ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সোহ্রাওয়ার্দীতে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

সোহ্রাওয়ার্দীতে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী আজ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ গৌরব-ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হবে। ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে এ পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্নি স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। সোমবার বিকেলে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী, বাংলাদেশের পুনর্মিলনী। সংগঠনের সারাদেশের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে উঠবে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান। এ অনুষ্ঠানটি যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য ৫টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা নিয়মিত কাজ করছেন। পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কোন ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিশেষ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গাড়িগুলো যেন রাস্তার ওপরে বা যত্রতত্র পার্কিং করা না হয় সেজন্য শৃঙ্খলা উপ-কমিটি করা হয়েছে। এসব গাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম, মলচত্বর, মহসিন হলের খেলার মাঠ ও ফুলার রোডে পার্কিং করা হবে। কোনভাবেই রাস্তায় গাড়ি রাখতে দেয়া হবে না। শৃঙ্খলা উপ-কমিটির ৩৫ জন সদস্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে কাজ করবেন। যদি কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাকির হোসাইন বলেন, ছাত্রলীগ একটি সুশৃঙ্খল ছাত্রসংগঠন। পুনর্মিলনীতে এ সংগঠনের কোন নেতাকর্মী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। মিছিলগুলো রাস্তার একপাশ দিয়ে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আসবে। কেউ কোন গাড়ি আটকিয়ে মিছিল নিয়ে আসবে না। এরপরেও যদি পুনর্মিলনীর কারণে নগরবাসীর কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় বা কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে সংগঠনের পক্ষ থেকে অগ্রীম দুঃখ প্রকাশ করছি। বাংলা ও বাঙালীর স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যেই মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এ ছাত্র সংগঠটি। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নেতৃত্বেই ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন এর নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। কিন্তু পাকিস্তান আমলেই ‘মুসলিম’ শব্দটি ছেঁটে ফেলা হয়। স্বাধীনতার পর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। ছয় দশকে সংগঠনটি পেরিয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ আর নব্বইয়ের দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ঝঞ্ঝামুখর সময়। ছাত্র স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ অনেক সঙ্কটময় সময়ে ছাত্রলীগ ছিল আন্দোলনের নেতৃত্বের ভূমিকায়। দাবি আদায়ের সংগ্রামে ঝরেছে এর বহু নেতাকর্মীর প্রাণ। প্রতিষ্ঠালগ্নে নাইমউদ্দিন আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। পরের বছরের ৫ সেপ্টেম্বর আরমানিটোলায় ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই ২৮তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সংগঠনের সাইফুর রহমান সোহাগ সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
×