ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিনিয়রদের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

সিনিয়রদের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুঃসহ হয়ে ওঠা নিউজিল্যান্ড সফরের সমাপ্তি ঘটেছে। এ সফরে চিরাচরিত নিয়ম হয়ে যাওয়া পরাজয়টাই আবার সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশ দলের। সফরের শেষ ম্যাচ ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে সবচেয়ে বাজেভাবে হারল সফরকারীরা। চতুর্থ দিনেই ম্যাচ শেষ হয়েছে ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার কারণে। ৯ উইকেটের পরাজয় এবং সর্বোপরি পুরো সফরে দলের ব্যর্থতার জন্য সিনিয়র ক্রিকেটারদেরই ব্যর্থতাকে বড় করে দেখছেন তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নিজে তেমন কিছু করতে পারেননি। এ কারণে পরাজয়ের দায়ভার নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন এ বাঁহাতি ওপেনার। তামিম মনে করেন পুরো সফরে বাংলাদেশ যেমন খেলেছে সেটারই প্রতিচ্ছবি ছিল ক্রাইস্টচার্চে। এটাকে বাংলাদেশ দলের খারাপ দিন বলে মানতে নারাজ তিনি। বাংলাদেশ দল দারুণ একটা অবস্থান নিয়ে এবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল। ঘরের মাটিতে টানা সাফল্য পাওয়া দলটিকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছিল এবার দারুণ কিছু সাফল্য অর্জনের। কিন্তু সেটা হয়নি। সফরের সব ম্যাচেই হেরেছে দল। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমাদের কাছে সবাই বেশি আশা করে। আমরা সিনিয়ররা যদি ভাল দায়িত্ব পালন করতাম, জুনিয়ররা তা দেখে আরও সাহস পেত। আমরা আমাদের কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারিনি। আমার শট বা অন্যরা যেভাবে আউট হয়েছেন, আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদের দোষে আউট হয়েছি। এই ফলাফল আমরা এগারজন মিলেই পরিবর্তন করতে পারতাম। কিন্তু পারিনি। যদি ভুল কম করতাম তাহলে অন্য ফল হতো।’ এই টেস্টের উভয় ইনিংসে দলের ব্যাটিং ভরসা তামিম ছিলেন একেবারেই ব্যর্থ। টানা রানের মধ্যে থাকা এ বাঁহাতি প্রথম ইনিংসে ৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ রান করতে পেরেছেন মাত্র। এ কারণে নিজেকেই দোষী করলেন তামিম, ‘একজন অধিনায়ক হিসেবে দলকে যেভাবে নেতৃত্ব দেয়ার দরকার ছিল, আমি তা পারিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে আমি যেভাবে আউট হয়েছি এটা মোটেই অধিনায়ক সুলভ ছিল না। এর মাধ্যমেই দল পরাজয়ের বার্তা পেয়ে যায়। তাই পরাজয়ের পুরো দায়ভার আমার। আমি আসলে অপরাধ করেছি। এ জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী।’ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতিটাই আলোচনায়। কোন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। অথচ শেষদিকে দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বির দারুণ ব্যাটিং করে যেন ব্যাটসম্যানদের লজ্জাই দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তামিম বলেন, ‘রাব্বির প্রচেষ্টা দারুণ। সে খুব ভাল ব্যাটিং করেছে। আর বোলিংয়েও সে দুর্দান্ত ছিল। আমি বলব এটা আমাদের খারাপ দিন মোটেই না। গোটা সফরে আমরা যা করেছি এটিও তার আরেকটা পুনরাবৃত্তি। আমাদের আবার একটি সুন্দর মুহূর্ত ছিল যেটার শেষটা আমরা ভাল করতে পারিনি। সব সময় আমরা একটি ভাল পরিস্থিতিতে আসি। সেখান থেকে হেরে যাই। আমি ক্যাপ্টেন। আমার ব্যাটিং দিয়ে টিমকে আরও ভালভাবে নেতৃত্ব দিতে পারতাম। দ্বিতীয় ইনিংসে আমি যেভাবে আউট হয়েছি এর মাধ্যমে নেতা হিসেবে দলকে আমি কোন ভাল বার্তা দিতে পারিনি। আরও কিছু আউট ছিল যেগুলো আমরা আরও ভালভাবে সামাল দিতে পারতাম। সিনিয়র ক্রিকেটাররা আরও ভাল করতে পারতেন। সব মিলিয়ে আমরা আরেকটি ভাল সুযোগ নষ্ট করেছি।’ সিনিয়র ক্রিকেটারদের খারাপ করার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পুরো সফরেই এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ছিলেন ব্যর্থ। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘একটা ফলাফলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবশ্যই থাকে। আমি এটাও বিশ্বাস করি আমরা ক্রিকেট এগারজনে খেলি। সিনিয়র ক্রিকেটারদের যত দায়িত্ব জুনিয়রদেরও সমান দায়িত্ব। আমাদের সবসময় একটা অভিযোগ থাকত টেলএন্ডাররা ভাল করে না। আজ কিন্তু সেটা থেকে আমরা বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছি। কিন্তু ক্যাচ হাতছাড়া করা আমাদের একটা রোগের নাম। আমি আশা করব টিম ম্যানেজমেন্ট এক্ষেত্রে আমাদের জন্য একজন স্পেশালিস্ট নিয়োগ করে রোগ সারানোর ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আমাদের পেস বোলাররা পুরো সফরে অসাধারণ বোলিং করেছেন। ভাল ভাল সুযোগ তৈরি করেছেন, কিন্তু আমরা ক্যাচ মিস করে সেই সুযোগগুলো হাতছাড়া করেছি। রিয়াদ ভাইয়ের জন্য হয় তো সেরা সিরিজ ছিল না। যখন এমন সময় যায়, তখন কোন কিছুই নিজের দিকে যায় না। যেভাবে এখানে আউট হয়েছে, দেখা যাবে পরের কোন সিরিজেই ওই বলগুলো খুব ভালভাবে খেলছেন।’
×