ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেক্সপিয়ারের অজানা ১০

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

শেক্সপিয়ারের অজানা ১০

জন্মদিন কবে শেক্সপিয়ারের জন্মদিনের কোন প্রকৃত রেকর্ড কারও কাছে নেই। তবে ১৫৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল ছিল তার খ্রিস্টীয়করণের দিন। তখনকার সময়ে জন্মের কয়েকদিন পরেই শিশুদের খ্রিস্টীয়করণ বা ব্যাপটাইজড করা হতো। যে কারণে ধারণা করা হয়, তার জন্মদিন ছিল ১৫৬৪ সালের ২৩ এপ্রিল। এতে করে তার জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন আসলে বছরের একই দিন। অল্প বয়সে বিয়ে তিনি যখন এ্যান হ্যাথওয়েকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। অথচ এ্যানের বয়স ছিল তার থেকে ৮ বছর বেশি। তখনকার দিনে নিজের চেয়ে বেশি বয়স্ক কাউকে বিয়ে করাটা বিতর্কিত হওয়ার কথা, তার উপর বিয়ের সময় এ্যান ছিলেন গর্ভবতী। তাদের প্রথম সন্তান সুজানার জন্ম হয় বিয়ের ৬ মাসের মাথায়। যখন তিনি সন্তানহারা প্রথম সন্তান সুজানার জন্মের পর ১৫৮৫ সালে এ্যান হ্যাথওয়ে জুডিথ এবং হ্যামনেট নামের যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ১৫৯৬ সালের আগস্ট মাসে মাত্র ১১ বছর বয়সে হ্যামনেট মারা যায়। বংশের বাতি নেই শেক্সপিয়ারের প্রথম কন্যা সন্তান সুজানা ১৬০৮ সালে একটাই কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। নাম এলিজাবেথ। এলিজাবেথ বড় হয়ে দুইবার বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু একবারও কোন সন্তান জন্ম দিতে পারেননি। শেক্সপিয়ারের আরেক কন্যা জুডিথ তিন পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু এরা প্রত্যেকেই বিয়ে করার আগেই মারা যান। শেক্সপিয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্টের দেয়া তথ্য মতে, তার কোন সরাসরি উত্তরসূরি নেই, তবে তার বোন জোয়ানের সন্তানরা হয়তো জীবিত আছেন। হারানো বছর যে দুইবার তিনি নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন, কেউ জানে না তিনি আসলে ঠিক কি করেছেন ওই সময়টায়। প্রথমবার ১৫৭৮ থেকে ১৫৮২ সাল পর্যন্ত, দ্বিতীয়বার ১৫৮৫ থেকে ১৫৯২ সাল পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এর উপরে অনেকে অনেক তত্ত্ব দিয়েছেন। কারও কারও মতে, ঐ সময়ে তিনি ছিলেন স্কুল শিক্ষক, কশাই, উকিলের মুহুরি, সেনাসদস্য ইত্যাদি। তবে এসব দাবির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাবা ছিলেন বিয়ারের পরীক্ষক শেক্সপিয়ারের বাবার নাম জন শেক্সপিয়ার, মায়ের নাম ম্যারি আর্ডেন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের অষ্টম সন্তান। তার বাবা কৃষিকাজ, হাতমোজা বা দস্তানা বিক্রি, চামড়ার ব্যবসা থেকে শুরু“করে অনেক ধরনের কাজ করেছেন। তিনি নাকি মদের দোকানে বিয়ার টেস্টারের কাজও করেছেন। বিয়ারের স্বাদ নিয়ে তিনি এগুলোকে পরীক্ষা করতেন। পরিবারে শিক্ষার হার শোচনীয় ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে শেক্সপিয়ারের অবদান শীর্ষস্থানীয়। অথচ তার পরিবারের বেশিরভাগ মানুষই ছিলেন অশিক্ষিত। তার বাবা-মাও লেখাপড়া জানতেন না, এমনকি স্ত্রী সন্তানরাও লেখা এবং পড়া কোনটাই জানতেন না। প্রাত্যহিক বুলি শেক্সপিয়ার ইংরেজী ভাষায় তিন হাজার নতুন শব্দের প্রচলন করেন। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রাত্যহিক ব্যবহৃত প্রবচন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, তার মৃত্যুর ৪০০ বছর পরেও সেই সব প্রবচন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। ব্রিটিশ কাউন্সিল জানিয়েছে, শেক্সপিয়ার না জন্মালে ‘হার্ট অব গোল্ড’, ‘ওয়াইল্ড গুজ চেজ’, ‘ব্রেক দ্য আইস’ কিংবা ‘লাভ ইজ ব্লাইন্ড’ ইত্যাদি প্রবচন তারা বলতে পারতেন না। এ সব তার সৃষ্টি। ব্যবসায়ী বটে! শেক্সপিয়ার জীবদ্দশায় ৩৭টি নাটক লিখেছেন। অনেকেই হয়তো জানেন না তিনি একজন ভাল ব্যবসায়ী ছিলেন। এটা করে তিনি কিছু বিষয় সম্পত্তি করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে জন্মস্থান স্ট্রেটফোর্ড-আপন-এ্যাভানে আবাদি জমি সহকারে নিউপ্যালেস নামের একটি কটেজ। তাছাড়া গ্লোব থিয়েটার এবং ব্ল্যাকফ্রায়ার থিয়েটারে তার কিছু শেয়ারও ছিল। নাম কি শেক্সপিয়ারই শেক্সপিয়ারের নাম একেক রেকর্ডে একেক রকমভাবে পাওয়া যায়। তার এখনকার যে নামটা আমরা ব্যবহার করি সেটা ছাড়াও রেকর্ডে দেখা যায় তার নাম ছিল ‘শেপিয়ার’ এবং ‘শ্যাকসবার্ড’। হিস্টোরি ডট কম এর তথ্য মতে, এখন তার যে নামটা আমরা ব্যবহার করি শেক্সপিয়ার নিজে কখনও সেভাবে লিখে স্বাক্ষর করেননি কোথাও।
×