ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধ

ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সৈন্যদের কর্মকা-ের ওপর একটি নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করার পর সৈন্যরা ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য নতুন করে এক যুদ্ধাপরাধ তদন্তের সম্মুখীন হয়েছে। খবর ডেইলি টেলিগ্রাফ অনলাইনের। এক তালেবান বোমা প্রস্তুতকারীর কাছ থেকে যে সকল অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে উল্লিখিত অভিযোগগুলোও। এই তালেবান সদস্য দাবি করেছে, তাকে গ্রেফতার করা ও ১শ’ ৬ দিন আটক রাখা ছিল বেআইনী। এছাড়াও সে বলেছে, সৈন্যরা মনে করেছে যে, তাকে মুক্তি দেয়া হলে ব্রিটিশ সৈন্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে সে বোমা তৈরি করবে। এ পর্যন্ত ব্রিটিশ সৈন্যদের ওপর ফৌজদারি তদন্তে আলোকপাত করা হয়েছে প্রধানত ইরাকে তাদের কর্মকা-ের ওপর। কিন্তু টেলিগ্রাফ এক নতুন তথ্যে বলেছে, আফগানিস্তানে ৫শ’ ৫০ এরও বেশি ঐতিহাসিক যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এখন মন্ত্রীদের দিয়ে গঠিত একটি বিশেষ পুলিশ ইউনিটের তদন্তাধীন রয়েছে। এর মানে, তদন্তকারীরা এখন ইরাক ও আফগানিস্তানÑ দুটি দেশেই ২ হাজার ২শ’র বেশি ঘটনায় অপব্যবহারের তদন্ত চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে। রক্ষণশীল দলের এমপি জনি মের্সার বলেছেন, যে আফগানিস্তানে আমাদের সৈনিকদের দায়িত্ব পালনের জন্য বলেছি তার চেয়ে বেশি পরীক্ষিত কোন রণাঙ্গন রয়েছে, তা আমার কল্পনাতীত। আফগানিস্তানে সংঘটিত অপরাধ অভিযোগ তদন্ত দল শুরুতে রাজকীয় সামরিক পুলিশের ৬০ জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত হয়। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ তদন্তে সদস্য সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি করে ১শ’ ২৪ জনে উন্নীত করেছে। সাঙ্কেতিক নাম অপারেশন নর্থমুর নামের এ ইউনিটের অবস্থানের জন্য কর্নওয়ালে এক বিমান ঘাঁটিতে একটি নতুন সদর দফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকার এ বছরের শুরুতে তদন্ত প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ৭০ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড অর্থায়ন করেছে। ইরাকে ব্রিটিশ সৈন্যদের নেতৃত্বদানকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল টিম কলিনস বলেছেন, সৈন্যদের বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ দায়ের করছেন তারা পরজীবী আইনজীবী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল নিশ্চিত করেছে যে সকল ঘটনার তদন্ত চলছে সেগুলোর মধ্যে এক তালেবান কমান্ডার ও বোমা তৈরিকারী আটক ও তার প্রতি অপব্যবহারের তদন্তও রয়েছে। তাকে হেলমান্দে ১শ’ দিনের বেশি আটক রাখা হয়। সামরিক বাহিনী ২০১০ সালের এপ্রিলে এই তালেবান কমান্ডার সরদার মোহাম্মদকে আটক করে এবং তারা মনে করে, তাকে ছেড়ে দেয়া হলে স্থলে সৈন্যদের জন্য এক হুমকি হয়ে দেখা দেবে অথবা আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হতে পারে। ওই সময়, ব্রিটিশ সৈন্যরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছিল, বিশেষ করে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে হতাহত হচ্ছিল তারা। মোহাম্মদকে গ্রেফতারের সময় নির্যাতন করা হয়েছেÑ এ দাবির তদন্ত চালাচ্ছে অপারেশন নর্থমুর। সাহসিকতার জন্য দুটি পদকপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর এক মেজর ও অন্য দুই কর্মচারীকে ১৯ বছর বয়স্ক এক ইরাকীর মৃত্যুর জন্য হত্যাকারী হিসেবে বিচারের সম্মুখীন করা হচ্ছে বলে টেলিগ্রাফে গত সপ্তাহান্তে খবর প্রকাশের পর এ তদন্তের ব্যাপারে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই তিনজনকে এর আগে দুই বছরের এক তদন্তের পর অপরাধের অভিযোগ থেকে রেহাই দেয়া হয়।
×