ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজকোট টেস্টে গৌতম গাম্ভীর ও মুরলি বিজয়ের ব্যাটে লড়ছে ভারত

তিন সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় ইংল্যান্ডের

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১১ নভেম্বর ২০১৬

তিন সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় ইংল্যান্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাত্র কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফরে নাকানি-চুবানি খেয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। টেস্ট ক্রিকেটে অন্যতম শক্তিধর দলটি নবীন ও দুর্বলতর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দলীয় সংগ্রহটাকে ৩ শ’ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেনি! ব্যক্তিগত শতক ছিল অতিকল্পনার মতো। সর্বশেষ ইনিংসে ১৬৪ রানেই (মিরপুরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্ট) গুটিয়ে গিয়েছিল ক্রিকেট পরাশক্তিরা বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা আর অমিত মিশ্রদের মতো তিন বিশ্বসেরা স্পিনার নিয়ে তাই আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠে ভারত। কিন্তু ইংল্যান্ডের সেই দলটি মাত্র দশদিনের ব্যবধানে পাল্টে গেল। অশ্বিন-জাদেজাদের নখ-দন্তহীন বোলারে পরিণত করে রাজকোটে চলমান প্রথম টেস্টের দ্বিতীয়দিনে ৫৩৭ রানে গিয়ে থামল সফরকারী ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। আগেরদিন জো রুট শতক (১২৪) হাঁকিয়েছিলেন। দ্বিতীয়দিনে সেঞ্চুরি হাঁকালেন মঈন আলী ও বেন স্টোকস। দিনশেষে বিনা উইকেটে ৬৩ রান তুললেও ভারতের মাথার ওপরে ৪৭৪ রানের বোঝা। এখনও এই বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা। রানের পাহাড় গড়তে চলেছে সফরকারী ইংল্যান্ড সেটার আভাস পাওয়া গিয়েছিল বুধবার প্রথমদিনেই। প্রথমদিনেই মাত্র ৪ উইকেটে ৩১১ রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। রুট ১২৪ রান করে বিদায় নিয়েছিলেন। তবে দারুণ ব্যাটিং করা মঈন ৯৯ রান নিয়ে ক্রিজে ছিলেন। দ্বিতীয়দিনের শুরুতে তিনি সেঞ্চুরিটা পূর্ণ করে ফেলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি এটি মঈনের। তার সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন স্টোকস। ভারতীয় বোলাররা প্রথম সেশনের পরিবেশটা কাজে লাগাতে পারেনি বিন্দুমাত্র। উল্টো তাদের তুলোধুনো করেছেন মঈন-স্টোকস। ১৬২ রানের জুটি ভাঙ্গেন পেসার মোহাম্মদ সামিÑ মঈনকে বোল্ড করে দেন তিনি। ২১৩ বলে ১৩ চারে ১১৭ রান করেছিলেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে দ্রুতগতিতে ৯৯ রানের জুটি গড়েন স্টোকস-জনি বেয়ারস্টো। মধ্যাহ্ন বিরতির সামান্য আগে বেয়ারস্টো (৪৬) ফিরে যান সামির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারালেও ১৩৯ রান তোলে ইংলিশরা মাত্র ৩০ ওভারে! এটাই এক সেশনে ইংল্যান্ডের তোলা আজ পর্যন্ত সর্বাধিক রান। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। জোড়া আঘাতে ক্রিস ওকস (৪) ও আদিল রশিদকে (৫) ফিরিয়ে দেন জাদেজা। তবে জাফর আনসারিকে নিয়ে নবম উইকেটে আরও ৫২ রান যোগ করেন স্টোকস। পেয়ে যান ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। এর আগে ভারতের বিরুদ্ধে তিন ইনিংস ব্যাট করে প্রতিবারই ০ রান করে ফিরে গিয়েছিলেন স্টোকস। এবার ২৩৫ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১২৮ রান করে সাজঘরে ফিরলেন উমেশ যাদবের বলে। এরপর আর আনসারিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি ৩২ রান করে সাজঘরে ফেরার পর স্বস্তি আসে ভারতীয় শিবিরে। ৫৩৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। সফলতম বোলার জাদেজা ৮৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। তবে অশ্বিন ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৬৭ রান দিয়েছেন এই ইনিংসে বোলিং করে, উইকেট নিতে পেরেছেন মাত্র দুটি। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ভারতের মাটিতে সফরকারী দলে তিন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন (শ্রীলঙ্কা, আহমেদাবাদ)। এটি ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ডের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০১২-১৩ মৌসুমে সর্বশেষ কোন সফরকারী দল ভারতে এসে ৫ শতাধিক রান করেছিল। কলকাতায় ইংল্যান্ডই করেছিল ৫২৩। বোলারদের ব্যর্থতার পর ভারতের ব্যাটসম্যানরা ভালভাবেই শুরু করেছে। দীর্ঘদিন পর ফেরা গৌতম গাম্ভীর ২৮ রান নিয়ে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন ২৫ রান করা মুরালি বিজয়কে। তবে যেতে হবে অনেকদূর। বিনা উইকেটে ৬৩ রান তুলেও এখন পর্যন্ত ৪৭৪ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা মাত্র দ্বিতীয় দিনশেষে। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস- প্রথমদিন শেষে ৩১১/৪; ৯৩ ওভার (রুট ১২৪, হামিদ ৩১, কুক ২১, ডাকেট ১৩, মঈন ৯৯*, স্টোকস ১৯*; অশ্বিন ২/১০৮, জাদেজা ১/৫৯)। দ্বিতীয়দিন- ৫৩৭/১০; ১৫৯.৩ ওভার (মঈন ১১৭, স্টোকস ১২৮, বেয়ারস্টো ৪৬, আনসারি ৩২; জাদেজা ৩/৮৬, সামি ২/৬, যাদব ২/১১২, অশ্বিন ২/১৬৭)। ভারত প্রথম ইনিংস- ৬৩/০; ২৩ ওভার (গাম্ভীর ২৮*, বিজয় ২৫*)। দ্বিতীয় দিনশেষে ভারত ৪৭৪ রানে পিছিয়ে।
×