ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলকাতা আমার সেকেন্ড হোম ॥ সাকিব

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২২ এপ্রিল ২০১৭

কলকাতা আমার সেকেন্ড হোম ॥ সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘কলকাতা মানেই বাঙালীর শহর। আপনাদের ঢাকাও তাই। কলকাতার সাথে তাই কোন আত্মিক যোগাযোগ টের পান?’ প্রশ্নটি ছিল ভারতীয় ক্রিকেট প-িত, জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের। প্রশ্নটি করেছেন সাকিব আল হাসানকে। সাকিবও জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, আমি সবসময় বলি যে, কলকাতা আমার সেকেন্ড হোম। কলকাতার হয়ে খেলছি ছয় কি সাত বছর হতে চলল। আমরা একই ভাষায় কথা বলি। আমাদের সংস্কৃতি একই রকম। আবহাওয়াও প্রায় একই ধাঁচের। এরচেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না। আমি যদি সড়কপথে বাড়ি (মাগুরা) যাই, তাহলে সেটাও খুব বেশি দূরে না। বড়জোর চার কি পাঁচ ঘণ্টা লাগে।’ ভারতীয় গণমাধ্যম ক্রিকবাজে হার্শা ভোগলেকে সাক্ষাতকার দেন সাকিব। আর সেখানেই সাকিব এমন কথা বলেন। কলকাতার প্রতি আত্মিক টান অনুভব করেন সাকিব। কলকাতা তাই বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের সেকেন্ড হোম। সাকিব শুধু এমন বিষয়েই নয়, কথা বলেন আরও অনেক বিষয়ে। বাংলাদেশী সমর্থকদের আইপিএলের প্রতি এখন বিশেষ আকর্ষণ আছে। কারণ কলকাতা নাইট রাইডার্সে (কেকেআর) বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আর ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদে বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান খেলেন। সমর্থন নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমি মাঠে খেলতে নামলেই বাংলাদেশের সমর্থকদের বড় একটা অংশ টেলিভিশন সেটের সামনে বসে থাকে। এটা মুস্তাফিজের ক্ষেত্রেও সত্য। মুস্তাফিজের আসার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে কেউ হায়দরাবাদের খেলা দেখত না। খুব কমই ওদের নিয়ে আলোচনা হত। কিন্তু মুস্তাফিজ হায়দরাবাদে আসা মাত্রই অবস্থাটা পাল্টে গেছে। সবাই হায়দরাবাদের ম্যাচ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকে। দেশের মানুষ ক্রিকেটের সাথে খুব নিবিড়ভাবে যুক্ত। আমরা যেখানেই খেলতে যাই, সেই খেলারই তারা খবর রাখে। যাদের হয়ে খেলি তাদের সমর্থন করে।’ অবশ্য এবারের আসরটি সাকিব কিংবা মুস্তাফিজ কারও জন্যই সুখকর হচ্ছে না। মুস্তাফিজ তো তাও একটি ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু সাকিব তো বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোন ম্যাচ খেলতে পারেননি। হার্সা ভোগলের কাছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার সাকিব। সেই সাকিব বলেন, ‘আমি ভাল করছি, দলের জন্য অবদান রাখছি এবং আমি তাতেই খুশি।’ বাংলাদেশ থেকে বিদেশের লীগগুলোতে সবচেয়ে বেশি খেলেছেন সাকিব। সবদেশের লীগেই সাকিবের পা পড়েছে। কিন্তু আইপিএলকেই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রাখছেন সাকিব, ‘এখানকার পরিবেশ অত্যন্ত ভাল এবং এটি ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসর।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আগের থেকে আইপিএল আরও জনপ্রিয় হয়েছে। আগে মানুষ শুধু কেকেআরের খেলা দেখত এখন মুস্তাফিজ হায়দরাবাদে খেলায় সে খেলাগুলোও দেখছে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা বাইরের যে কোন দেশের আসরে খেলতে গেলে সমর্থন করছে। আইপিএলের আবহটাই অন্যরকম, ইন্টেনসিটি অনেক বেশি। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আসলে খুব একটা পার্থক্য নেই। সত্যি কথা হলো আমি এ রকম তুলনায় যেতে পছন্দ করি না। তবে যদি আসলেই তুলনায় যান, তাহলে আইপিএলকেই সবগুলোর মধ্যে সেরা বলতে হয়। নিঃসন্দেহে এই টুর্নামেন্টটা খেলতে সবারই আগ্রহ থাকে।’ কেকেআর মালিক শাহরুখ খান সম্পর্কেও কিছু বলেন সাকিব, ‘একজন আন্তরিক মানুষ এবং তার কাছ থেকে সবসময় আমি অনেক সুন্দর পরামর্শ পেয়ে থাকি।’ সাকিব এবার ম্যাচই খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। শ্রীলঙ্কা সফর শেষে সরাসরি আইপিএল খেলতে যান। কিন্তু সাকিবকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। একাদশের বাইরেই থাকতে হচ্ছে। হার্শা ভোগলেও বিষয়টি ভালভাবেই নজরে এনেছেন। বলেছেন, ‘সাকিবকে যথার্থ সুযোগ দেয়নি কলকাতা।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি মনে করি সাকিব বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। কিন্তু কেন জানি কলকাতা সাকিবকে ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। আমি সাকিবকে কলকাতার সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে দেখি। কেকেআরের উচিত সাকিবকে আরও বেশি ব্যবহার করা।’ আইপিএল শুরুর আগে কেকেআরের অফিসিয়াল টুইটার পেজে সাকিবকে নিয়ে লেখা হয়েছিল, ‘সাকিব আল হাসান শক্তিশালী খেলোয়াড় এবং তিনি কেকেআরের মেরুদ-।’ সেই মেরুদ-কেই কাজে লাগানো হচ্ছে না এবার। হার্শা ভোগলে তাই মজা করেই সাকিবকে প্রশ্ন করেছেন, আপনি তো তাহলে বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে আসতে পারেন... হা হা...।’ সাকিবের জবাব ছিল এমন, ‘আমি এটা গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার করেছিও। একটা ব্রেক লাগলেই এখান থেকে দেশে সকালের ফ্লাইটে চলে যাওয়া যায়। আবার সন্ধ্যার ফ্লাইটে চলে আসা যায়। সত্যি এটা মজার ব্যাপার।’
×