ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান ও ভারত উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে ॥ সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কোন্নয়নের পথে বাধা ॥ নরেন্দ্র মোদি

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৯ মে ২০১৬

সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কোন্নয়নের পথে বাধা ॥ নরেন্দ্র মোদি

ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, কিন্তু সীমাহীন সন্ত্রাসের সমস্যা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ সীমিত করে দিচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন। জুনের প্রথম দিকে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে মোদির বৈঠকের প্রাক্কালে শুক্রবার এটি প্রকাশিত হলো। এতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগ বিশেষত লাহোরে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়। খবর- ডন অনলাইনের। মোদি বলেন, প্রতিবেশীরা যাতে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে, সেই লক্ষ্যে আমার সরকারের সক্রিয় কর্মসূচী এর দায়িত্ব নেয়া ঠিক প্রথম দিনই শুরু হয়। তিনি তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দিল্লীতে সার্ক নেতাকেই আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করছিলেন। এতে নওয়াজ শরীফ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি বলেছি, আমার প্রতিবেশীদের জন্য যে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি, আমি ভারতের জন্য সেই ভবিষ্যতই কামনা করি। আমার লাহোর সফরে এ বিশ্বাসই স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। মোদি বলেন, আমি সব সময়েই একমত পোষণ করে এসেছি যে, ভারত ও পাকিস্তানের একে অপরের সঙ্গে লড়াই করার পরিবর্তে একযোগে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। আমরা প্রত্যাশা করি, পাকিস্তান এর ভূমিকা পালন করবে। তবে তিনি সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে কোন আপোস হতে পারে না বলে জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ কেবল তা হলেই বন্ধ হতে পারে, যদি এর প্রতি সমর্থন রাষ্ট্রীয় বা অরাষ্ট্রীয় সব ধরনের সমর্থন দান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়। সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের শাস্তি দেয়ার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের ব্যর্থতা আমাদের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতিকে সীমিত করে দিচ্ছে। মোদির মতে, যদি পাকিস্তান সন্ত্রাস দমনের পথে তার ভাষায় স্ব-আরোপিত বাধা দূর করে, তা হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিরাট উন্নতি ঘটতে পারে। তিনি বলেন, আমরা প্রথম পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে উভয়পক্ষকেই যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে। চীন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মোদি সতর্কতার পরিচয় দেন। ভারত এখনও একজোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করতে চায়, যদিও সে তার ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে থাকবে না বলেন তিনি আভাস দেন। তিনি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে এমন কিছু ইঙ্গিত করেন, যা ওয়াশিংটনে উৎসাহের সৃষ্টি করতে পারে। মোদি বলেন, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ঘটনাবলীতে ৭,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলের দেশ ভারতের এক স্বাভাবিক স্বার্থ জড়িত রয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। ভারত মহাসাগরে ভারতই এক নিরাপত্তা প্রদানকারী রাষ্ট্র। আমরা যেহেতু এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে এমন যে কোন ঘটনার প্রতি খুবই সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। তিনি বলেন, যোগাযোগ ও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানব প্রগতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ভাল করতে আমাদের অঞ্চল ও এর বাইরের অনেক দেশের সঙ্গে আলোচনা করছি। মেরিটাইম সিল্ক রোড উদ্যোগ চীনেরই এক উদ্যোগ। আমরা মনে করি, এ উদ্যোগের বিষয়ে বিশ্বের জন্য চীনের কাছ থেকে আরও কিছু জানা দরকার। মোদিকে বিশেষত ভারত বিরাট সংখ্যক মুসলিমের বাস হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী কথাবার্তা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অনুরোধ করা হয়। তিনি সেই অনুরোধ এড়িয়ে যান। এসব ইস্যু গণতান্ত্রিক আলোচনারই অংশ বলে তিনি মন্তব্য করেন। হিন্দু দলগুলো ট্রাম্পের সাফল্য কামনা করে ধর্মীয় প্রার্থনা সভা করে।
×