ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৪ বিশ্বকাপে ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার পর পিএসজি তারকার মনে হয়েছিল তার পা নেই

ক্যারিয়ারটাই শেষ ভেবেছিলেন নেইমার!

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

ক্যারিয়ারটাই শেষ ভেবেছিলেন নেইমার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়ের অন্যতম সেরা তারকা নেইমার। দেশ ও ক্লাবের জার্সিতে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জেতা হয়ে গেছে তার। শুধু বাকি স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি। ২০১৪ সালে নিজ দেশে সেমিফাইনালে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। তবে এবার ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে চান ২৫ বছর বয়সী এই সুপারস্টার। এর আগে এক সাক্ষাতকারে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) তারকা জানিয়েছেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপে ইনজুরিতে পড়ে ভেবেছিলেন ক্যারিয়ারটাই শেষ হয়ে গিয়েছে! গত বিশ্বকাপটা নেইমারের জন্য ছিল খুবই বেদনাদায়ক। কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে পিঠে মারাত্মক চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েন। তার অনুপস্থিতিতে সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে বিধ্বস্ত হয়েছিল ব্রাজিল। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের আঘাতে পিঠের হাড় যেভাবে ভেঙ্গে গিয়েছিল, নেইমার ভেবেছিলেন তার ক্যারিয়ারটাই শেষ হয়ে যাবে। চারদিকের সব কষ্টের সংবাদে তখন ভীষণ কেঁদেছিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। সেই দুঃসহ দিনগুলোর কথা ভাবলে এখনও খারাপ লাগে নেইমারের। পিএসজি তারকা এ প্রসঙ্গে বলেন, ওই ইনজুরিটা আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত ছিল। ওই সপ্তাহটায় আমি কেঁদেছিলাম। দেখেছি আমার মা আর বাবাও খুব কেঁদেছে। সবার খুব মন খারাপ ছিল, আমার বন্ধু এবং পরিবারের সবার। চোটটা এমন পর্যায়ে ছিল যে, একটা সময় নিজের ক্যারিয়ারটাকে শেষ বলেই ধরে নিয়েছিলেন নেইমার। এ বিষয়ে সাবেক বার্সিলোনা তারকা বলেন, চিকিৎসার সময়টায় আমি পা উঠাতে পারছিলাম না। নড়াতেও পারছিলাম না। আমি কান্না শুরু করেছিলাম কারণ এটা খুব বেদনাদায়ক ছিল। আমি কিছু অনুভব করতে পারছিলাম না, মনে হচ্ছিল আমার পা নেই। ডাক্তাররা আমাকে স্টেডিয়ামের হাসপাতালে নিয়ে যান এবং তারা বলছিলেন, সুখবর হলো আপনি হাঁটতে পারছেন। তবে আপনার ফুটবল ক্যারিয়ারটা বোধ হয় শেষ। এরপর ঘরে বসে টিভিতে জার্মানির বিপক্ষে দলের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখেছেন নেইমার। ওই ম্যাচটি নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের আক্ষেপ। বলেন, আমি যদি ম্যাচটা খেলতে পারতাম এবং ৭-১ ব্যবধানে হারের পর চোটে পড়তাম! এই দগদগে ক্ষত এবার ভোলাতে চান নেইমার। রাশিয়া বিশ্বকাপে জিততে চান স্বপ্নের সোনার ট্রফি। এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরমেন্স প্রদর্শন করেছে ব্রাজিল। রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা সবার আগে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে। কোচ টিটে দলকে গড়ে তুলেছেন দুর্দান্তভাবে। একই পজিশনে একাধিক চৌকস খেলোয়াড় থাকায় আসছে বিশ্বকাপে হট ফেবারিট পেলের দেশ। তাই তো স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন নেইমারও। সাফল্যের পরিসংখ্যানে এমন অবস্থা ব্রাজিল মানেই সেরা হওয়া। ‘দ্বিতীয়’ হওয়াটাকেও দেশটি ব্যর্থতা হিসেবে মনে করে। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর দীর্ঘ দুই পর ১৯৯৪ সালে আবারও বিশ্বকাপ জেতে জাগো বনিতোরা। আধুনিক যুগে এসে এসময় থেকেই মূলত দেশটি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা তিন বিশ্বকাপে ১২ বছর বিস্ময়কর সাফল্য দেখায় ব্রাজিলিয়ানরা। এ সময়ের তিনটি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই ফাইনালে খেলে ব্রাজিল এবং দু’টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এমন আকাশচুম্বী সাফল্যের পর ব্রাজিল দল যেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। এ কারণেই ২০০৬ বিশ্বকাপে ‘হেক্সা’ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে জার্মানি পাড়ি জমায় লুই ফিলিপ সোলারির দল। এ সময় রোনাল্ডিনহোরা এতটাই ফর্মের তুঙ্গে অবস্থান করছিলেন যে বিশ্বকাপ জয় করা নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। কিন্তু চূড়ান্ত লড়াইয়ে খেই হারিয়ে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলকে। এরপর দলের দায়িত্ব দেয়া হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কার্লোস দুঙ্গাকে।
×