ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে দুর্ঘটনা রোধে সড়ক মন্ত্রীর ক্যাম্পেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে দুর্ঘটনা রোধে সড়ক মন্ত্রীর ক্যাম্পেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এমন দৃশ্য সহজে চোখে পড়ে না। ভক্তদের ঝামেলা এড়াতে যারা নিজেদের আড়াল করে বেড়ান তাদের অনেকেই প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাদের সমস্যা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। উপদেশ দিয়েছেন সচেতন হয়ে পথ চলার, যাতে কোন অবস্থাতেই যেন সড়কে চলতে দুর্ঘটনার শিকার হতে না হয়। সচেতনতার সঙ্গে সবাইকে নিরাপদে পথ চলতে উৎসাহিত করতে সেলিব্রেটিদের সঙ্গে নিয়ে এবার রাস্তায় নেমেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে রাজধানীর বনানী-কাকলীতে সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক এক ক্যাম্পেনে যোগ দেন দেশের বেশ কয়েকজন চিত্রনায়ক, নায়িকা, শিল্পী ও কলাকুশলী। ছিলেন বিশিষ্টজনরাও। ওবায়দুল কাদের নায়ক-নায়িকাদের সঙ্গে ক্যাম্পেনে যোগ দেয়া সবার হাতে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক স্টিকার ও লিফলেট তুলে দেন। তারা যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকারসহ জনগণের মধ্যে স্টিকার ও লিফলেট বিতরণ করেন। সেই সঙ্গে সড়কে অবস্থানরত বেশকিছু গাড়িতে বিভিন্ন সেøাগান সংবলিত স্টিকার লাগিয়ে দেন। এ সময় যাত্রীবাহী বাসের চালক ও যাত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন সেতুমন্ত্রী। সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে মিটারে চলছে কিনা এ বিষয়টিও তদারকি করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এ অভিযানে অংশ নেন- লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি (বিআরএ) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, চিত্রনায়ক ওমর সানি, অভিনেত্রী নিপুণ, অভিনেতা শিমুল, মিশা সওদাগর, লিটু আনাম, কণ্ঠশিল্পী এসআই টুটুলসহ অনেকে। এ সময় এ্যাপভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা ‘উবার’কে স্বাগত জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা উবারের বিপক্ষে নই, তবে উবারের মতো আধুনিক এ পরিবহন ব্যবস্থা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আসতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা উবার নিয়ে এসেছে, তারা সরকারের কাছে এটি পরিচালনার অনুমতি নেয়নি। একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে এটিকে জনগণের সেবায় আসতে হবে। সরকার এমন ডিজিটাল ব্যবস্থাকে অবশ্যই স্বাগত জানায়। তবে তা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আসতে হবে। মন্ত্রী বলেন, সড়কে ফ্রি-স্টাইলে গাড়ি চালানো যাবে না। যারা মোবাইলে এয়ার ফোন কানে দিয়ে মধুর গানের সুরে সুরে গাড়ি চালান তাদের সাবধান করা হচ্ছে। তাদের এসব অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালাতে হবে, একই সঙ্গে পথচারীদের সচেতন হতে হবে রাস্তা পারাপারে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সচেতনতায় জানমালের ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। সেলিব্রেটিদের নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা প্রচার শেষ করে মন্ত্রী ওবায়দুল ফেরার পথে তার সামনে এসে দাঁড়ালেন ভিক্ষুক মাসুম। এক পা অচল তার। সেজন্য হয়ত মন্ত্রীর কাছে ঘেঁষতে বাধা দেননি তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশরাও। ভিক্ষাবৃত্তি অনুৎসাহের হলেও খোঁড়া মাসুমের প্রতি মায়া হয় মন্ত্রীর। মনোযোগী হন তার প্রতি। কথা বলতে থাকেন খানিকটা মাথা নুইয়ে সবিনয়ে। শোনেনও মাসুমের কথা। মন্ত্রীকে পেয়ে মাসুম তার আবদারের কথা বলতে থাকেন- স্যার, ভিক্ষা করে খেতে আমার খুব লজ্জা লাগে। আমি একটা অটোরিকশা চাই। ভিক্ষাবৃত্তিতে মাসুমের আবদারে মুগ্ধ হন মন্ত্রী। একই সঙ্গে তার অসহায়ত্ব বুঝতেও দেরি হয়নি তার। সঙ্গে সঙ্গেই মাসুমকে একটি অটোরিকশা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিতে তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। অটোরিকশার অনুমোদনও যেন হয়ে যায়- সেটাও নিশ্চিত করে রাখতে বলেন ওবায়দুল কাদের। এমন পুরস্কার পেয়ে মহাখুশিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন মাসুম। সবার মুখের দিকে তাকিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে থাকেন তিনি।
×