ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাকিল আহমেদ

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

আসছে কোরবানির ঈদ। ঈদ-উল-আযহা ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত একটি দিন। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে তার মাংস গরিব-দুঃখী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়। কোরবানির পশু হিসেবে অধিকাংশ মানুষেরই প্রথম পছন্দ গরু। সাধারণত লালন পালন করা হয়েছে এবং মায়া জন্মেছে এমন পশুকে কোরবানি দেয়ার কথাই ধর্মে বলা হয়েছে। তবে এই ব্যস্ত নগর জীবনে পশু পালন করার সুযোগ হয়ে ওঠে না সবার। তাই ঈদের জন্য কোরবানির গরু কিনতে সবাই হাটে যান। পছন্দসই গরুটি কিনে আনেন। কোরবানি ঈদের সারাদিন ধরেই সবার ঘরে চলে কোরবানির মাংস রান্না। এই ঈদে তাই রান্না ঘরের ব্যস্ততা একটু বেশি থাকে। আবার ঈদের দিনে এই মাংস সংরক্ষণ করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। কিন্তু যাদের ফ্রিজ নেই কিংবা ফ্রিজে জায়গা হচ্ছে না তাদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় টিপস। মাংস সংরক্ষণের সাধারণ পদ্ধতি ১. হালকা লবণ ও হলুদ দিয়ে মাংসগুলোকে তাপ দিলে তা অনেক দিন সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা যায়। তবে খেয়াল করে সকালে এবং বিকেলে একবার জ্বাল দিতে হবে নইলে মাংসে দুর্গন্ধ হয়ে যাবে । ২. মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে আদি পদ্ধতি হলো মাংস রোদে শুকিয়ে নেয়া। হালকা লবণ দিয়ে মেখে নিয়ে রোদে ভালভাবে শুকালে এই মাংস ভাল থাকে অনেক দিন। তবে শুকানোর পর অবশ্যই মাংসগুলো টিনে ভাল করে এঁটে রাখতে হবে, নয়তো পোকামাকড়ের আক্রমণে তার আবার পুষ্টি অপচয় হবে। ৩. মাংস কেটে পরিষ্কার করে, আদা, রসুন, পেঁয়াজ বেশি করে দিয়ে মেখে মাংশে জ্বাল দিন। একদিন অন্তর মাংস জ্বাল দিলে, ১৫-২০ দিন মাংস ভাল থাকবে। ৪. মাংস লম্বা লম্বা করে টুকরা করে, লবণ, হলুদ মেখে রেখে রোদে শুকিয়ে নিন। এবার এগুলো তেলে ভেজে খেতে পারেন বা রান্নার আগে ভিজিয়ে নিতে পারেন। ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের পদ্ধতি আগে থেকেই ফ্রিজ পরিষ্কার করে মাংস রাখার জন্য আলাদা জায়গা করে রাখুন। ১. ফ্রিজে পুটলি করে মাংস না রেখে যদি বিছিয়ে প্যাকেট করা হয় তবে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়। ২. কিছু সলিড মাংস সিদ্ধ করে কাবাবের জন্য রেডি করে রাখা যেতে পারে। ৩. মাংস বড় বড় টুকরো ও কিছু মাংস কুচি করে কিমা হিসেবে সংরক্ষণ করা যায়। ৪. আবার ভিনেগার দিয়েও মাংস সংরক্ষণ করা যায়। কোন টিন বা বোতলে ভিনেগারে মাংস সম্পূর্ণভাবে ডুবিয়ে রাখলে মাংস ভাল থাকে অনেক দিন। ৫. আর ভিনেগার যদি না পাওয়া যায়, তাহলে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। মাংসের টুকরোগুলোকে লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে ক্যানড করলে মাংস ভাল থাকে অনেক দিন। ৬. ভিনেগার বা লেবুর রস ব্যবহার করলে মাংস সংরক্ষণের পাত্রটি ডিপ ফ্রিজে না রেখে রেফ্রিজারেটরে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখতে হবে। ৭. মাংস বড় বড় টুকরো ও কিছু মাংস কুচি করে কিমা হিসেবে সংরক্ষণ করা যায়। ৮. চর্বিযুক্ত মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাই মাংস কাটার সময় চর্বি কেটে নেয়াই ভাল। মনে রাখতে হবে কোরবানির ঈদে মাংস কাটাকাটি, গুছিয়ে রাখা, রান্না করা ইত্যাদি নানা কারণে রান্নাঘর নোংরা বেশি হয়। আর কাঁচা রক্তের গন্ধও থাকে বেশ। তাই মাংস কাটার পর ময়লা সঙ্গে সঙ্গে পুতে দিন। চুলা থেকে শুরু করে রান্নাঘর ডেটল, স্যাভলন অথবা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করুন। তবেই আপনার ঘর থাকবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
×