ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক অন্ন পরিবার আজ একান্নে পরিণত

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬

এক অন্ন পরিবার আজ একান্নে পরিণত

ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন, যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ’Ñ জানি না কবে কে কখন কেন এবং কোন উদ্দেশ্যে এই বাণী লিখেছিলেন। তবে যখন যে উদ্দেশ্যেই লেখেন এই বাণী, তার পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ বা উদ্দেশ্য লুকায়িত ছিল। রক্তের বাঁধন ভাই। বাঁধন ছিঁড়ে হারিয়ে যায় কোথায়! কত কষ্টের, কত বেদনার। আর এই বেদনার জন্য নারীকে দায়ী করেই লেখা হয়েছিল এই বাণী। না! রক্তের বাঁধন ছিন্নের জন্য শুধুই নারী দায়ী, তা আমি বলব না। তবে সময়ের প্রয়োজনে নারীকে অনেক কিছুরই শিকার হতে হয়। একান্নবর্তী শব্দটির অর্থ এক হাঁড়িতে একই অন্নে বেঁচে থাকা। একান্নবর্তী পরিবার আমাদের বাঙালী সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। একান্নবর্তী পরিবার নিয়ে কতই না রচিত হয়েছে নাটক, গান, কবিতা আর সিনেমাও। বাবার কয়েক সন্তান তাদের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকা খাওয়ার আনন্দই একান্নবর্তী। সাধারণত একান্নবর্তী পরিবারের কর্তা হন দাদা বা দাদু। বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ঢেকে রাখেন তিনি। পরিবারের ভালমন্দ বিষয়ে যে কোন পরামর্শ সমস্যার সমাধান দিয়েছেন এই কর্তা ব্যক্তি। তার পরামর্শ এবং খবরদারি অনেকেই হয়ত মেনেছেন, কেউ মানেননি। এতেই সৃষ্টি হয় পারিবারিক বিরোধের। আর এ থেকেই ভাঙন ধরে একান্নবর্তীর। একান্নবর্তী পরিবার এখন সুদূর অতীত। শহর তো নয়ই, গ্রামেও খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং বলা যেতে পারে, বাঙালীর গৌরব এই একান্নবর্তী পরিবার এখন পরিণত হয়েছে ৫১ পরিবারে। সময়ের বিবর্তনে অন্যের নয়, নিজের গল্পই করি। রংপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে মাত্র সোয়া চার শতক জমিতে আমার পৈত্রিক বাড়ি। আমরা পাঁচ ভাই। মা আছেন। যিনি আমাদের ‘মাথার মুকুট’। আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে স্ত্রী সন্তান। বাবা গত হয়েছেন ’৯৯ সালে। দীর্ঘকাল আমরা ছিলাম একান্নেই। কিন্তু ছোট্ট এ বাড়িতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আমার ছোটজন আলাদা স্থানে জায়গা কিনে বাড়ি বানালো। রক্তের বন্ধন ছিন্ন করে বিদায় নিল সে। আমার বড়জন ২০০৬ সাল পর্যন্ত তখন তার বিয়ের বয়স প্রায় ৩০ বছর। তখন পর্যন্তও আমরা চার ভাই একান্নেই। ২০০৭ সালে সময়ের প্রয়োজনে একই বাড়িতে থেকেও বড়জনের ভিন্ন হলো হাঁড়ি, ছিন্ন হলো আরেকটি বন্ধন। Ñমানিক সরকার মানিক রংপুর থেকে
×