ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাল খেলেই জিততে চান আমলা

প্রকাশিত: ০৭:১০, ৩০ জুলাই ২০১৫

ভাল খেলেই জিততে চান আমলা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের সামর্থ্যরে পুরোটা এখনও দেখাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা। চট্টগ্রামে ভালভাবে শুরুর পরেও পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। কিন্তু এখন সামর্থ্য অনুসারে নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলতে মুখিয়ে আছে প্রোটিয়ারা। সেটা করতে পারলে অবশ্যই জয় পাওয়া সম্ভব বলে দাবি করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হাশিম আমলা। আপাতত মিরপুরে বৃষ্টি না হওয়াতে সন্তুষ্টি জানিয়ে আমলা আশা প্রকাশ করলেন পুরো ৫ দিনই মাঠে ব্যাট-বলের লড়াই হবে এবার। বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সিরিজের শেষ ম্যাচ। প্রথম টেস্ট ড্র হওয়াতে এবার দ্বিতীয় ম্যাচই হবে সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘অবশ্যই উভয় দলের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বাংলাদেশে এসেছিলাম যত সম্ভব ম্যাচ জয়ের আশা নিয়ে। অবশ্যই প্রথম টেস্ট ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার কারণে এখন এই টেস্ট অনেক বেশি গুরুত্ব সৃষ্টি করেছে। আশা করছি আমরা ভালভাবে শুরু করতে পারলে এবং ভাল ক্রিকেট খেলতে পারলে এ টেস্টে জয় পাওয়ার মতো অবস্থানে যেতে পারব।’ কিন্তু টেস্ট ম্যাচ কখনও নকআউট ম্যাচে পরিণত হয় না। সিরিজ জয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলেই শুধু নয়, আমলা জানালে জেতার জন্যই এসেছেন তারা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যম্ভাবী জয়ের ম্যাচ এটি। আমি মনে করি না টেস্ট ক্রিকেটে কোন নকআউটের বিষয় আছে। অবশ্যই আমরা এখানে জিততেই এসেছি। আমরা গত টেস্টের প্রথম দুই সেশনে ভালভাবেই শুরু করেছিলাম। কিন্তু পরের দু’দিন যা হয়েছে সেটা ছিল এক ধরনের বিপর্যয় হয়েছে। যদিও অনেক বৃষ্টি ছিল, কিন্তু আমরা এর মধ্যেই অনেক অনুশীলন করতে পেরেছি। আর এখন ভাল লাগছে যে আপাতত আবহাওয়াটা বেশ ভালই মনে হচ্ছে। আশা করছি পুরো ৫ দিনই পাব। এটা আমাদের ওপর নির্ভর করছে যে কতটা ভাল করার চেষ্টা করতে পারব। অবশ্যই আমরা এখন পর্যন্ত নিজেদের সবটাই দেখাতে পারিনি। অনেক ভাল হবে যদি এ টেস্ট ম্যাচের শুরু থেকেই আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারি।’ আমলা নিজে ইনিংস উদ্বোধন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু দুই তরুণ ওপেনার ডিন এলগার ও স্টিয়ান ভ্যান জাইলের প্রশংসা করলেন তিনি। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘স্টিয়ান ও ডিন অসাধারণ ভাল করেছে যে দুই ইনিংস আমরা পেয়েছিলাম। আমরা বেশ উদ্দীপ্ত এবং চমৎকার বিষয় হচ্ছে সেটা আমাদের জন্য কার্যকর হয়েছিল। ব্যাটিং করাটাই আসল এবং টেস্ট ক্রিকেটে ইনিংস উদ্বোধন ছেড়ে দেয়াটা মনে হয় সবচেয়ে কঠিন কাজ। মাঝে মাঝে দীর্ঘক্ষণ ফিল্ডিং করেই শেষ হয়ে যায় এবং হঠাৎ করে গুটিয়ে গিয়ে দশ মিনিটের মধ্যেই বিশ্বের সেরা বোলারকে মোকাবেলার জন্য নামতে হয়। সেটা কোনভাবেই সহজ নয়। আমি এই ব্যাটসম্যানদের প্রতি অনেক সম্মান দেখাই এবং এই দুটি ছেলে এই মুহূর্তে অনেক ভাল করছে। কিন্তু শুধু সময়টাই বলে দেবে এবং আমরা অবশ্যই তাদের সময় দেব টেস্ট ক্রিকেটে থিতু হওয়ার জন্য। যেভাবে তারা শুরু করেছে সেটা যথেষ্ট ইতিবাচক এবং আস্থা দিয়েছে।’ বলা হচ্ছে চট্টগ্রামের চেয়ে মিরপুরের উইকেটে পরিবর্তন থাকবে এবং কিছুটা বাউন্সও থাকার সম্ভাবনা আছে। সেটা বরং দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের জন্য সহায়কই হবে। সেক্ষেত্রে তাদের একাদশে পরিবর্তন কী আসবে? এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘যে কম্বিনেশন আমাদের জন্য কার্যকর হবে সেটাই খুঁজে বের করতে হবে, এটাও আমাদের একটা লক্ষ্য। এখন পর্যন্ত যা আছে সেটাকে ভালই মনে হচ্ছে। এ বছর এখনও আমাদের অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে। আমরা সাড়ে তিনজন সিমার পেয়েছি এবং আমি মনে করি না আর কোন সিমারকে একাদশে যোগ করার প্রয়োজন আছে।’ উপমহাদেশে ভাল বোলিং করার রেকর্ড আছে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের। সে কারণে উইকেট নিয়ে তেমন চিন্তা করছেন না আমলা। তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশে আমাদের খুব ভাল রেকর্ড আছে, এমনকি যেসব উইকেটে তেমন বাউন্স হয় না সেখানেও আমরা ভাল করতে সক্ষম হয়েছি। যদি উইকেট আমাদের সিমারদের জন্য কিছু সুবিধা দেয় সেটা তো খুবই ভাল হবে। আর যদি তা না হয় সেক্ষেত্রে উপমহাদেশে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, বিশেষ করে যতটুকু দেখেছি এমন গরম আবহাওয়ায়। আমরা গত এক সপ্তাহ ক্রিকেটে ছিলাম না, বিশেষ করে চট্টগ্রামের শেষ দু’দিন থেকে। সুতরাং যে কেউ এটার জন্য (মিরপুর টেস্ট) মুখিয়ে আছে।’ তবে উইকেট বুঝে ওঠার জন্য নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনার কথাও জানালেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে জরুরী বিষয় হচ্ছে প্রথম সেশনে উইকেট কেমন আচরণ করছে সেটা বুঝে ওঠা। যেহতু আপনারা বলছেন এখানে কিছুটা বাউন্স থাকতে পারে। কিন্তু যদি যদি এসবের বিপরীত কিছু ঘটে সেক্ষেত্রে আমাদের বোলার আছে উইকেট বুঝে খেলার এবং সেটা কার্যকর করার। শুরুর পরেই আসলে আমরা বলতে পারব।’
×