নিজস্ব সংবাদদাতা, সাভার ॥ আশুলিয়া থানাধীন ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ডিইপিজেড) সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটির এক-তৃতীয়াংশ হকার্সদের দখলে। প্রতিদিন অর্ধলক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী চক্র। আর এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রতিদিন সেখান দিয়ে যাতায়াতকারী অগণিত সাধারণ মানুষ আর পরিবহন যাত্রীরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক, উত্তরবঙ্গে যাতায়াতরত হাজার হাজার পরিবহন যাত্রী আর ডিইপিজেড সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল দুর্বিসহ করে তুলেছে। এ দুর্ভোগের মূলে রয়েছে ডিইপিজেড সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটির এক-তৃতীয়াংশ হকার্সদের দখলে থাকা। এর মাধ্যমে প্রভাবশালী চক্রটি এখন ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হয়ে গেছে। মহাসড়কের এক-তৃতীয়াংশ স্থান দখল করে ৫ শতাধিক দোকান গড়ে উঠেছে। প্রতিদিনের ভিত্তিতে দোকানগুলো থেকে ‘ভাড়া’ হিসেবে ‘চাঁদা’ আদায় করা হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিটি দোকান থেকে ‘পজিশন’ বাবদ ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করা হয়।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল ব্যস্ততম এলাকা । এখানে সহস্রাধিক শিল্প কারখানা রয়েছে, আর বসবাস করছে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। এ মহাসড়কে প্রতি মিনিটে ৩০ থেকে ৪০টি ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করছে। ডিইপিজেডের দু’টি জোনে শতাধিক শিল্প-কারখানা রয়েছে যেখানে দু’লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এদের সকলেই সকাল ৬টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ডিইপিজেড সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।
ডিইপিজেডসহ আশপাশের শিল্প-কারখানার শ্রমিকরা কর্মস্থলে যাওয়া ও বাসায় ফেরার পথে দৈনন্দিন বিড়ম্বনার শিকার হয়। ফুটপাথের দোকানগুলো মহাসড়কটির ফোর লেনের একটি লেন দখল করে আছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত যানবাহনগুলো যানজটের শিকার হচ্ছে। পথচারীদের চলাচলে বিঘœ ঘটছে। চুরি, ছিনতাই ও পকেটমারদের সুবিধা বেড়েছে। ঘটছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। শ্রমিকরা মাস শেষে বেতন নিয়ে বাসায় ফেরার পথে পকেটমারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারাচ্ছে। ঢাকা-উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনগুলো যাতায়াতকালে ডিইপিজেড এলাকায় দীর্ঘ সময় যানজটে পড়ে থাকতে হচ্ছে। আর চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র মহাসড়কের জায়গা দখল করে ফুটপাথ বসানো ও এখান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আদায়কৃত টাকার মধ্যে দু’ভাগ আদায়কারীরা ও একভাগ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি পেয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ বিভাগের সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানায়, পুলিশকে অবগত করে সড়ক ও জনপদের সকল অবৈধভাবে দখলকৃত ফুটপাথ তুলে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ জানায়, সড়ক ও জনপদের পক্ষ থেকে অবহিত করা হলে মহাসড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দ্বিতীয় বিদ্যুত
কেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে
স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ প্রায় ১১শ’ ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আমনুরাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দ্বিতীয় বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে চলেছে। এখান থেকে ১০০ (এক শত) মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হবে। চলমান বছরের ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে দ্রুত কাজ এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুত বিভাগের সহযোগিতায় ১০ একর জমির ওপর কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে চিনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হুবেই ১৫ মাস মেয়াদে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। ভূমি উন্নয়ন শেষে জুলাই মাস থেকে মূল কাজ শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে একই এলাকায় (আমনুরা) রেন্টাল পদ্ধতিতে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহে অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে অনেক আগে থেকেই।
নির্মাণাধীন দ্বিতয়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হবে ফার্নেস তেল দ্বারা। পূর্বের নির্মাণ করা রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রটিও ফার্নেস তেল ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে।
বিদ্যুত বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছে নতুন কেন্দ্রটি চালু হওয়া মাত্র এই অঞ্চলে এক দিগন্তকারী উন্নয়নের সূচনা হবে। বিশেষ করে পুরো বরেন্দ্র অঞ্চল সেচ বৃদ্ধিসহ নানান ছোট ছোট শিল্প কারখানা দারুণভাবে উপকৃত হবে। বৃদ্ধি পাবে কৃষি উৎপাদন। লো-ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান হবে। পাশাপাশি বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে। ইতোমধ্যেই নির্মাণাধীন অবস্থায় বেশ কিছু মানুষ নতুনভাবে খ-কালীন কাজ পেয়েছে। বিশাল পরিমাণ লেবার স্থায়ী কর্মসংস্থানের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ আগামী বছরের প্রথম দিকে শেষ হওয়া মাত্র নির্মাণকালীন এলাকার বহু মানুষের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
এ ছাড়াও এটি পরিচালনায় এই অঞ্চলের বেশ কিছু দক্ষ মানুষের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে স্থানীয় এক বিদ্যুত প্রকৌশলী জানিয়েছেন। কোন ধরনের বিরতি ছাড়া জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলায় নতুন বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হবে বলে জানা গেছে।