ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হাউজিং ব্যবসায়ী খুনের নেপথ্যে

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১২ আগস্ট ২০১৭

হাউজিং ব্যবসায়ী খুনের নেপথ্যে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিয়ের অনুষ্ঠানে সিনিয়র ও জুনিয়রদের বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে তরুণ হাউজিং ব্যবসায়ী মোঃ তৌসির (২৮) খুন হয়েছে। হত্যাকা-ের ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। নিহতের বড় ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির জানান, মোহাম্মদপুরে বসিলা রোডের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ে ১ নম্বর রোডের ২ নম্বর ভবনে থাকেন তারা। হাউজিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, বুধবার রাতে তাদের ভাড়া বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে সিনিয়র ও জুনিয়রদের নিয়ে বিরোধ বাঁধে। টানা দুই ঘণ্টা দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নেয়। পরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দুই গ্রুপের বিরোধ মীমাংসা করে দেন। মীমাংসা হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বিয়ের অনুষ্ঠানে ছোট ভাই তৌসিরকে একা পেয়ে স্থানীয় জাকির গ্রুপের শাহিন, ফিরোজ, সোলেমান, মিরাজ, সুজনসহ ৮/৯ জন তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছোট ভাই তৌসিরের মৃত্যু হয়। তিনি জানান, ওই মারামারির ঘটনায় তার ছোট ভাই তৌসির পরিচিত গার্মেন্টস কর্মী উজ্জল (১৯) নামের এক যুবক আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। এ ঘটনার জের ধরে তৌসিরকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের বড় বোন মনি বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বাদী নিহতের বড় বোন মনি জানান, তৌসির পরোপকারী ছিল। এলাকার মাদক বিক্রি ও অন্যায় কাজে প্রতিবাদ করত। সম্প্রতি তার হাউজিং ব্যবসা ভাল করায় এলাকার কিছু চাঁদাবাজদের নজর পড়ে। এ নিয়ে কয়েক চাঁদাবাজের সঙ্গে বাগ্বিত-া হয়। মনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, নানা বিষয় নিয়ে এলাকার বখাটেদের চোখের শূল হয়ে দাঁড়ায় তার ছোট ভাই তৌসির। আর এজন্য তৌসিরকে কোরবানি ঈদের পর দুবাই পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ওরা (এলাকার চাঁদাবাজরা) তাকে বাঁচতে দিল না। আমি ভাইয়ের হত্যা বিচার চাই এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় মনি জানান, হামলাকারীরা যুবলীগ কর্মী। ওদের কি বিচার হবে। নিহতের বাবার নাম মোঃ আবু কালাম। গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহনে। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তৌসির। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বড় ভাই নাসির তৌসিরের লাশ গ্রহণ করেন। পরে তার লাশ চাঁদমিয়া হাউজিংয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জামে মসজিদের বাদ আছর জানাজা শেষে বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সংলগ্ন কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
×