ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

তৃতীয় ঢাকা আর্ট সামিট শুরু হচ্ছে কাল

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

তৃতীয় ঢাকা আর্ট সামিট শুরু হচ্ছে কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ এশীয় আর্টের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ঢাকা আর্ট সামিট-২০১৬’ শুরু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় আয়োজিত এ সামিটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০০ আর্টিস্ট, কিউরেটর, লেখক, আর্ট প্রফেশনাল এবং কালেক্টর অংশগ্রহণ করবেন। এর মধ্যে ৭০ জনের বেশি বাংলাদেশী রয়েছেন। শিল্পকলা একাডেমির সহায়তায় তৃতীয়বারের মতো এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন। একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে সকাল ১০টায় চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। প্রদর্শনী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেনÑ সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও কো-ফাউন্ডার নাদিয়া সামদানি এবং কো-ফাউন্ডার রাজিব সামদানি, গোল্ডেন হারভেস্টের চীফ অপারেটিং অফিসার জাকির ইবনে হাই ও চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামান। নাদিয়া সামদানি বলেন, দুই বছর ধরে এ সামিট আয়োজন করা হয়েছে। ওই দুই বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ঢাকা আর্ট সামিটের তৃতীয় সংস্করণের আয়োজন করা হয়েছে। তবে সময়ের দাবি পূরণে বেশকিছু নতুনত্ব আছে এবারের সামিটে। নতুন মাত্রা পাওয়া সেসব আয়োজন শিল্পবোদ্ধাদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষিত হবে। এবারের সামিটে ‘রিওয়াইন্ড’ বিভাগে ১৯৮০ সালের আগের দক্ষিণ এশীয় শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হবে। আরেকটি বিভাগে (ক্রিটিক্যাল রাইটিং) প্রায় ২৫ জন শিল্পবিষয়ক লেখক দক্ষিণ এশীয় শিল্পবিষয়ক পরীক্ষামূলক লেখা নিয়ে গবেষণা করবেন। সামিটের আরেকটি আকর্ষণ হলো, স্পীকার প্যানেলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৫টি দেশের মোট ৫০ জন স্পীকার তাদের অভিজ্ঞতা সামিটে আসা দর্শকদের কাছে ব্যক্ত করবেন। অন্যবারের মতো এবারও সামদানি আর্ট এ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে। পুরস্কার হিসেবে একজন উদীয়মান বাংলাদেশী শিল্পী পাবেন লন্ডনের ডেলফিনা ফাউন্ডেশনে তিন মাসের আবাসিক কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার সুযোগ। আর্ট সামিটে আরও থাকছে বাংলাদেশী শিল্পীদের নিয়ে ‘আত্ম অন্বেষণ’ নামের একটি প্রদর্শনী। এর কিউরেটর হিসেবে আছেন বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামান। দেশ-বিদেশের ছয় শতাধিক নবীন-প্রবীণ শিল্পীর শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে। থাকছে ১৭টি একক প্রদর্শনী। পাশাপাশি থাকছে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য আর্ট গ্যালারির অংশগ্রহণ। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ঢাকা আর্ট সামিটে বিশ্বের নামকরা ৮০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা থাকছে। যেসব প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করছে তাদের মধ্যে অন্যতম হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ফ্রান্সের সেন্টার পম্পিদৌ, রকফেলার ফাউন্ডেশন, নরওয়েজিয়ান মিনিস্ট্রি অব ফরেন এ্যাফেয়ার্স ও সুইস আর্টস কাউন্সিল। এছাড়াও বিভিন্ন খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক জাদুঘর টেইট মডার্ন, নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট, সলোমন আর গুগ্যেনহাইম, রুবিন মিউজিয়াম এবং কুন্সস্থালে জুরিখ তাদের কিউরেটরদের এবারের ঢাকা আর্ট সামিটে একটি আর্ট প্রোগ্রাম ডিজাইনে সহযোগিতার জন্য পাঠিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবার আর্ট সামিটে একটি দীর্ঘ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ১৩ জন শিল্পীর নিজস্ব আঁকা ছবি প্রদর্শিত হবে। তাদের মধ্য থেকে একজনকে সামদানি আর্ট এ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হবে। প্রদর্শনীতে যেসব শিল্পীর ছবি প্রদর্শিত হবে তারা হলেন- আসিত মিত্র, আতিশ সাহা, ফারজানা আহমেদ উর্মি, গাজী নাফিস আহমেদ, পলাশ ভট্টাচার্য, রফিকুল শুভ, রাসেল চৌধুরী, রুপম রায়, সালমা আবেদীন প্রীতি, শামসুল আলম হেলাল, শিমুল সাহা, সুমন আহমেদ ও জিহান করিম। জানানো হয়, ঢাকা আর্ট সামিট নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন করতে আসা ৫০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক সাংবাদিক এ সময় উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া সারাবিশ্বের দর্শকের জন্য ব্লুবার্গ টিভি এ আয়োজন নিয়ে ৩০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, সারাবিশ্ব দক্ষিণ এশিয়ান আর্ট নিয়ে আগ্রহী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মিউজিয়ামগুলোও দক্ষিণ এশিয়ান আর্টের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া শিল্পের অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে অনেক প্রতিভা অনাবিষ্কৃত রয়ে যায়। দক্ষিণ এশীয় আর্টের কোন সুনির্দিষ্ট প্লাটফর্ম নেই, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এসে একসঙ্গে উপভোগ করতে পারে। আমরা ঢাকা আর্ট সামিট এ জন্যই শুরু করেছি, যাতে দক্ষিণ এশিয় আর্টকে বিশ্বের মঞ্চে পরিচিত করিয়ে একে একটি যথাযোগ্য স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। বাংলাদেশী স্থপতিদের বিশ্বের দরবারে পরিচিত করতে তাদের নিয়ে একটি প্রদর্শনীও থাকছে সামিটের আলাদা একটি কর্নারে। যেখানে বাংলাদেশের ১৭ জন স্থপতির করা বিভিন্ন ডিজাইন স্থান পাবে। সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। পাঠশালায় ‘ওয়েপন কান্ট কিল’ চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন ॥ পেইন্টিং, স্কাল্পচার, পারফর্মেন্স অব আর্ট এবং ফটোগ্রাফি নিয়ে ‘ওয়েপন কান্ট কিল’ নামের চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন হয় রাজধানীর পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে বুধবার সন্ধ্যায়। দাগি আর্ট গ্যারেজের ৭ জন স্ক্রিনশিল্পীর চিত্রকর্ম নিয়ে আট দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে পাঠশালা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাঠশালার ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর তানজিন ওহাব ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রধান তানভীর মুরাদ তপুসহ কয়েকজন বিভাগীয় সদস্য। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ প্রদর্শনীর ৭ জন তরুণ শিল্পী এসেছেন বিভিন্ন পটভূমি থেকে। এটি তাদের প্রথম প্রদর্শনী। পাঠশালা সবসময় বিশ্বাস করে জ্ঞানের একাধিক শাখা আন্তঃবিষয়ক নতুন অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করে। তাই আমরা আনন্দিত পাঠশালা প্রাঙ্গণে দাগি শিল্পীদের কাজ প্রদর্শনের সুযোগ করে দিতে পারে। প্রদর্শনী আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
×