ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেসিডেন্ট পদে অপরা উইনফ্রে!

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

প্রেসিডেন্ট পদে অপরা উইনফ্রে!

অপরা উইনফ্রে সম্প্রতি লস এ্যাঞ্জেলেসে গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চ ত্যাগ করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা কথা বেশ জোরেশোরে চাউর হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াবেন এবং হয়তবা জয়লাভও করবেন। তার ঘনিষ্ঠ মহল থেকেও এমন ধারণা পাওয়া গেছে যে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছেন। ৬৩ বছর বয়সী ব্যবসায় উদ্যোক্তা ও বিলিয়নিয়ার অপরা উইনফ্রে গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বর্ণ ও লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবেলা নিয়ে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দেয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় অপরা ২০২০ এই ঘোষণা সংবলিত হ্যাশট্যাগ জ্বলে ওঠে। লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমসের এক রিপোর্টার অপরার ব্যবসায় পার্টনার স্টেডম্যান গ্রাহামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে গ্রাহাম বলেন, তিনি অবশ্যই দাঁড়াবেন। তবে সেটা জনগণের ওপর নির্ভর করছে। অপরা ২০২০ এই উদ্দীপক কথাটা এখনও মানুষের নজর ও ভাবনাকে নাড়া দিচ্ছে এবং সেটা বোধগম্য কারণেই দিচ্ছে। অপরার বিপুল জনপ্রিয়তা আছে বলেই শুধু নয়, এর মধ্য দিয়ে নারীদের বিশেষ করে অশ্বেতাঙ্গ নারীদের যাদের ক্ষমতাধর পদগুলোতে প্রতিনিধিত্ব অনেক কম তাদের জন্য এক ঐতিহাসিক ঘটনা সূচিত হয়েছে। অপরা রাজনৈতিক পদের জন্য আগেও দাঁড়িয়েছেন। ২০০৮ সালে তিনি বারাক ওবামার পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে যেভাবে অংশ নিয়েছিলেন তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অপরা ব্রান্ড ব্যালট বাক্সতেও কাজ করবে কিনা ওটা ছিল তারই এক পরীক্ষা। মিডিয়া জগতের এই খ্যাতিমান সেলিব্রেটি ভালমতোই জানেন কিভাবে ভাষণ দিলে কেমন সাড়া পাওয়া যাবে। জানতেন বলেই দেখা গিয়েছিল যে তার প্রচারমূলক ভাষণে মানুষ প্রবল আবেগ নিয়ে উচ্চকণ্ঠে সাড়া দিয়েছিল। ব্যাপারটা ছিল সত্যিকারের বিস্ময়। কারণ দশকের পর দশক ধরে অপরা গণমঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মাত করেছেন। তার বক্তৃতা যে নির্বাচনের মাঠও গরম করবে তা অনেকের ধারণা ছিল না। যাই হোক সেই অপরার এখন প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহের কথা শোনা যাচ্ছে। প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নিঃসন্দেহে আছে অপরার। তার কিউ স্কোর অর্থাৎ সেলিব্রেটি হিসেবে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি গড়মানের ওপরে। ২০১৭ সালে তার রেটিং এত প্রবল অনুকূলে ছিল যে তা থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল যে ২০২০ সালে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি ট্রাম্পকে হারিয়ে দেবেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট যদি ট্যাবলয়েডগুলোতে স্বপরিচয়ে আবির্ভূত হতে এবং পরবর্তীকালে রিয়েলিটি টিভি স্টারে পরিণত হতে পেরেছিলেন তাহলে অপরা উইনফ্রে তার চেয়ে আরও ভাল ও বিশ্বাসযোগ্য অপশন নন কি? অবশ্যই তাই। এতে কোন সন্দেহ নেই। অপরা ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়ালে বিপুল সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গের সমর্থন পাবেন। ট্রাম্পকে যারা অপছন্দ করেন সেই উদারপন্থীরাও বিপুল সংখ্যায় তাকে সমর্থন দেবেন এ কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তাই বলে একজন রাজনৈতিক এ্যামেচারের পরিবর্তে সৎ উদ্দেশ্যসম্পন্ন আরেকজন রাজনৈতিক এ্যামেচারকে ক্ষতায় বসানো হলে আমেরিকার নির্বাহী বিভাগ এ মুহূর্তে যে সব মৌলিক সমস্যায় ভুগছে সেগুলোর সমাধান হবে কিনা সন্দেহ। অপরা গত কয়েক বছরে দর্শক-শ্রোতাদের এই ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন যে তিনি একজন দক্ষ নির্বাহী, প্রবল সহমর্মিতাবোধের অধিকারী এবং সাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠক। বর্তমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তুলনা করলে এদিক দিয়ে এক বিশাল বৈসাদৃশ্য চোখে পড়বে। তবে বিশ্বে আমেরিকার মর্যাদা যেভাবে ডুবছে তা উদ্ধার করার জন্য এই গুণাবলী যথেষ্ট কি না সে প্রশ্নই থেকে যায়। কারণ এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য যথেষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির প্রয়োজন। অপরা একজন দক্ষ কূটনীতিক হবেন সন্দেহ নেই। তবে উত্তর কোরিয়া প্রশ্নে। গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন প্রশ্নে কিংবা আবাসন প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ভূমিকা কি হবে তা পরিষ্কার নয়। তেমনি পরিষ্কার নয় জরুরী জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলার প্রশ্নে তার সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে। অপরা উইনফ্রের কয়েক আস্থাভাজন ঘেরোয়াভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আহ্বান জালিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে অপরা এ ব্যাপারে সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু বলেননি। চলমান ডেস্ক সূত্র : টাইম
×