ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভারতের অবদান

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভারতের অবদান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২০০০ সালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রথম টেস্টের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। গত ১৬ বছরে আর সব দেশ টাইগারদের আমন্ত্রণ জানালেও বন্ধুপ্রতিম দেশটি তা করেনি! একমাত্র টেস্ট খেলতে প্রথমবারের মতো মুশফিকুর রহিমের দল এখন হায়দরাবাদে। আগামী বৃহস্পতিবার শুরু আলোচিত এই ম্যাচ। দেশটির গণমাধ্যম যেটিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। দীর্ঘদিন উপেক্ষিত বাংলাদেশী সমর্থকদের মাঝে ক্ষোভ আছে, ভারতীয়রা সেটিও বুঝতে পারছেন। তবে মাত্র দেড় দশকে টাইগার ক্রিকেটের এমন উত্থানের পেছনে তাদের অবদান কম নয়, ইইসপিএন-ক্রিকইনফোর এডিটর সারদ উরগা যেমন বলেন, ‘বাংলাদেশের এই উত্থানের নেপথ্য কারণ তাদের টেস্ট মর্যাদা পাওয়া। আমরা জানি, ১৫ বছর আগে তৎকালীন আইসিসিপ্রধান জাগমোহন ডালমিয়ার ঐকান্তিক চেষ্টায় কারণেই সেটি সম্ভব হয়েছিল। আধুনিক ক্রিকেটে এশিয়ার দাপট প্রতিষ্ঠিত করতে প্রথমে তিনি বাংলাদেশকেই বেছে নিয়েছিলেন।’ আইসিসি যে নতুন করে দ্বিস্তরের টেস্টের পরিকল্পনা করেছে, সেখানেও বাংলাদেশের বিষয়টা মাথায় রাখা হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। প্রস্তাবের প্রথম স্তরে নয় দলকে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ র‌্যাঙ্কিংয়ের নয় নম্বরে থাকা বাংলাদেশ এলিটশ্রেণির সঙ্গেই থাকছে। দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাচ্ছে জিম্বাবুইয়ে। বর্তমানে আইসিসির প্রধান শশাঙ্ক মনোহর। জাগমোহনের মতো এই ভারতীয়রও যে টাইগার ক্রিকেটে বিশেষ দৃষ্টি আছে, সেটি আবারও পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠল। সারদা উরগার সঙ্গে একমত সাবেক ইন্ডিয়ান বোর্ড (বিসিসিআই) কর্তা রাজীব শুক্লা। তিনি বলেন, ‘এটা অস্বীকার করা যাবে না বাংলাদেশের এই উত্থানের নেপথ্যে তাদের টেস্ট স্ট্যাটাস।’ গত এক যুগে এমনকি জিম্বাবুয়ের মতো আফ্রিকান অঞ্চলের পুঁচকে দেশও ভারতে আমন্ত্রণ পেয়েছিল। অথচ বাংলাদেশের লাগল ১৫ বছর! ভারত বারবারই বলে আসছিল, টেস্টে বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। মাঠে দর্শক হবে না। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে। বাংলাদেশ এখন আর উঠতি শক্তি নয়। ক্রিকেট বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত দল। ঘরের মাটিতে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, এমনকি এই ভারতকেও নাকানি-চুবানি খাইয়েছে। দু-দলের ম্যাচ যে এখন দারুণ জনপ্রিয় হায়দারাবাদ টেস্টের টিকেট বিক্রিই তার প্রমাণ। নিজেদের মাটিতে বন্ধু দেশটির প্রথম টেস্ট আয়োজন স্মরণীয় করে রাখতে হায়দরাবাদ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন (এইচসিএ) বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। যাতে বাংলাদেশ-বরণের স্মৃতিটা তাদের ইতিহাসে ঠাঁই করে নেয়। ক্রোড়পত্র বা স্মরণিকাটি হবে মনে রাখার মতো। লিখবেন ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী দলের ম্যানেজার পিআর মান সিংÑমহিন্দর অমরনাথ, ভিভিএস লক্ষণ, ভেঙ্কটরাঘবন, সৈয়দ কিরমানির মতো সাবেক ক্রিকেটার। মুশফিক বলেছিলেন, ‘ঐতিহাসিকÑ এটা শুনে আমি একটু অবাক হই। আমার কাছে তা মনে হয় না! তবে ভারতের মাটিতে আমরা কেমন খেলি, সেটা প্রমাণ করার আছে। এমন পারফর্ম করতে চাই, যেন ভারত আমাদের বারবার আমন্ত্রণ জানায়।’ তার এমন বক্তব্যে ভারতের অনেক সংবাদমাধ্যম ক্ষুব্ধ হয়ে রিপোর্ট ছাপে। সাদা পোশাকের বাংলাদেশ অধিনায়ক যতই আর দশটা ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করুন, টেস্টটি স্মরণীয় করে রাখতে হায়দরাবাদ কিন্তু আয়োজনের কমতি রাখছে না।
×