ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল

বরিশাল জেলা পরিষদের জমি দখল করে দোকান নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ২১ অক্টোবর ২০১৭

বরিশাল জেলা পরিষদের জমি দখল করে দোকান নির্মাণ

নগরীর নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল জেলা পরিষদের জমি দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ কাজ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলামের হস্তক্ষেপে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত ১০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) গভীর রাতে জেলা পরিষদের জমিতে দোকান নির্মাণের খবর পেয়ে ১১ অক্টোবর সকালে চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী ইসমাইল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলাম জানান, ওই সম্পত্তি নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আঁধারে ভূমিদস্যুরা দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করে। তিনি জানান, ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে মামলাবাজরা দীর্ঘদিন থেকে জেলা পরিষদের বিভিন্ন জমি দখলের পাঁয়তারা করে আসছে। ইতোমধ্যে তিনি ভূমি অফিসের সহযোগিতায় জমি মেপে বেশ কিছু জমির সীমানা পিলার নির্ধারণ করেছেন। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, তাদের মালিকানাধীন ৩১নং কাশিপুর-বহুতপুর মৌজায় ২নং খতিয়ানের ১১৬১নং দাগের ২৬ শতক সম্পত্তি দীর্ঘদিন পূর্বে জেলা পরিষদ থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দেয়া হয়। ইজারাদারগণ প্রতি বছর ইজারা নবায়ন করে ওই জমিতে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছেন। এরই মধ্যে জেলা পরিষদ থেকে লিজ নেয়া আব্দুস সালাম শামীম ও কামরুন্নাহার শিল্পী গং এর নামে ২০১১ সালে বাঘিয়া মৌজার ৪১০ ও ৪১১ নং দাগের সম্পত্তি থেকে ১০ শতক জমি ক্রয় করে পাশ্ববর্তী জেলা পরিষদের সম্পত্তি নিজেদের দাবি করে ২৮টি দোকানঘর পরিষদকে না জানিয়ে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় জেলা পরিষদের সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ১২৫/২০১৫ মামলা দায়ের করার পর পুরো সম্পত্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক থেকে প্রেরিত মোবাইল ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশনের সার্ভেয়ার মোঃ আব্দুল লতিফ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সার্ভেয়ার শহিদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম ও জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মোঃ আল-আমিন স্থানীয়দের সহযোগিতায় জেলা পরিষদের জমি চিহ্নিত করে পাঁচটি সীমানা পিলার স্থাপন করেন। সূত্রে আরও জানা গেছে, পিলার স্থাপনে বাধাদানকারী আব্দুস ছালাম শামীম ও ইউসুফ গংরা ওইদিন রাতেই ওয়েস্টার্ন ফার্মেসি সংলগ্ন দুইটি সীমানা পিলার উঠিয়ে ফেলার পর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত রমজান মাস থেকে পুনরায় ওই জমিতে উল্লেখিতরা দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর পুনরায় গত ১০ অক্টোবর গভীর রাতে জেলা পরিষদের জমিতে দোকান নির্মাণ কাজের খবর পেয়ে ১১ অক্টোবর সকালে চেয়ারম্যান সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। জমির মালিক দাবিদার আব্দুস ছালাম শামীম বলেন, কাশিপুরের বাঘিয়া মৌজার ১০ শতক জমির মালিক তিনি ও তার বোন কামরুন্নাহার শিল্পী। কিন্তু এ জমি দীর্ঘদিন থেকে জেলা পরিষদ দখল করে তাতে প্রায় ১৫টি দোকান তুলে ভাড়া দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে জেলা পরিষদের সঙ্গে তাদের মামলা চলার পর ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে আমাদের ১০ শতক জমির মালিক ঘোষণা করে জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য আদালত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপরও তা না মানায় ২০১৫ সালের ১৪ মে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের নাজির উপস্থিত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের জমিতে আমরা কাজ করতে গেলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাতে বাধা প্রদান করেছেন।
×