ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস শ্বেতপদ্মের প্রকাশনা উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৫ আগস্ট ২০১৬

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস শ্বেতপদ্মের প্রকাশনা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনরাত্রির পটভূমিতে বর্ণিত হয়েছে কয়েকজন মানুষের যাপিত জীবন। খরস্রোতা সময়ের সঙ্গে মূর্ত হয়েছে তাদের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও প্রেম-ভালবাসার কথা। এমনই প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে লেখক তাবারক হোসেনের প্রথম উপন্যাস ‘শ্বেতপদ্ম’। বিমান বাহিনীর সাবেক এই উইং কমান্ডার এবং বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা তাবারক হোসেন পেশাগত জীবনের অবসরে লেখালেখি করেন। শ্বেতপদ্ম উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান কক্ষে গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পনেরোই আগস্ট স্মরণে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। এছাড়াও অতিথি হিসেবে গ্রন্থ আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন তাবারক হোসেন। পাঠ করা হয় সাহিত্য-সমালোচক এবং কালি ও কলম পত্রিকার সম্পাদক আবুল হাসনাতের লিখিত বক্তব্য। তাঁর লেখাটি পাঠ করেন জোবায়েদা লাবনী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাসের আবদুল্লাহ। উপন্যাসটি না পড়ার জন্য বক্তব্যের শুরুতেই দুঃখ প্রকাশ করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে আমি বই পড়ার সময় পাই না। তবে কাব্যগ্রন্থ হলে ওই ব্যস্ততার মাঝেও কিছুটা সময় বের করে পড়ে ফেলি। এ ক্ষেত্রে লেখকের উপন্যাসটি আমার পড়ার সুযোগ ঘটেনি। ভেবেছিলাম অন্য কারও আলোচনা শুনে আমি কিছু বলব। কিন্তু আমার আগের বক্তাদের আলোচনা থেকেও উপন্যাসটি সম্পর্কে বলার মতো কিছু খুঁজে পেলাম না। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, শোকাবহ এই আগস্ট মাসের আরেকটি তাৎপর্য হচ্ছে এই মাসটিতেই ব্রিটিশ শাসনের ১৯০ বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়েছিল এই উপমহাদেশ। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, উপন্যাসটির শুরুর ১৫০ পৃষ্ঠা এগিয়েছে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের মাধ্যমে। কল্পিত চরিত্রগুলোর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকালীন জীবনের নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কথা বলা হয়েছে। একাত্তরের ২৫ মার্চের ঘটনার মাধ্যমে মূলত উপন্যাসটিতে মুক্তিযুদ্ধ পর্বের শুরু হয়েছে। উঠে এসেছে পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের মর্মস্পর্শী বিবরণ। একাত্তরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়কালের ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। এছাড়া ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে লেখক তৎকালীন বিভিন্ন সংবাদেরও উদ্ধৃতি দিয়েছেন উপন্যাসটিতে। তবে কাহিনীর ভেতর একটি ঘটনায় আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। এক পাকিস্তানী ক্যাপ্টেনের এক বাঙালী মেয়েকে রক্ষা করা এবং তাকে গেরিলাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি এই অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। সাহিত্যকর্ম উপস্থাপনের ক্ষেত্রে কিছু অবিশ্বাস্য ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে লেখকের বিশেষ প্রয়াসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে লেখকের লেখায় কিছু ঘাটতি রয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে তাঁর প্রথম উপন্যাস লেখার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ববহ। শামসুজ্জামান খান বলেন, চরিত্র চিত্রণ ও ঘটনা ধারা বর্ণনায় লেখক ইতিহাসের সঙ্গে কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। বইটির ঘটনা ও আখ্যান বিশ্লেষণ করে আমি লেখকের সেই প্রয়াসকে অভিনন্দন জানাই। অনুভূতি প্রকাশ করে তাবারক হোসেন বলেন, এ জাতির সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধের স্বরূপ কিছুটা হলেও উন্মোচিত করার চেষ্টা করেছি উপন্যাসের মাধ্যমে। উপন্যাসের কাহিনীতে দেখা যায়, আজীম ভালবেসেছিল জোছনাকে কিন্তু জোছনা সেই ভালবাসার মর্যাদা রাখেনি। তবু আজীমের হৃদয়ে এখনও জ্বলজ্বল করছে সেই নারী। আবীরের মনের মানুষ ছিল ঝুমুর। সেও ভুল বুঝে আজ অন্যের ঘরণী। অর্পিতা, নাফিজ-আবীর এই দুজনের চোখে যে নাকি জলে ভেজা পদ্মফুলের মতোই সুন্দর। অপরূপা। পঁচিশে মার্চের কাল রাত্রিতে তাদের একজনকে হারায় অর্পিতা, অন্যজনকে মুক্তিযুদ্ধের সময় কাছে পায়। এছাড়া ব্যতিক্রমী দম্পতি জামাল-নির্মলা, সাহসী তরুণী নাবিলাহ্, চঞ্চল সালমাসহ আরও কয়েকজনের কথাও মূর্ত হয়ে উঠেছে এ উপন্যাসে। ভুটানে গ্যালারি কায়ার আর্ট ক্যাম্প ॥ ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের শিল্পীদের আর্ট ক্যাম্প। উত্তরার গ্যালারি কায়া দ্বিতীয়বারের মতো সাত দিনের এ আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করেছে। আর্ট ক্যাম্পে বাংলাদেশের শিল্পীরা ভুটানের মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশের মাঝে থেকে ছবি আঁকবার উপকরণ খুঁজবেন। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আর্ট ক্যাম্প চলবে বুধবার পর্যন্ত। তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির অভিযোগ ॥ ভারতীয় সিনেমা আমদানি নীতির বিপক্ষে এবার তীব্র প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। ভারতীয় সিনেমা আমদানি-রফতানি ইস্যুতে তথ্য মন্ত্রণালয় তাদের সঙ্গে ‘বিমাতাসুলভ’ আচরণ করছে বলে অভিযোগ করলেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। ‘কেলোর কীর্তি’ নামে ভারতীয় চলচ্চিত্র বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় ওই সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্কটেশ ফিল্মসকে ‘অস্বাভাবিক সহযোগিতা’ করেছে বলে অভিযোগ করেন সমিতির নেতারা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সমিতি নেতারা এই অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই ভারত-বাংলাদেশ সিনেমা আদান-প্রদান প্রক্রিয়া নিয়ে এত বিতর্ক উঠছে। সাফটা চুক্তির সুবিধাভোগী ভারতীয় চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে সিনেমা রফতানির নামে বাংলাদেশে আধিপত্য বিরাজ করতে চাইছে। সিনেমার প্রদর্শন ও পরিবেশন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রদর্শক-পরিবেশকদের কোন তোয়াক্কাই করতে চাইছে না তারা।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি সুদীপ্ত কুমার দাস। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সহসভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, সাধারণ সম্পাদক মিঞা আলাউদ্দিন প্রমুখ। সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশী সিনেমার বিপরীতে সমসংখ্যক ভারতীয় সিনেমা আমদানি করলেও নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেগুলো সেন্সর সনদপত্র পায় না। এমন এক সময়ে কাক্সিক্ষত সনদপত্র দেয়া হয়, যখন এর আগেই নানা মাধ্যমে ওইসব সিনেমাগুলো দর্শক দেখে ফেলেন। এতে করে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।’
×