ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাদারীপুরে ঈদ মেলা জমে উঠেছে

প্রকাশিত: ১৮:২৪, ২৮ জুন ২০১৬

মাদারীপুরে ঈদ মেলা জমে উঠেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ ঈদ মানে খুশি-ঈদ মানে আনন্দ। ঘোষণা দিয়ে মাদারীপুর অঞ্চলে ঈদের মেলার আয়োজন করা হয় না। এ ধরণের মেলার কোন কমিটিও থাকে না। শুধু আনন্দ-উল্লাস করার জন্য ঈদ মেলা হয়ে থাকে। খোলা জায়গায় এক শ্রেণির উৎসুক দোকানী পসরা সাজিয়ে বসে। বাঁশ-খুঁটি পুঁতে তাবু বা পলিথিন টাঙ্গিয়ে রং বে-রঙের খেলনা সাজিয়ে ঈদে বেড়াতে আসা ছোট্ট-ছোট্ট শিশু ছেলে-মেয়েদের আকৃষ্ট করে। বাঁশি আর ঝুন্ঝুনি বাজিয়ে মানুষকে মেলায় আসার আহবান জানানো হয়। এভাবেই ভিড় বাড়তে থাকে এবং শুরু হয় লোক সমাগম। মানুষের কলরবে এবং নানা ধরণের বাঁশি, ভেঁপু আর ঝুন্ঝুনির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় ঘুরতে আসা সকল শ্রেণির মানূষ নানা পণ্য কেনা-কাটা করে। পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ও আতœীয়-স্বজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় আর কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমাগম ঘটে ঈদ মেলায়। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাব বিনিময় করে। এ অঞ্চলে মেলাকে নানা নামে অভিহিত করা হয়। মেলা কোথাও গোলইয়া কোথাও আড়ং কোথাও বান্নি নামে ডাকা হয়ে থাকে। তবে যে নামেই ডাকা হোক মেলা বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। মেলা ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাঙালির প্রাণের উৎসব। যা ভ্রাতৃত্বের সেতু বন্ধন তৈরি করে বাঙালিকে অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। অনেকে মেলাকে ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে বিচার করতে চায়। কেউ-কেউ মেলাকে ‘হিন্দুয়ানি’ আচার-অনুষ্ঠান বলে থাকে। কিন্তু এ কথার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মাদারীপুর জেলা বিভিন্ন স্থানের মেলায় এক একটি মেলায় ৫০ থেকে ১শ দোকান বসে বিভিন্ন পসরা নিয়ে। মেলা উপলক্ষে বসে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকানও। যেমন, খেলনার দোকান, চুড়ি-বয়লা, মৃৎ সামগ্রী, হরেক রকম বাঁশি, ছোটদের পোষাক, প্রসাধনী, মিষ্টির দোকান, মাটির খেলনার দোকান। বিশেষ করে মেলা উপলক্ষে জিলাপির দোকান ভিন্ন স্বাদ এনে দেয়। এখনো গ্রামীণ জনপদের বাঙালিদের কাছে মেলার জিলাপীর আবেদন কমেনি। মেলায় ঘুরতে আসে ছোট-ছোট শিশু, কিশোর-কিশোরী, মধ্য বয়স্ক নারী পুরুষ সবাই। মনের আনন্দে সবাই হৈ হুল্লোর করে থাকে।
×