দুর্বৃত্তদের কোন ধর্ম ও দল থাকতে পারে না ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা দলীয় পরিচয় দিয়ে কোন নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের ওপর হামলা করে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়- তারা যে দলেরই হোক, তারাই দুর্বৃত্ত। দুর্বৃত্তদের কোন ধর্ম ও দল থাকতে পারে না। এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলীয় পরিচয় দিয়ে কোন নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের ওপর হামলা করে। এই দুর্বৃত্তদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের অবস্থান হচ্ছে জিরো টলারেন্সে। বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বৌদ্ধদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের কখনও সংখ্যালঘু ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। এটা ভাবলে মনের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হবে। তাই বুকে বল নিয়ে চলতে হবে। বৌদ্ধদের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, যেকোন বিপদ-আপদে আগে আওয়ামী লীগকে জানাবেন। আওয়ামী লীগ সবসময় বৌদ্ধদের পাশে আছে। রোহিঙ্গা ইস্যু কাজে লাগিয়ে কেউ যেন সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখবেন। আবেগ কিংবা ক্ষোভের বশে কেউ খারাপ ব্যবহার করলে মুখ বুজে থাকবেন না। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানাবেন, আওয়ামী লীগকে জানাবেন। বৌদ্ধদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটেছে। সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজা সুন্দরভাবে হয়ে গেল। কড়া নিরাপত্তার কারণে পূজায় কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। এখন বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই উৎসবও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর আগে বৈঠকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেন। তারা জানান, এবার প্রবারণা পূর্ণিমায় সব ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যয় সংকোচন করে সাশ্রয়কৃত অর্থ রোহিঙ্গাদের কল্যাণে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য দেয়া এই অর্থ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে দেয়া হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অর্থ তুলে দেয়ার অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি ড. অসীম রঞ্জন বড়ুয়া, বাংলাদেশের সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজের মুখ্য সমন্বয়ক ড. অশোক বড়ুয়া, মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ ভিক্ষু ধর্মমিত্র মহাথেরো, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের সভাপতি দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া, স্বপন চৌধুরী বড়ুয়া. প্রথম বড়ুয়া, অধ্যাপক ডাঃ উত্তম বড়ুয়া প্রমুখ যোগ দেন।