ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তিন সিটির সকল ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

তিন সিটির সকল ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ও তার আশপাশে প্রচুর সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয়সংখ্যক কন্ট্রোলরুম। ঢাকার পিলখানা বিজিবি সদর দফতরে স্থাপিত কন্ট্রোলরুম পরিদর্শন করেছেন নির্বাচন কমিশনের উর্ধতন কর্মকর্তারা। নিরাপত্তায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সর্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকছে সেনাবাহিনী। এছাড়া র‌্যাবের হেলিকপ্টার, সোয়াট, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, র‌্যাবের ডগস্কোয়াড, ক্রাইসিস রেসপন্স টিম ও বাড়তি পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি আর আনসার মোতায়েন রয়েছে। আজ সকাল আটটা থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্র্বাচনের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮০ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন, ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পর্যাপ্ত পরিমাণ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকি করতে বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয়সংখ্যক মনিটরিং সেল। নির্বাচন পূর্ববর্র্তী, নির্বাচন চলাকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী তিনটি ধাপে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিরাপত্তা জোরদার বা শিথিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারসহ ৮০ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকলেই সেনাবাহিনী চলে আসবে। নির্বাচনী মালামাল প্রস্তুত রয়েছে। চট্টগ্রামের মালামাল গত শুক্রবার পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গত শনিবার ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী মালামাল দেয়া হয়েছে। প্রতিটি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীসহ ১০ জন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এবং ১২ জন আনসার লাঠি নিয়ে আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১২ জন এবং ১২ জন লাঠি নিয়ে দায়িত্বে থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুইটি করে পুলিশের মোবাইল দল নিয়োজিত থাকবে। প্রতি ২ ওয়ার্ডে র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তিন সিটিতে প্রায় একশ’ প্লাটুন বিজিবি সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া রবিবার সকাল ছয়টা থেকে ঢাকার বাইরে ১০৮ প্লাটুন এবং মহাসড়কের নিরাপত্তায় ৮৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে বিজিবি সদর দফতর জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত বারোটা থেকে আজ দিবাগত রাত বারোটা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে নির্বাচনী এজেন্ট, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সেবামূলক কাজে নিয়োজিত জরুরী সেবাদানকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে। অন্য সব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। সাংবাদিক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা একত্রে ৫ জনের বেশি কোন ভোট কেন্দ্রে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে পারবেন না। যেখানে ভোটের সিল দেয়া হয়, সেই গোপন কক্ষে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। গত শনিবার সকাল ছয়টা থেকে ১ মে রাত বারোটা পর্যন্ত সব ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া রবিবার রাত বারোটা থেকে ৩০ এপ্রিল রাত বারোটা পর্যন্ত সব ধরনের জনসভা, অনুষ্ঠান, মিছিল, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের ৪শ’ গজের মধ্যে কোন প্রার্থীর ক্যাম্প স্থাপন বা প্রচার চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত শনিবার থেকেই তিন সিটি কর্পোরেশনের বহিরাগতদের শহর ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। গত শনিবার রাত বারোটা থেকেই নির্বাচনের দিন দিবাগত রাত বারোটা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলো একক, যৌথ ও গুচ্ছ হিসেবে ভাগ করা হয়েছে। ঢাকার ভোট কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি দেখভাল করতে সচিবালয়ের পাশে আব্দুল গণি রোডে স্থাপন করা হয়েছে প্রধান কন্ট্রোলরুম। আর গুলশান, তেজগাঁও এবং মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজে একটি করে সাব কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে দক্ষিণের আর শেরেবাংলানগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলেন কেন্দ্র থেকে উত্তরের ফলাফল ঘোষিত হবে। ব্যালট সামগ্রী নিরাপদে পৌঁছে দিতে থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা। চট্টগ্রামেও একইভাবে একাধিক কন্ট্রোলরুম স্থাপন করে নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া ভোট গণনা ও কেন্দ্রগুলোতে ফলাফল ঘোষণা শেষ হওয়ার পরও কঠোর নিরাপত্তা থাকছে। নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে। যদিও যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।
×