবে? “বাংলাদেশে বিএনপি কী মহাপ্লাবন ঘটিয়েছে রাজপথে, যে সরকার বাধ্য হবে? সেই সামর্থ্য সমক্ষমতা কি বিএনপি গত নয় বছরে নয় মিনিটের জন্যও দেখাতে পেরেছে? সামনে তো প্রশ্নই আসে না।” সরকার ভয় পায় বলেই বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা কাদের বলেন, “পুরনো কথা বলতে গেলে তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। লজ্জা তারা পাবেন না, কারণ লজ্জা পাওয়ার দল তারা না।” এরপর বিএনপির সরকারের সময়ে ২১ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বা অফিসের বারান্দায় আওয়ামী লীগকে সভা করতে না দেওয়া অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “নিজেরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন এসব সুযোগ সুবিধা তারা দেয়নি, বিরোধী দলের সমস্ত অধিকার হরণ করেছে।” দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তার দল বিএনপি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য তিন দফা আবেদন করেও মহানগর পুলিশের সাড়া পায়নি। শেষ পর্যন্ত তারা মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দ্বারস্থ হন; কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় সোহরাওয়ার্দীতে বৃহস্পতিবারের জনসভা স্থগিত করা হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার সকালেও বলেন, “সরকারের স্বৈরাচারী ডাইমেনশনটা উন্মোচিত হচ্ছে যখন একটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে জনসভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। অন্য ছোটোখাটো দলকেও এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে দিয়েছেন। তাহলে বিএনপিকে দিচ্ছেন না কেন?” এর জবাবে কাদের বলেন, বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না- এমন অভিযোগ ‘আবান্তর’। “স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তারা শোভাযাত্রা করল। যানজটের কথা চিন্তা করে রুলিং পার্টি যেখানে র্যালি করেনি, তারা (বিএনপি) তো জনদুর্ভোগের কথা ভাবেনি।… তারা বিনা বাধায় র্যালি করল, তাহলে গণতান্ত্রিক অধিকার কীভাবে হরণ করা হল?” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের মত সেতুমন্ত্রী কাদেরও বলেন, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সরকার দেখে না, দেখে ঢাকা মহানগর পুলিশ, কারণ তাতে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তার পরামর্শ- “মানুষ এখন ইলেকশন মুডে আছে, কেউ আর আন্দোলনের মুডে নেই। মানুষ উন্নয়নে অর্জনে খুশি। বিএনপির কোনো অর্জনের ইতিহাস নেই। ভোট চাইতে হবে কাজ দিয়ে।” ঘরে বসে সংবাদ সম্মেলন করা ছাড়া বিএনপির কোনো কাজ নেই- এমন মন্তব্য করে কাদের বলেন, “তাদের নেত্রী দণ্ডিত হবে এটা কি জনগণের দোষ। তারা ডাক দিলে নাকি লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামবে! জনস্রোত নয়, ছোটোখাটো ঢেউও দেখলাম না।… এখন বলে নির্বাচন থেকে সরকার তাদের সরিয়ে দিচ্ছে। তারা নির্বাচনে এলে সরকার কীভাব সরাবে? এটা তাদের অধিকার।” একটি জার্মান গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক দেশ’ এর কাতারে ফেলার বিষয়েও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে কাদের বলেন, “যে মুহূর্তে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেল, ঠিক সেই মুহূর্তে এই ধরনের রিপোর্টের আবশ্যকতা কি, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। যে প্রতিষ্ঠানের নামে এই রিপোর্ট এসেছে, সেই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, কার্যক্রম, তাদের বিষয়ে খতিয়ে দেখছি, কাগজপত্র কালেক্ট করেছি। এ ব্যাপারে আমরা আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাব।”
×