ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এমআরজির প্রতিবেদন

আদি আবাস থেকে উৎখাতের ঝুঁকিতে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৩ জুলাই ২০১৬

আদি আবাস থেকে উৎখাতের ঝুঁকিতে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী

হত্যা, জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও ভূমির দখল নিয়ে সহিংসতার দরুন আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলো তাদের আদি নিবাস থেকে উৎখাত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইথিওপিয়া থেকে ইরাক ও চীন পর্যন্ত সর্বত্র একই সমস্যা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ (এমআরজি) নামে একটি অধিকার গ্রুপের প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করা হয়েছে। খবর ইয়াহু নিউজের। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইথিওপিয়া থেকে চীন পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে যেসব সংঘাত চলছে তার ফলে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলো নিজেদের বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা এক সময় নিজেদের আদি নিবাস থেকে সম্পূর্ণ উচ্ছেদ হবে। বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ ছাড়াও সংঘাত অব্যাহত থাকায় এসব জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এমআরজির একজন পরিচালক কার্ল সোডেরবার্গ বলেন, সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে হামলা নতুন কোন বিষয় নয়। তবে বর্তমানে তাদের ওপর নিপীড়নের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। ‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড’স মাইনোরিটিস এ্যান্ড ইন্ডিজেনাস পিপল ২০১৬’ শীর্ষক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকে চলমান সংঘাতের কারণে ইয়াজিদি ও সাবেইন মান্দিন নামে দুটো প্রাচীন জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। প্রাচীন ধর্মীয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দুটো এখন তাদের আদি নিবাসস্থল থেকে উৎখাতের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় দেশটি প্রথম দফা গৃহযুদ্ধ কবলিত হয়। এরপর ২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্বঘোষিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার পর নতুন করে গৃহযুদ্ধের দিকে এগোয় ইরাক। আইএস ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ দখল করে নেয়। ইরাকে ইয়াজিদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গ্রুপগুলো তাদের নির্যাতনের শিকার হয়। ইয়াজিদিদের ওপর চালানো নিপীড়নকে জাতিসংঘ গত মাসে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে। ইয়াজিদি ছাড়াও ইরাকের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে টার্ক, সাবাক, খ্রীস্টান ও কাকই জাতিগোষ্ঠীর লোকজনও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সোডেরবার্গ বলেন, ‘পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি ঘটে চলেছে। আইএস হোক কিংবা বোকো হারামের (নাইজিরিয়ার সশস্ত্র ইসলামপন্থী গ্রুপ) মতো সশস্ত্র গ্রুপগুলো হোক কিংবা এসব দেশের সরকারগুলো হোক সংখ্যালঘুদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলোকে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিশানা করছে।’ তিনি আরও বলেন, বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণ বা কৃষিকাজের জন্য সংখ্যালঘু ও আদিবাসী লোকজন নিজেদের বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। ফলে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও নিজস্ব পরিচয় হুমকির মুখে পড়েছে।
×