সৌদি অর্থনীতির প্রধান উৎস তেলের বাজার এখন পড়তির দিকে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববাজারে তেলের দর কম থাকায় এমনই অবস্থা হয়েছে এখন সৌদি আরবের। নিউজ ডট কম অস্ট্রেলিয়া।
তেলের মূল্য পড়ে যাওয়ায় বাজেট ঘাটতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সৌদি আরব। বিশ্বের তেলের মোট মজুদের ২০ ভাগই আছে সৌদি আরবে। ২০১৪ সালে যেখানে তেলের দর ছিল প্রতি ব্যারেল প্রায় ১০০ ডলার সেটি এখন ৫০ ডলারে নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে বাজেট ঘাটতি মেটাতে রিজার্ভে হাত দেয়ার পাশাপাশি ধার করতে বাধ্য হচ্ছে রাজতন্ত্র শাসিত দেশটি। সিএনবিসির এক রিপোর্টে জানা গেছে, আগামীতে তেলের মূল্য আরও কমতে পারে। প্রতি ব্যারেলের দাম নেমে আসতে পারে ৩০ ডলারে। এর মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্র, নাইজেরিয়া, লিবিয়া বাড়তি জ্বালানি তেল উৎপাদন করছে। এতে বিশ্ববাজারে চাহিদার তুলনায় তেলের যোগান বেড়ে গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে অর্থনীতি বহুমুখীকরণের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা অকাযর্কর শ্রমবাজার, অদক্ষ শ্রমিক ও উচ্চ বেকারত্ব। এ জন্য আগামীতে শিক্ষাখাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে নাগরিকদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিকে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব। বেসরকারী খাতে ১ কোটি ২০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান করে ২০২০ সালের মধ্যে বেকারত্বের হার ১১.৬ থেকে ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। কিং আবদুল্লাহ ইকোনমিক সিটি নামে বাণিজ্য বান্ধব শহর নির্মাণে ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। যা নির্মাণ শিল্প, প্রযুক্তি ও ওষুধশিল্পে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে। দেশকে আধুনিকতার দিকে নিয়ে যেতে এটিই এ যাবতকালের সবচেয়ে উচ্চাকাক্সক্ষী প্রচেষ্টা যা বাস্তবায়িত হলে আমূল পাল্টে যেতে পারে সৌদি আরব। বর্তমানে অর্থনীতির অবস্থা এতই খারাপ যে, কৃচ্ছ্রতা সাধন করলেও তা হিতে বিপরীত হতে পারে। সীমিত সাধ্যের মধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটি শেষ অস্ত্রটি তাক করেছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর ৫ শতাংশের কম শেয়ার পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ১ শতাংশ শেয়ারও যদি পুঁজিবাজারে আসে তবে তা হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি প্রাথমিক আইপিও। এই শেয়ার বিক্রিকে আরও আকর্ষণীয় করতে কোম্পানি করের হার ৮৫ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে সৌদি সরকার। ফরচুনের হিসেবে এতে করে প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার রাজস্ব হারাবে সৌদি আরব। তারপরও এর মাধ্যমে ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে তহবিল পাওয়া যাবে তা সৌদি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।