ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সঠিক কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করুন ॥ রাজউককে তাগিদ দুদক চেয়ারম্যানের

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

সঠিক কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করুন ॥ রাজউককে তাগিদ দুদক চেয়ারম্যানের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সঠিক কাজের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তি পর্যায়ের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) জোর তাগিদ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ। একইসঙ্গে নাগরিকদের কাছে দায়বদ্ধতার জন্য তথ্য অধিকার আইন তথা তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। অপরদিকে জবাবদিহিতার মাধ্যমেই সেবা নিশ্চিত করতে ও চলমান অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে সংস্থাটির পুরো সেবা প্রক্রিয়া অটোমেশনের আওতায় আনতে কাজ করছে ও নাগরিকদের সমস্যা সরাসরি জানতে প্রতি সোমবার নিয়মিত গণশুনানি করছে বলে জানিয়েছেন রাজউক চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী। বুধবার রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে দুদক আয়োজিত রাজউকের সেবা সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর ফলোআপ গণশুনানি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দুদকের মহাপরিচালক ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া ও ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক নাসিম আনোয়ারের সঞ্চালনায় এ গণশুনানি হয়। এ সময় দুদক ও রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নাগরিকদের সেবা প্রদানের অভিযোগ ও নিষ্পত্তি সংক্রান্ত ৩৫তম এ গণশুনানির আয়োজন করে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুদক। দুদক কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে প্রায় ৪০ সেবাগ্রহীতা তাদের অভিযোগ পেশ করেন। প্রতিটি অভিযোগ সম্পর্কে রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে নাগরিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেন। ফলোআপ গণশুনানি অনুষ্ঠানে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আবদুর রশীদ খান, ডাঃ রেজাউল ইসলামসহ কতিপয় অভিযোগকারীর অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হয়। তবে কতিপয় অভিযোগ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। তারাই প্রিন্সিপাল, সরকারী কর্মকর্তারা এজেন্ট মাত্র। তাই সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে ভাল আচরণ করবেন এবং আইন মেনে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমরা দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। কেউই আইনের উর্ধে নন। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য পাই এবং তাতে দুর্নীতির উপাদান থাকে তাহলে আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ একটি একটি করে অনুসন্ধান করব। আমরা শুধু প্রতিরোধের জন্য নয়, দুর্নীতি দমনও করব। তিনি বলেন, ফলোআপ গণশুনানি আরও ফলপ্রসূ হওয়া উচিত ছিল। রাজউককে মূলত তার সঠিক কাজের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে হবে। এজন্য তথ্য অধিকার আইন তথা তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। রাজউকের ওয়েবসাইটে সংস্থাটির সর্বশেষ ও সকল তথ্য থাকা উচিত। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধন হতো। নাগরিকরা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পেতেন। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমরা অনেক সময় জানতে পারি রাজউক কর্মকর্তারা সেবাগ্রহীতার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এটা কাক্সিক্ষত নয়। অবশ্যই ভাল আচরণ করেই সেবা প্রদান করতে হবে। অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, আজকের গণশুনানির মাধ্যমে রাজউকের সার্বিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। আজ রাজউকের কর্মকর্তারা যে প্রতিশ্রুতি দিলেন সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করবেন। আমরা সরকারী সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান বজলুল করিম চৌধুরী বলেন, জবাবদিহিতার মাধ্যমেই আমাদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আমাদের পুরো সেবা প্রক্রিয়া অটোমেশন করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা যদি আমাদের সকল কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনতে পারি তাহলে অনেক সমস্যারই সমাধান হবে। এ লক্ষ্যে আমরা প্রতি সোমবার নিয়মিত গণশুনানি করছি। বর্তমানে রাজউকের প্রধান কার্যালয়ে সেবা গ্রহীতাগণ ভিড় করছেন ও কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে। এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমরা আমাদের জোনাল অফিসগুলোকে পুরোপুরি কার্যকর করার পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। এতে ঘরের কাছেই গ্রাহকরা তাদের সেবা পেতে পারবেন। তবে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে হলে কিছুটা সময় লাগবে। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
×