ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আরও দুটি কূপ খনন

তিতাসের গ্যাস সরবরাহ না করায় মাসে লোকসান কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৬ জুলাই ২০১৬

তিতাসের গ্যাস সরবরাহ না করায় মাসে লোকসান কোটি টাকা

রিয়াজউদ্দিন জামি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ॥ তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রের আরও ২টি গ্যাস কূপের খনন কাজ শেষ হয়েছে। তবে খননকৃত কূপের গ্যাস এখন পর্যন্ত ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কূপ এলাকা থেকে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণকাজ না হওয়ায় গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। শহরতলীর নন্দনপুরে তিতাস গ্যাসের ২৫ ও ২৬ নং কূপ অবস্থিত। গত এপ্রিল মাসে তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রে ২৫ নং কূপের খনন কাজ শেষ হয়। আর গত মাসের শেষ দিকে সম্পন্ন হয় ২৬ নং কূপের খনন কাজ। এ ২টি কূপ থেকে প্রতিদিন অন্তত ৪৫/৫০ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্যাস গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। নিয়মমাফিক কূপের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্যাস গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ করা হয়। এবারই ব্যত্যয় ঘটেছে। কবে নাগাদ ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না। এ গ্যাস ক্ষেত্রের মালিহাতা থেকে খাতিহাতা ও সরাইল থেকে খাটিহাতা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ হলেই তা গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে। সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণের কাজই শেষ হয়নি। এ কাজ শেষ হতে কয়েক মাস লাগতে পারে বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৫নং কূপ থেকে অন্তত ২০/২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রীডে সরবরাহ করা যাবে। অন্যদিকে, ২৬নং কূপের রিজার্ভার ভাল পাওয়া গেছে বলে এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন। ডিরেক্টশনাল পদ্ধতিতে ৩ হাজার ৮শ’ ৪৮ মিটার মাটির তলদেশ অতিক্রম করেছে এ কূপের পাইপ লাইন। সংশ্লিষ্টরা আশা করেন, অন্তত ২৬/২৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এ কূপ থেকে মিলবে। সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড তাদের উৎপাদিত গ্যাস তিতাস, বাখরাবাদ, জালালাবাদ, পশ্চিমাঞ্চল ও জিটিসিএলের কাছে বিক্রি করে। প্রতিমিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ২৩ হাজার ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়। সে হিসেবে গত সাড়ে ৩ মাসে একটি কূপ থেকেই ৬ কোটি ১৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, ২৬নং কূপের গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় অন্তত এক কোটি টাকার ক্ষতি হয় গত এক মাসে। তিতাস ফিল্ডের চলমান ৪টি কূপ খনন শেষ ও গ্যাস সরবরাহ করা গেলে জাতীয় গ্যাস গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস ফিল্ডের ২৩টি কুপ। এর মধ্যে ২টি কূপের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমানে তিতাস ফিল্ড থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে ৫শ’ ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দেশের জ্বালানি চাহিদার ৩১ ভাগ চাহিদা পূরণ করছে তিতাস ফিল্ডের গ্যাস। বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির অর্থায়নে যে ৪টি কূপ খনন করার উদোগ নেয়া হয় এর মধ্যে প্রথম দুটি হলো তিতাসের ২৫ ও ২৬নং কূপ। অন্য দুটি কূপের খনন কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪শ’ ৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সবগুলোর খনন শেষ হলে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ১শ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। চীনের সিনোফ্যাস্ক ইন্টারন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন খনন কাজ করছে।
×