ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রায় ৯ কিমি দীর্ঘ বহুল প্রতীক্ষিত মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধন;###;উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন ॥ উড়াল সড়ক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

যান চলাচল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৭ অক্টোবর ২০১৭

যান চলাচল শুরু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চলমান অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে সরকারের ধারাবাহিকতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলেই দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ২০০৮ সালের পর ২০১৪ সালে জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় বসানোর কারণেই উন্নয়নের কাজ সফলভাবে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসতে পারলে উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থেকে লুটপাট আর দুর্নীতি করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, বাংলাভাই তাদের সৃষ্টি আর ক্ষমতার বাইরে থেকেও জ্বালাও পোড়াও করে দেশের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করেছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তাঁর সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরপরই দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিপুল কর্মযজ্ঞ শেষে বহুল প্রতীক্ষিত মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উš§ুক্ত হয়েছে। আট দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ ফ্লাইওভারের সাত রাস্তা, বাংলামোটর ও হলিফ্যামিলি অংশের ওঠানামার পথ আগেই খুলে দেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মৌচাক, রাজারবাগ, শান্তিনগর ও মালিবাগ অংশের বাকি সব পথও খুলে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর যেসব উন্নয়ন কর্মকা- গ্রহণ করেছিলাম সেগুলো একে একে আমরা শেষ করে আনছি আর ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলাম বলেই আজকের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। আগামী নির্বাচনেও সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে এই উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল বলেই আজকে এটি (ফ্লাইওভার) নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রাজধানীবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সকলের প্রতি অনুরোধ, ফ্লাইওভার ব্যবহারে যতœবান হবেন। ট্রাফিক রুল মেনে চলবেন। জাতীয় সম্পদ মনে রেখে সেটা ব্যবহার করবেন। ঢাকায় ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এই ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে, কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে। তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই রাজধানীতে ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে যেগুলো ব্যবহারে মানুষের চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্য আসার পাশাপাশি কর্মঘণ্টাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সরকারের গৃহীত প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর পরই আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারায় বিএনপি-জামায়াত সে সব প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছিল। তিনি বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে যখন দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই আমাদের দেশের উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা এবং দেশে কায়েম হয় লুটপাটের রাজত্ব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেই জাতির পিতার আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং দেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। তিনি বলেন, সে সময় ৫টি বছর মাত্র আমরা হাতে সময় পেয়েছিলাম। উন্নয়নের যে কাজগুলো তখন আমরা দেশব্যাপী শুরু করেছিলাম, দুর্ভাগ্য সেটাও থেমে যায় ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর। হত্যা, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, বাংলাভাই সৃষ্টি, লুটপাট ও দুর্নীতিÑ এছাড়া আর কোন উন্নয়ন তারা (বিএনপি-জামায়াত) করতে পারেনি। সে সময় বাংলাদেশ টানা ৫ বার দুর্নীতিতে শীর্ষস্থান দখল করে। এই অবস্থায় দেশকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার একটি অরাজকতার দিকে নিয়ে যায়। ফলে দুই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকে এবং এই ৭ বছর দেশের উন্নয়ন সম্পূর্ণরূপে থেমে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করলে পুরনো উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো পুনরায় চালুর সঙ্গে সঙ্গে অনেক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করে। তাঁর সরকারের আমলেই দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দেখছি যারা আগে একটা গাড়ি ব্যবহার করত তারাই এখন একাধিক গাড়ি ব্যবহার করছে। এর ফলে কিছুটা যানজট বৃদ্ধি পেলেও গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের সেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সূচক বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। যত উন্নয়ন হবে ততই মানুষের সবকিছু ব্যবহারের সক্ষমতার বিকাশ ঘটবে। ঢাকা শহরের যানজট প্রশমনে তাঁর সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে চলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বিজয় সরণি ফ্লাইওভার, জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছি। হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণের কাজও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারটি একটি দীর্ঘ ফ্লাইওভার। আমি মনে করি এটি রাজধানীর যানজট নিরসনে বিরাট ভূমিকা রাখবে এবং মানুষের জীবন যাত্রা আরও সহজ হবে এবং মানুষের সময় বেঁচে গিয়ে কর্মচাঞ্চল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। কারণ এতে তিনটি লেভেল ক্রসিং পার করা হয়েছে তাই গাড়িগুলো খুব দ্রুত চলতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভার নির্মাণে সম্পৃক্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি নিজে বিভিন্ন সময় ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এর নক্সাতেও পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেন। দেশকে এগিয়ে নেয়ায় তাঁর দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ একটি সম্মানজনক অবস্থায় আছে। গোটা বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি রোল মডেল। ফ্লাইওভার উদ্বোধনকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সৌদি আরব দূতাবাসের ইসলামী বিভাগের প্রধান সাদ আল খাতানি আর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মোঃ ওসমান গণিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন মৌচাক এলাকায় বানানো অনুষ্ঠান মঞ্চে। মৌচাকে উপস্থিত সবাই ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন; প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। প্রকল্পটি উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ‘দেশে কেউ আবাসনহীন থাকবে না’ ॥ এদিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর মিরপুরে বস্তিবাসীদের জন্য প্রথমবারের মতো ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কেউ আবাসনহীন থাকবে না। আমাদের নীতি অত্যন্ত স্পষ্ট যে, প্রত্যেক মানুষের জন্য আমরা আবাসন ব্যবস্থা। আর এটা জাতির পিতার নির্দেশ। সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল দীর্ঘ ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি। উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত জরুরী। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর ধানম-ি ও মোহাম্মদপুরে পরিত্যক্ত বাড়িগুলোতে প্রথমবারের মতো আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই না বস্তি থাকুক। এটা কোন দেশের জন্য সম্মানজনক ব্যাপার নয়। তাছাড়া বস্তিতে যারা থাকে তারাও তো মানুষ। তাদেরও ভালভাবে বাঁচার অধিকার আছে। তারা কেন মানবেতর জীবনযাপন করবে? এজন্যই আমরা বস্তিবাসীর জন্য ফ্লাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার কঠোরভাবে জঙ্গীবাদী ও সন্ত্রাসীদের দমন করেছে। আমরা জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা চাই এবং ২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় উন্নয়নের জন্য আমরা যথেষ্ট সময় পেয়েছি। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে শুরু করা সকল উন্নয়ন কাজ বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দেয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে একটি কাজও এগিয়ে নেয়নি, তারা লুণ্ঠনের মাধ্যমে সবকিছু ধ্বংস করেছে। ২০১৪ সালে সব বাধা অতিক্রম করে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ায় দেশের উন্নয়ন জোরদার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে চাই এবং বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি গত নির্বাচনে তাঁর দলকে সমর্থন দেয়ায় দেশের সকল মানুষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে এসে আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খলা দেখেছি, বিএনপির পাঁচ বছরের লুটপাট, দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে পাঁচ-পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। তাদের ক্ষমতার সময়ে অর্থনীতি শূন্যের কোঠা চলে গিয়েছিল। এরপর এলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, তারা ছিল দুই বছর। তারাও কম যাননি, তারা ব্যবসায়ী, শিক্ষক, রাজনীবিদ এবং ছাত্রদের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছেন এবং সারাদেশটাকে একটা আতঙ্কিত দেশ হিসেবে রেখে যান। আর অর্থনীতি ছিল বিধ্বস্ত। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে এগুলো সব ঠিক করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়াই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। রাজনীতিবিদ হিসেবে এটাই আমার কর্তব্য বলে আমি মনে করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়ে গেছেন মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করার কথা। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য। মানুষের কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য। এটাই জাতির পিতার শিক্ষা। মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই। এর মধ্যেই আছে জীবনের সার্থকতা। সবার জন্য পরিকল্পিত বাসস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্লাট নির্মাণের পাশাপাশি ধানম-ি ও মোহাম্মদপুরে সরকারী কর্মচারী এবং সাধারণ লোকদের জন্য ২০২টি আবাসিক ফ্লাট নির্মাণ করা হচ্ছে। জাতীয় গৃহনির্মাণ কর্তৃপক্ষ (এনএইচএ) নিজস্ব অর্থায়নে মিরপুর-১১ তে ১০ একর জমির ওপর বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্লাট নির্মাণ করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত পদক্ষেপের ধারণা এবং জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ২০১৬ অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২ একর জমির ওপর পাঁচটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করে ৫৩৩ ফ্লাট করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮ একর জমির ওপর আশিটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করে ৯ হাজার ৪৬৭টি ফ্লাট তৈরি করা হবে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১১১ কোটি টাকা। অপরদিকে এনএইচএ ধানম-ি ও মোহাম্মদপুরে ৩৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক শূন্য ৭ একর জমিতে ২৫৩টি ফ্লাট নির্মাণ করবে। এর মধ্যে ২০২ ফ্লাট সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ লোকদের কাছে বিক্রি করা হবে। বাকি ৫১টি ফ্লাট এনএইচএর কাছে থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব শহিদুল্লাহ খন্দকার পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে দুটি প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। অন্যান্যের মধ্যে এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
×