ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে ট্রাম্পের শলাপরামর্শ

গোয়েন্দা সংস্থা পুনর্গঠন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

গোয়েন্দা সংস্থা পুনর্গঠন হচ্ছে

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার পুনর্গঠন ও কর্মীসংখ্যা হ্রাস করার এক পরিকল্পনা নিয়ে শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কড়া সমালোচক। পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত লোকজন এ কথা জানান। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। তারা বলেন, ঐ সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টরের দফতরকে মাথাভারি ও দলীয়করণ করা হয়েছে-ট্রাম্পের এ বিশ্বাসই তাকে ঐ পদক্ষেপ নিতে চালিত করেছে। ট্রাম্প সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এবং গত কয়েকদিন সামাজিক মাধ্যমে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে কয়েক দফা আক্রমণ করেন। রাশিয়া ডেমোক্র্যাটিক দল ও সদস্যদের ইমেইলগুলো চুরি করে প্রচারের জন্য তা উইকিলিকসের হাতে দিয়েছিল। সংস্থাগুলোর এমন মূল্যায়নকে উড়িয়ে দেন এবং উপহাস করেন ট্রাম্প। গোয়েন্দাদের মতে, ট্রাম্প যাতে হোয়াইট হাউস প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন, সেজন্য তাকে সহায়তা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। ওয়াকিফহাল এক ব্যক্তি বলেন, উপদেষ্টারা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পুনর্গঠনের পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছেন। এর আওতায় সংস্থার ভার্জিনিয়া সদর দফতরের জনবল হ্রাস করে বিশ্বজুড়ে ফিল্ড পোস্টে আরও লোক পাঠাতে চাওয়া হচ্ছে। ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী টিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ঐ ব্যক্তি বলেন, গোয়েন্দা সম্প্রদায়কে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে বলে ট্রাম্প টিম মনে করে। তিনি বলেন, তাদের লোকবল কমানো উচিত। এজেন্সিগুলো পুনর্গঠন ও তারা কিভাবে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া হবে। বুধবার কয়েকটি টুইটার পোস্টে ট্রাম্প ফক্স নিউজের কাছে উইকিলিকসের এডিটর-ইন-চীফ জুলিয়ান এ্যাসাঞ্জের দেয়া এক সাক্ষাতকারের উল্লেখ করেন। এতে এ্যাসাঞ্জ তার প্রচারিত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিভিন্ন শাখা এবং ক্যাম্পেন ম্যানেজার জন পডেস্টাসহ হিলারি ক্লিনটনের উপদেষ্টাদের হাজার হাজার ইমেইল রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। ট্রাম্প টুইট করেন, ১৪ বছরের এক কিশোরও পডেস্টার ইমেইল হ্যাক করতে পারত বলে এ্যাসাঞ্জ মন্তব্য করেন। ডিএনসি কেন এত অসতর্ক ছিল? রুশরা তাকে তথ্য সরবরাহ করেনি বলেও এ্যাসাঞ্জ জানান। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রশংসা এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমালোচনা করার জন্য ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাগণ এবং গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েন। এখন তিনি এ্যাসাঞ্জের প্রশংসা করায় তাদের কাছে সমালোচিত হচ্ছেন। মার্কিন সরকারী কর্মকর্তা ও আইনপ্রণেতারা দীর্ঘদিন ধরে এ্যাসাঞ্জকে ঘৃণার চোখে দেখে এসেছেন। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, আমাদের সামনে দুটি বিকল্প পথ রয়েছে: আইনের হাত থেকে পালিয়ে একটি দূতাবাসে বসবাসরত কোন ব্যক্তি, যার আমেরিকার গণতন্ত্রকে দুর্বল করার এবং আমাদের সৈন্যদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে গোপন তথ্য ফাঁস করার ইতিহাস রয়েছে, অথবা আমাদের রক্ষা করতে শপথ নেয়া ১৭টি গোয়েন্দা সংস্থা। আমি তাদের পাশে রয়েছি। কিন্তু ট্রাম্প ও কোন কোন সমর্থকের মতে, রাশিয়া ডেমোক্র্যাটদের ই-মেইল হ্যাক করেছিল বলে অভিযোগকে তার নির্বাচন যে অবৈধ ছিল তা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা বলে দেখা হয়। ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টরের দফতর (ওডিএনআই) ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর বড় উদ্দেশ্য ছিল ২০০১’র ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা। আইনপ্রণেতা ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা অতীতে ওডিএনআইয়ের লোকবল কমানো বা এর পুনর্গঠনের প্রস্তাব করেন। প্রেসিডেন্টস ইন্টোলিজেন্স এ্যাডভাইজরি বোর্ড নামের এক হোয়াইট হাউস প্যানেল ২০১০ সালে এক গোপনীয় রিপোর্টে সংস্থাটির আকার সংকুচিত এবং এর দিকে নিবিড় দৃষ্টি রাখার প্রস্তাব করেন। কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসে একথা বলা হয়। এ রিপোর্টের ফলে কোন আইন প্রণীত হয়নি। কর্মকর্তারা বলেন, সংস্থাটিতে পরিবর্তন আনা কঠিন বলে প্রমাণিত। কারণ, এর মূল দৃষ্টি সন্ত্রাসদমন, পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার ও পাল্টা গোয়েন্দা তৎপরতার মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর দিকে নিবদ্ধ ছিল। রাশিয়া ঐ তৎপরতায় জড়িত থাকার কথা দীর্ঘদিন ধরে অস্বীকার করে এসেছে। তবে পুতিন বলেন, চুরি করা ইমেইলগুলো প্রকাশ করে জনসাধারণের সেবা করা হলো।
×