ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেট্রোলজি দিবসে আলোচনা

পণ্য উৎপাদন ও সেবার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করা জরুরী

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২১ মে ২০১৫

পণ্য উৎপাদন ও সেবার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করা জরুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্ব মোট্রোলজি বা পরিমাপ দিবসের আলোচনাসভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সময় আলোক বিজ্ঞান অতি গুরুত্বপূর্ণ। আলো শক্তির অন্যতম উৎস, এর বিকল্প হিসেবে কোন কিছুকে চিন্তা করা যায় না। উন্নত স্বাস্থ্য সেবায় কিছু থেরাপিতেও আলো ব্যবহার করা হয়। যে কোন পণ্য উৎপাদন কিংবা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করা জরুরী। এর ব্যত্যয় হলে ভোক্তা সাধারণের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই পরিমাপের সকল ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্যারামিটার ব্যবহার করতে হবে। নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও পণ্যকে মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে বাজারজাতকরণের সনদ প্রদান করলে তা সমাজের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সব ধরনের পণ্যের গুণগতমান পরীক্ষণ ও নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিএসটিআই’র কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। বুধবার তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর প্রধান কার্যালয়ে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়ে আসা দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘পরিমাপ ও আলো’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, যে কোন পণ্য উৎপাদন কিংবা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করা জরুরী। এর ব্যত্যয় হলে তা ভোক্তা সাধারণের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পরিমাপের সকল ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্যারামিটার ব্যবহার করতে হবে। নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সারঞ্জাম ও পণ্যকে মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে বাজারজাতকরণের সনদ প্রদান করলে তা সকলের জন্যে ক্ষতির কারণ হবে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সব ধরনের পণ্যের গুণগতমান পরীক্ষণ ও নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিএসটিআই’র কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও পেশাদরিত্বের পরিচয় দিতে হবে। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশে বিদ্যুত উৎপাদন ১৯ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। পাশাপাশি শক্তি সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। সারা দেশে ১০ মিলিয়ন বিদ্যুত সাশ্রয়ী বাল্বÑসিএফএল বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে। দেশে দিন দিন জ্বালানির চাহিদা বাড়বে উল্লেখ করে আমু আরও বলেন, দেশে শিল্পায়ন কার্যক্রম যত জোরদার হবে, জ্বালানির চাহিদাও তত বাড়বে। বাড়তি চাহিদার যোগান দিতে আলো কিংবা বিদ্যুত শক্তির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে সকল স্থানে জ্বালানি দক্ষ স্মার্ট এনার্জি মিটার ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিএসটিআই’র প্রধান কার্যালয়ে স্থাপিত আন্তর্জাতিক মানের ন্যাশনাল মেট্রোলজি ল্যাবরেটরির উপযুক্ত ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সবুজ জ্বালানি নির্ভর পণ্য উৎপাদন ও প্রযুক্তির ব্যবহার জনপ্রিয় করতে বিএসটিআইকে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী নিতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, পরিমাপ ঠিক না করে কোন উন্নয়ন হতে পারে না, ভাল কিছু আবিষ্কার হতে পারে না। তাই পরিমাপের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন হতে হবে। পরিমাপের সঠিকতা আনয়ন করা অত্যন্ত জরুরী। বিগত কয়েক বছরে দেশে বিদ্যুতের বেশ উন্নয়ন হয়েছে। বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে সৌর বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। শেখ হাসিনার হাত ধরে পণ্যের গুণগত মান রক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই আধুনিক ও উন্নত হয়েছে। বিএসটিআই দেশের শিল্প পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে জাতীয় মেজারমেন্ট স্ট্যান্ডার্ডসমূহের রক্ষণাবেক্ষণকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। পরিমাপ এবং মান উভয় বিষয়ে বিএসটিআইকে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব ভালভাবে পালন করতে হবে। রফতানি রাড়াতে বিএসটিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সুশেন চন্দ্র দাস তার বক্তব্যে বলেন, সারা বিশ্বে যত উন্নয়ন হয়েছে তার সঙ্গে আলোর সম্পর্ক সরাসরি। ভবিষ্যতে আলোক বিজ্ঞানের প্রতি বিজ্ঞানীদের চাহিদা ও আকর্ষণ আরও বাড়বে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিমাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিমাপ হওয়া উচিত সার্বজনীন। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিএসটিআই’র ন্যাশনাল মেট্রোলজি ল্যাবরেটরিতে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, ওষুধ কোম্পানি, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, ল্যাবরেটরি এবং উচ্চতর শিক্ষাদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি বিএসটিআই-এর এনএমএল থেকে ক্যালিব্রেশন করা হচ্ছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আগত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএসটিআই’র পরিচালক (মেট্রোলজি) মোহাম্মাদ আলী। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ইকরামুুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনাসভায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত বিএসটিআই’র উর্ধতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ১৮৭৫ সালের ২০ মে ‘মিটার সমঝোতা স্মারক’ স্বাক্ষরের পর থেকে বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। নতুন নতুন পরিমাপ কৌশল ও পরিমাপ বিজ্ঞানের উৎর্কষ সাধনে মেট্রোলজি সেন্টারসমূহ কাজ করে যাচ্ছে। দেশেও বিএসটিআই একই লক্ষ্যে সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে বলে আলোচনাসভায় উল্লেখ করা হয়।
×