ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ ঘুরে এলাম দারুচিনি দ্বীপ

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ ঘুরে এলাম দারুচিনি দ্বীপ

টেকনাফের কিরুনতলী জাহাজঘাট। জাহাজে আমাদের ভ্রমণ দল। নাফনদীতে জাহাজ চলছে। এক পাশে পাড় ঘেঁষে সবুজে বর্ণিল উঁচু উঁচু পাহাড়। নদী পেরিয়ে সাগর। এরপর দূর থেকে কেয়া বনের ঝোপের দেখা মিলবে। যেখানে শান্ত সাগরের নীল জলরাশি, তাতে চাঁদনি রাতে জ্যোৎস্নার অবগাহন সঙ্গে সঙ্গে, আর চাঁদের সঙ্গে আকাশ ও সাগরের ফিসফিসানি শোনা যাবে। বলার আর অপেক্ষা রাখে না আমাদের লক্ষ্য কি? এ যে স্বপ্নের দ্বীপ, প্রবাল দ্বীপ, দারুচিনি দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। আট বর্গ কিলোমিটারের বেশি আয়তনের এ দ্বীপটি যেন একটি স্বর্গরাজ্য। সৃষ্টির অপার সৌন্দর্য একে না দেখলে বোঝা যাবে না। স্বপ্নের দ্বীপে পা দিতেই মনে পড়ছিল যেন ‘চাঁদের মাটিতে প্রথম পদধুলি।’ হোটেলে দেরি না করেই সমুদ্রস্তানে একবারে নীল পানিতে নেমে পড়লাম। নির্মলেন্দু গুণের ‘ঐক্যবদ্ধ জল’ কবিতাটি মনে পড়ল। ‘পাহাড় হলো অহংকারী শিখর হিমাদ্রির/ সাগর সদা গতিচঞ্চল প্রতীক পৃথিবীর/ সইতে জানে, বইতে জানে সারা জগৎময়/ সমুদ্র তাই ঐক্যবদ্ধ, পাহাড় ততো নয়’। আর তাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের কৃষি রসায়ন বিভাগের শিক্ষা সফরে শিক্ষার্থীদের চাওয়া ছিল কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। অবশ্য সবাই সময় পেলে সাগরেই একটু ঢু মারতে চান। সাগর প্রথম না হলেও ‘দারুচিনি’ দ্বীপ আমার কাছে প্রথম। দেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের সিনেমাটি মাথায় ঘুরপাক খেত। আর ৬৫ জন বন্ধু-বান্ধব মিলে ভ্রমণের মজাটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। যাই হোক, মূল দ্বীপটির তিনটি খ- ছিল। স্থানীয় ভাষায় সেগুলো ছোট ডিয়া, মাঝের ডিয়া ও ছেঁড়া ডিয়া (দ্বীপ) বলা হয়। জ্যোৎস্থাস্তাত রাতে দ্বীপের অদ্ভুত অচেনা সৌন্দর্য হয়ত অনেককেই মিস করেছিল। সন্ধ্যায় দ্বীপের চারদিকে ঘোরার সে মুহূর্ত আজও মনে দাগ কাটে। রাতে সমুদ্রের সেই গর্জন মনকে উদাসীন করে দেয়। রাতের বার-বি-কিউ পার্টিটা যেন ক্যাম্পাসের থেকে একটু আলাদাই ছিল! পরদিন ট্রলারে করে ছেঁড়া দ্বীপ ঘুরে এলাম। কক্সবাজার ফিরে সমুদ্র দেখা, সাগরে সূর্যাস্ত দেখা কিংবা রাতে দরিয়ার গর্জনের সঙ্গে গান গাওয়াটা এ যাত্রায় নতুন কিছু ছিল না। টানা পাঁচ দিনের ট্রেন, বাস, জাহাজ আর নৌকা ভ্রমণের মজাটা একাকার হয়ে গিয়েছিল। সর্বোপরি আমাদের আনন্দভ্রমণ ও স্বপ্নপুরী দ্বীপের কথা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মনের মণি-কোঠায় ছুঁয়ে থাকবে। শাহীদুজ্জামান সাগর
×