ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে মূল ইস্যু নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নির্বাচনে মূল ইস্যু নিরাপত্তা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তা ২০১৬-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার মূল ইস্যু হয়ে দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্ক সিটিতে গত সপ্তাহান্তের কয়েক দফা বোমা হামলার পার ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই ইস্যুতে বাগ্যুদ্ধে লিপ্ত হন। সর্বশেষ বোমা হামলার বিষয়ে দুই প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া সন্ত্রাসী হুমকি নির্মূল করার সর্বোত্তম উপায় নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যকার গভীর মতভেদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে; হিলারি গোয়েন্দা ও পুলিশী তৎপরতা এবং তার অভিজ্ঞতার ওপর জোর দিয়েছেন, আর ট্রাম্প অভিবাসনের ওপর আরও কড়াকড়ি আরোপের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বোমা হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি অনুমোদন সূত্রে এক আমেরিকান নাগরিক। সে শিশু থাকার সময় তার পরিবার আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিল। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। ট্রাম্প সোমবার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের এস্টারোতে এক সমাবেশে বলেন, আমাদের অত্যন্ত উদার অভিবাসন ব্যবস্থার কারণেই ওই সব ও অন্য অনেক হামলা সম্ভব হয়েছে। এ ব্যবস্থা আমাদের দেশে আগত ব্যক্তিদের উপযুক্তভাবে পরীক্ষা করে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে। হিলারি একই দিন ‘ভীত নয়, সতর্ক’ হতে আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা আগেও হুমকির মোকাবেলা করেছি। একই সাহস ও সতর্কতা নিয়ে আমরা এ নতুন বিপদের সম্মুখীন হব- এটা আমি জানি। যখন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভোটাররা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তখন ওই সব হামলা ঘটল। এ উদ্বেগ গত প্রজন্মের মধ্যে অন্য যে কোন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় এবার বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/এনবিসি নিউজের এক জরিপের বিশ্লেষণ থেকে এটি জানা যায়। গত জুন মাসে ফেডারেল সরকারকে মোকাবেলা করতে হবে এমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কোনটি, এ প্রশ্নে যে ইস্যুকে অন্য যে কোনটির চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হয়, তা ছিল জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ। শতকরা ২৮ ভাগ উত্তরদাতা একেই প্রথম ইস্যু বলে মনে করেন। ওই জরিপ ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে ব্যাপক গুলিবর্ষণের পরপরই চালানো হয়। নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণকারী এক ব্যক্তি সেখানে গুলিবর্ষণ করেছিল। তার মা-বাবা আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর বিষয়ে প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া ও আগামী সপ্তাহের প্রথম বিতর্ক এখনও সিদ্ধান্ত নেননি বা তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীদের দিকে ঝুঁকে আছেন এমন শতকরা প্রায় ১১ ভাগ ভোটারের মন জয় করতে উভয় প্রার্থীকে শেষবারের মতো অন্যতম সুযোগ দেবে। ওই বিতর্কে নিরাপত্তা ইস্যুগুলো স্থান পাবে। সন্ত্রাসবাদ ও রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এমন দুই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দেখতে পান যে, সন্ত্রাসী হামলার হুমকির সময় সাধারণত রিপাবলিকানরা রাজনৈতিক সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ দুই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হলেন- ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির এলিজাবেথ জেকমেইস্টার এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনিফার মেরোলা। তবে তারা উপসংহারে পৌঁছান যে, এ বছর হিলারির অভিজ্ঞতা ট্রাম্পের এ সুবিধাকে নিষ্ক্রিয় করে দেবে। মেরোলা জানান, সন্ত্রাসী হামলা নির্বাচনের ওপর আরেক প্রভাব ফেলবে বলে তাদের গবেষণায় অভাস পাওয়া যায়। সেটি হলো- ভোটাররা প্রার্থীদের নীতিগত অবস্থানের দিকে দৃষ্টি দেয়ার চেয়ে বরং তাদের চরিত্রের দিকে আরও মনোযোগ দেবেন। হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হোয়াইট হাউসে তার কাজ করার অভিজ্ঞতার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি ফিলাডেলফিয়ায় এক যাত্রাবিরতিতে বলেন, আমি দায়িত্বজ্ঞানহীন, বগ্লাহীন কথাবার্তায় লিপ্ত হতে নয়, ওই সব চ্যালেঞ্জ মোবাবেলায় বাস্তাবে প্রস্তুত রয়েছি। ট্রাম্প ইসলামিক স্টেট ও অন্যান্য সন্ত্রাসী দলকে দমন করতে আরও কার্যকরতার পরিচয় দেবেন ট্রাম্পের এমন কথাবার্তাকে উপহাস করেন হিলারি। ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বলেন, আপনারা তার কাছ থেকে কোন পরিকল্পনার কথা শুনছেন না। তিনি বলে যাচ্ছেন, তার গোপন পরিকল্পনা রয়েছে। আসল কথা, তার কোন পরিকল্পনাই নেই। ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি সমভাবে কড়া জবাব দেন। তিনি সন্দেহভাজনদের নাম তালিকাভুক্ত করতে পুলিশকে আরও ক্ষমতা দেয়ার এবং অভিবাসীদের পরীক্ষায় আরও কড়াকড়ি আরোপের আহ্বান জানান। তিনি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আরও শরণার্থী গ্রহণের প্রতি হিলারির সমর্থনেরও সমালোচনা করেন।
×